অর্ধশতাধিক ট্রলার নিয়ে চলছে তেল অপসারণ
বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ সুন্দরবনের শ্যালা নদীতে তেলের ট্যাংকার ডুবির ঘটনায় প্রায় অর্ধশতাধিক ট্রলার ও নৌকা নিয়ে প্রায় দুই শতাধিক বন ও পরিবেশ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ছড়িয়ে পড়া ফার্নেস তেল অপসারণের কাজ শুরু করেছে ।শনিবার ভোর থেকে তেল অপসারণের কাজ করে যাচ্ছে কর্মীরা ।
এদিকে ফার্নেস অয়েলের কারণে পরিবেশে মারাত্মক প্রতিক্রিয়া শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে মরতে শুরু করেছে ছোট ছোট মাছ, কাঁকড়া, গুইসাপসহ জলজ প্রাণী।চট্টগ্রাম থেকে তেল অপসারণের জন্য আসা কাণ্ডারি-১০ টাগবোটের কার্যক্রম স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে বন ও পরিবেশ বিভাগের সকল পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি।শ্যালা নদীর ট্যাংকার ডুবির আশেপাশে বনের মধ্যে গাছে, শ্বাসমূল ও ঠেসমূল, পাতা-কাণ্ডে তেল লেপ্টে কালো হয়ে আছে। তেলের আস্তরণ হালকা হয়ে গেলেও পানি ব্যবহার করতে পারছে না নদীর তীরের মানুষে।তেল ভেসে গিয়ে খাল-নালায় গাছে-লতাগুল্ম-শাসমূল-ঠৈসমূলে আটকে গেছে। ভাসমান শেওলা তেলের রঙে কালো হয়ে গেছে। ফলে শ্বসন বন্ধ হয়ে এসব উদ্ভিদ মারা যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। নদী সংযোগকারী খালগুলো বেয়ে তেল চলে গেছে বনের মধ্যে। শুক্রবার থেকে আর চোখে পড়ছে না শুশুক (ইরাবতী ও গাঙ্গেয় ডলফিন)। তাছাড়া ছোট ছোট মাছ মরে ভেসে উঠছে।খালপাড়ের পলিমাটির রঙ বদলে কালো চেহারা নিয়েছে। ভূমি থেকে তা পাঁচ থেকে ছয় ফুট পর্যন্ত কালো হয়ে গেছে গাছের গোড়ালি। ঘটনার পর থেকেই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেউ কেউ তেল সংগ্রহ করছিল। বনবিভাগের পক্ষ থেকেও এ ব্যাপারে উদ্বুব্ধ করা হয়। পরে সরকারিভাবে ঘোষণা আসায় পরিকল্পিতভাবে তেল সংগ্রহ করা হচ্ছে।গত ৯ ডিসেম্বর ভোরে বিপরীত দিক থেকে আসা খালি ট্যাংকারের ধাক্কায় ডুবে যায় ৩ লাখ ৫৭ হাজার ৬৬৪ লিটার ফার্নেস ওয়েল বহনকারী ওটি সাউদার্ন স্টার ৭ নামের তেলবাহী ট্যাংকার। এ তেল গোপালগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ব্যবহারের জন্যে নিয়ে আসা হচ্ছিল। ঘটনার পরে চালক (মাস্টার) মোখলেসুর রহমান নিখোঁজ হন। গত ১১ ডিসেম্বর বেলা ১১টার দিকে ডুবে যাওয়া ট্যাংকারটি সরিয়ে চাঁদপাই ফরেস্ট অফিসের জেটির কাছে রাখা হয়েছে।