বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জানা-অজানা » যৌন সম্পর্ক বিরল কোনো ঘটনা নয়

যৌন সম্পর্ক বিরল কোনো ঘটনা নয় 

 ডেস্ক রিপোর্টঃ     সম্প্রতি ভারতের মুম্বাই আদালত এক যুগান্তরকারী রায় দিয়েছেন। আদালতের রায়ে বলা হয়, ভারতের মতো দেশের বড় শহরগুলোতে বিয়ের আগে যৌন সম্পর্ক বিরল কোনো ঘটনা নয়। এছাড়া বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলা এবং পরবর্তীতে বিয়ে না করা, এমন সকল ঘটনাকেই ধর্ষণ বলা যাবে না।
চলতি বছরের শুরুতে ভারতীয় নাগরিক সীমা দেশমুখ তার প্রেমিক রাহুল পাটিলের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সীমা তার গর্ভে রাহুলের সন্তান ধারণ করছেন। রাহুল বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সীমার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এছাড়া রাহুলের আরও বিবাহিত প্রেমিকা রয়েছে বলেও জানায় সীমা।

jono
রাহুল বলেন, দুজনের সম্মতিতেই শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে। যেহেতু আমার দুজন ভিন্ন ধর্মের অনুসারী সুতরাং আমরা বিয়ে করতে পারবো না।
রাহুল এবং সীমা দুজনের আইনজীবি জানিয়েছেন, ১৯৯৯ সাল থেকে এরা পরস্পরকে জানেন এবং ২০০৬ সালে এদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে।
সীমা বলেন, রাহুল আমাকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেয়। ২০০৯ সালে যখন রাহুল বলে, সে বিয়ে করতে পারবে না, তখন আমি আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছিলাম। এরপরেও আমাদের শারীরিক সম্পর্ক অব্যাহত ছিলো।
বিচারপতি মৃদুলা ভাটকর বলেন, বর্তমানে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্ক, আগের মতো অবাক করার মতো কোনো ঘটনা নয়। যেকোনো যুগলের মধ্যে শারীরিক সম্পর্কের স্বাদ নেয়ার ইচ্ছা হতে পারে। বর্তমানে মুম্বাই এবং পুনের মতো আধুনিক শহরে বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলো ক্রমেই বাড়ছে।
তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলোর মতো নয়, বরং বিয়ের আগে শারীরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে আমাদের কিছু প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। সামাজিক দায়বদ্ধতার কারণে এ বিষয়টিকে আমরা সহজভাবে মেনে নিতে পারি না। কিন্তু বর্তমানে নারী-পুরুষের চিন্তার পরিবর্তন এবং সামাজিকতা পরিবর্তনের বিষয়টি আদালত এড়িয়ে যেতে পারে না।’
আদালতের রায়ে আরও বলা হয়, একজন প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিক্ষিত নারী যদি শারীরিক চাহিদা পূরণের জন্যে কোনো পুরুষের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক গড়ে তোলে, তবে এটি তার নিজস্ব এবং স্বাধীন সিদ্ধান্ত। কিন্তু এটি অবশ্যই সচেতনভাবে অথবা জ্ঞাতসারে হতে হবে।
আদালতের রায়ে আরও বলা হয়, শারীরিক সম্পর্ক, সন্তান ধারণের সিদ্ধান্ত সম্পূর্ণভাবে একজন নারীর স্বাধীন এবং নিজস্ব সিদ্ধান্ত।
আদালতের রায়ে উল্লেখ করা হয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে এবং ভালোবাসার টানে কোনো যুগল শারীরিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। কিন্তু পরবর্তীতে তারা একে অপরের উপরে যেকোনো কারণে আস্থা ধরে রাখতে ব্যর্থ হলে বা সম্পর্ক ভেঙ্গে গেলে এই ধরনের শারীরিক সম্পর্ককে ধর্ষণ বলা যাবে না। এক্ষেত্রে বিয়ের জন্যে চাপও দেয়া যাবে না।
সীমা এবং রাহুল সম্পর্কে আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, এরা দুজনই শিক্ষিত। ২০১১ সালে রাহুল পুলিশের কাছে সীমার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। অভিযোগে বলা হয়েছিলো, সীমা বিয়ের জন্যে রাহুলকে বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে। এমনকি বিয়ে না করলে তিনি আত্মহত্যারও হুমকী দেন। কিন্তু এ ঘটনার পরেও তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয়েছে।
পরবর্তীতে ২০১৩ সালে রাহুলের বিরুদ্ধে প্রতারণা এবং ধষর্ণের মামলা দায়ের করে সীমা। আদালতের পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, সীমা শিক্ষিত নারী এবং তিনি স্বেচ্ছায় শারীরিক সম্পর্ক গড়েছেন। সুতরাং এটিকে ধর্ষণ বলা যাবে না। তবে যদি সীমা তার সন্তানের ভরণপোষনের দাবি করেন, সেক্ষেত্রে আদালতের দ্বারস্থ হতে পারেন।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone