দুর্নীতি মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যাচ্ছেন খালেদা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট ও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে আজ সাক্ষ্য গ্রহণ করা হতে পারে। বিভিন্ন কারণ দেখিয়ে বেশ কয়েকবার নির্ধারিত দিনে আদালতে হাজির না হলেও আজ আদালতে আসছেন খালেদা জিয়া।মঙ্গলবার রাজধানীর বকশীবাজার এলাকায় (আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে স্থাপিত) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩-এ দুটি মামলায় বেগম জিয়াসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য গ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
খালেদার জিয়ার আইনজীবী মো. হোসেন আলী খান হাসান বলেন, ‘আমি যত দূর জানি বেগম খালেদা জিয়া আজ আদালতে হাজিরা দেবেন। তবে দুদকের আইনজীবীরা আমাদের আইনগত অধিকার পেতে যদি বাধা সৃষ্টি করে তাহলে তো আদালতে হৈ চৈ হবেই।’ গত ১৮ ডিসেম্বর মামলা দুটির বিচারক (ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩) বাসুদেব রায়কে পটুয়াখালীর বিশেষ জজ হিসেবে বদলি করে তার জায়গায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব আবু আহমেদ জমাদারকে।এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর বিচারক বাসুদেব রায় পরবর্তী দিন ধার্য করে এ আদেশ দেন।
ওই দিন উভয় পক্ষের শুনানি শেষে খালেদার জিয়ার সময় চেয়ে করা আবেদনটি খারিজ করে দেন আদলত। একই সঙ্গে নিরাপত্তাহীনতার কারণ দেখিয়ে খালেদার অনুপস্থিতির আবেদন মঞ্জুর করেন আদালত এবং আগামী ধার্যকৃত দিনে তাকে অবশ্যই হাজির করার আদেশ দেন বিচারক।
মামলার বাদী দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশিদ ওই দিন বেলা আড়াইটার দিকে আইনজীবীদের ব্যাপক হট্টগোলের মধ্যে তার অবশিষ্ট সাক্ষ্য দেওয়া শুরু করেন।
গত ৮ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতিতে আইনজীবীদের ব্যাপক হৈ চৈ ও হাতাহাতির মধ্যে দুই মামলার বাদী দুদক উপ-পরিচালক হারুন-অর-রশীদের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু করেন আদালত। গত ১ ডিসেম্বর একই মামলায় আংশিক সাক্ষ্য গ্রহণ করেন আদালত। মামলা সূত্রে জানা যায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে ২০০৮ সালের ৩ জুলাই রমনা থানায় মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলায় ২ কোটি ১০ লাখ ৭১ হাজার ৬৪৩ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়।
২০০৯ সালের ৫ আগস্ট খালেদা জিয়া ও তার ছেলে তারেক রহমানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।মামলার অন্য আসামিরা হলেন- মাগুরার প্রাক্তন সাংসদ কাজী সালিমুল হক কামাল, ব্যবসায়ী শরফুদ্দিন আহমেদ, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রাক্তন সচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী এবং প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ভাগনে মমিনুর রহমান। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে ৩ কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগ এনে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১১ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় মামলা করে দুদক।
এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন- খালেদা জিয়ার প্রাক্তন রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, হারিছের সহকারী একান্ত সচিব ও বিআইডব্লিউটিএয়ের নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্না এবং ঢাকার প্রাক্তন মেয়র সাদেক হোসেন খোকার একান্ত সচিব মনিরুল ইসলাম খান।
মামলায় হারিছ চৌধুরী শুরু থেকেই পলাতক। ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। গত ১৯ মার্চ খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে মামলা দুটিতে অভিযোগ গঠন করা হয়। উচ্চ আদালতে অভিযোগ গঠনের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিট আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে করা আপিল আবেদন খারিজের পর খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা এই আদালতে ন্যায়বিচার পাবেন না মর্মে উচ্চ আদালতে বর্তমান আদালত পরিবর্তনের জন্য পুনরায় আবেদন করেছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে দুটি দুর্নীতি মামলার বিচারক পরিবর্তনের প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন প্রধান বিচারপতি মো. মোজাম্মেল হোসেন।