যে বাঁক বদলে দিলে ধোনির জীবন
কথা হল, রেলওয়ে কোয়ার্টারে ধোনি কেন? আজ থেকে প্রায় এক যুগ আগের কথা। ধোনি চাকরি করতেন ভারতীয় রেলে। ২০০১ থেকে ২০০৩—প্রায় দু’বছর চাকরি করেছেন ‘ট্রেন টিকিট ইন্সপেক্টর (টিটিই)’ হিসেবে। ধোনির পোস্টিং তখন ভারতের দক্ষিণ-পূর্ব রেলের অধীনে খড়গপুর রেলওয়ে স্টেশনে৷ এর এক বছর পরই জীবনে এল বড় একটা বাঁক। যে বাঁক এক ঝটকায় বদলে দিলে ধোনির পুরো জীবনকেই২০০৪-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ান ডে অভিষেক। আর এই ম্যাচেই বিরাট বড় একটা গোল্লা৷ প্রথম আলোচনায় এলেন পরের বছর বিশাখাপত্তনমে পাকিস্তানের বিপক্ষে একটি ওয়ান ডে ম্যাচে ১২৩ বলে ১৪৮ রানের ইনিংসের পর। ধোনি নিজের আগমনী জানান দিলেন উচ্চধ্বনিতেই! তারপর? অ-নে-ক কিছু! ২০০৭-এ ভারতকে জেতালেন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। টেস্ট র্যাং কে ভারতের প্রথমবারের মতো একনম্বরে ওঠা তাঁর নেতৃত্বেই (নভেম্বর ২০০৯ থেকে আগস্ট ২০১১)। তাঁর নেতৃত্বেই ২৮ বছর পর বিশ্বকাপ জিতেছে ভারত। টি-টোয়েন্টি ও ৫০ ওভার—দুটি বিশ্বকাপ জয়ের গৌরব একমাত্র ধোনিই গায়ে মেখেছেন। ভারতকে সবচেয়ে বেশি ২৭টি টেস্টও জিতিয়েছেন তিনি।
অথচ একটা সময় ব্যাডমিন্টন ও ফুটবলেই মগ্ন ছিলেন ভারতের এই অধিনায়ক! খেলোয়াড়ি জীবনের শুরুর দিকে জেলা পর্যায়েও বিভিন্ন ক্লাবের হয়ে এই খেলাগুলোই খেলেছেন নিয়মিত। ফুটবল দলে তাঁর ভূমিকা ছিল গোলকিপার হিসেবে। ক্রিকেটে আসার ঘটনাটাও চমকপ্রদ। তাঁর ফুটবল কোচই পাঠিয়েছিলেন স্থানীয় একটি ক্রিকেট দলের ‘খ্যাপ’ খেলতে। ক্রিকেটের প্রতি গভীর টান সৃষ্টি হয় রাঁচির কমান্ডো ক্রিকেট ক্লাবের হয়ে (১৯৯৫-৯৮) খেলার সময়। দারুণ পারফরম্যান্সের পর ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে সুযোগ পেলেন ভিনু মানকড় ট্রফির অনূর্ধ্ব-১৬ চ্যাম্পিয়নশিপ খেলার। এরপর জাতীয় দলে সুযোগ পেতে লেগে গেল আরও সাত বছর।
সমসাময়িক অন্য সতীর্থদের তুলনায় একটু দেরিতেই আন্তর্জাতিক অভিষেক হয়েছিল বলেই কি না, ন’দশ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারটা সাজালেন একের পর এক কৃতিত্ব দিয়ে৷ অধিকাংশ সময় কাটালেন দলের নেতৃত্ব দিয়দলের প্রতি তাঁর নিবেদন প্রসঙ্গে একবার বলেছিলেন, ‘আমার স্ত্রীকে বলেছি, আমার জীবনে তোমার জায়গা তিনে। প্রথমে দেশ, দ্বিতীয় বাবা-মা, এরপর তুমি।’