শারীরিক সমস্যা নিরাময় হলুদের গুনাবলি
শারমিনা কবিরঃ হলুদ ছাড়া কোনো তরকারী রান্না সম্ভব নয়। প্রায় প্রতিটি বাঙালি খাবারে হলুদের ব্যবহার রয়েছেই। কিন্তু আপনি কি জানেন রান্না ঘরের সব চাইতে জনপ্রিয় এই অতি পরিচিত মসলায় রয়েছে প্রাকৃতিক ঔষধি ক্ষমতা? যা নানা শারীরিক সমস্যা নিরাময় করতে এই হলুদের জুড়ি নেই।
এই হলুদের কয়েকটি মানবজীনের ঔষধি ক্ষমতা নিম্নে দেওয়া্ হল
(১) হাড়ের ব্যথাজনিত সমস্যা সমাধানে : যারা হাড়ের ব্যথাজনিত সমস্যায় ভুগছেন তারা ব্যথা নিরাময়ে পান করতে পারেন হলুদের দুধ। আধা গ্লাস দুধে আধা ইঞ্চি পরিমাণে কাঁচা হলুদ দিয়ে চুলায় জ্বাল দিতে থাকুন। দুধের রঙ হলুদ হয়ে গেলে নামিয়ে নিন ও গরম গরম পান করে নিন। প্রতি রাতে একবার পান করলে হাড় হবে শক্তিশালী ও মজবুত। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে এই পানীয়টি অনেক বেশি উপকারী। এছাড়াও মেনোপজের পরে মহিলাদের হাড়ের ভঙ্গুরতা দূর করতেও এই পানীয় বেশ কার্যকর।
(২) কাটাছেঁড়া দ্রুত নিরাময়ে : ছোটোখাটো কাঁটাছেঁড়ায় হলুদ অ্যান্টিসেপ্টিকের মতো কাজ করে। কিছুটা হালকা গরম পানি দিয়ে হলুদের পেস্ট তৈরি করে ক্ষত স্থানে লাগিয়ে নিন, ভালো ফল পাবেন।
(৪) সর্দি-কাশির সমস্যা সমাধানে : সর্দি-কাশি নিরাময়ে খুব দ্রুত ভালো কাজ দেয় হলুদ। কাশি কমাতে চাইলে হলুদ চিপে নিয়ে রস বের করে খেয়ে নিন কয়েক চামচ। অথবা এক টুকরো হলুদের সাথে মধু মাখিয়ে তা মুখে রেখে চুষে খেতে পারেন। কিংবা এক গ্লাস গরম দুধের মধ্যে হলুদের গুঁড়ো, সামান্য মাখন এবং গোলমরিচ গুঁড়ো ভালো করে মিশিয়ে পান করুন। কয়েকদিন নিয়মিত পান করলে কাশি ও গলা ব্যথা দুইই দূর হবে।
(৩) রক্তস্বল্পতা দূর করতে : দেহে রক্তের ঘাটতি বা রক্ত শুন্যতা দেখা দিলে হলুদ বাটা খেয়ে দেখতে পারেন। কারণ হলুদ রক্ত তৈরিতে সাহায্য করে। প্রতিদিন সকালে এক চা চামচ কাঁচা হলুদের রস ও সামান্য পরিমাণ মধু মিশিয়ে খান দেখবেন খুব দ্রুত রক্তশূন্যতা দূর হবে।
(৫) ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে : রোদে পুড়ে বা অন্য কোনও কারণে ত্বকে রঙ কালো হয়ে কালচে ছোপ পড়লে হলুদ এই সমস্যার সমাধান করবে। বাটা বা গুঁড়ো হলুদের পেস্ট তৈরি করুন ও মুখে লাগান। ১৫/২০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। কিছুদিন ব্যবহারেই ভালো উপকার পাবেন। মুখে হলুদের দাগ দূর করা নিয়ে একেবারেই চিন্তিত হবেন না। তুলা দুধে ভিজিয়ে পরিষ্কার ত্বকের উপর উপর লাগিয়ে নিন, দেখবেন হলুদ দাগ উঠে যাবে।
(৬) কৃমি সমস্যা সমাধানে : কৃমির সমস্যায় অনেকেই ভুগে থাকেন। বিশেষ করে এই শীতে কৃমির উপদ্রব বেশি বেড়ে যায়। এই সমস্যা সমাধান করবে হলুদ। প্রতিদিন সকালে কাঁচা হলুদ ছেঁচে নিয়ে রস বের করে নিন। এই রস ২০ ফোঁটা নিয়ে তার মধ্যে ১ চিমটি লবণ মিশিয়ে পান করুন। কৃমির সমস্যা থেকে মুক্তি মিলবে।