খালেদার কার্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নিজের রাজনৈতিক কার্যালয়ে ‘অবরুদ্ধ’ বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ‘বাধা’ উপেক্ষা করে বের হওয়ার ঘোষণাকে কেন্দ্র করে জনমনে একধরনের কৌতূহলের সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে নয়াপল্টনে পূর্বনির্ধারিত জনসভার জন্য এখনো তিনি যেমন প্রত্যয়ী, তাতে কী ঘটতে যাচ্ছে, তা নিয়েই রোমাঞ্চিত সবাই। এতে বাড়ছে সংশয়, বাড়ছে হৃদকম্পন
খালেদা জিয়ার প্রেস সচিব মারুফ কামাল খান সোহেল সোমবার বেলা সাড়ে ১১টায় জানিয়েছেন, দুপুরের পর বিএনপির চেয়ারপারসন বের হবেন। তবে এই মুহূর্তে নির্দিষ্ট করে সময় বলা যাচ্ছে না। তাকে বের হতে (খালেদা জিয়া) বাধা দেওয়া হলে সেখানেই অবস্থান নিয়ে জনসভা করা হবে বলে জানান সোহেল। যদিও এর আগে দলীয় সূত্র জানিয়েছিল, খালেদা জিয়া দুপুর ১২টার দিকে বের হবেন।
তবে খালেদা জিয়া দুপুর ১২টার দিকে কার্যালয় থেকে বের হবেন এমন খবরে তার কার্যালয়ের প্রধান ফটকে উল্টোপাশ থেকে তালা মেরে দিয়েছে পুলিশ। কিছুক্ষণের মধ্যে বিএনপির প্রধান বের হবেন- এরপর কী হবে? পুলিশ বাধা দিলে কী করবেন বিএনপি প্রধান? এতগুলো বালু, ইট, পাথরের ট্রাক ডিঙিয়ে কীভাবে বের হওয়া সম্ভব? আবারও কি ২৯ ডিসেম্বরের মতো গেটে দাঁড়িয়েই সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলবেন? নাকি এর চেয়েও চমকপ্রদ কিছু ঘটতে যাচ্ছে?-এসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজছে সবাই। গণমাধ্যমকর্মীরা তো বটেই, দেশের সাধারণ জনগণের চোখও এখন গুলশানের এই কার্যালয় ঘিরে। খালেদা জিয়াকে বের হতে দেওয়া হবে না এমনটি জেনেও কোনো কোনো আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য সেই মাহেন্দ্রক্ষণে কি ঘটতে যাচ্ছে তা দেখতে বেশ রোমাঞ্চিত।
সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলেও কর্মসূচি পালনে অনড় অবস্থানের কথা জানিয়ে দিয়েছেন অবরুদ্ধ বিএনপি প্রধান। কিন্তু তার বের হওয়া ঠেকাতে কঠোর অবস্থানে রয়েছে গুলশানে কার্যালয়ের সামনে উপস্থিত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার যাত্রাপথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিতে রাখা হয়েছে ১৩টি ট্রাক।
রোববার বিবিসি বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমাদের কর্মসূচি অন আছে। এই অবৈধ সরকার একদম দেশবাসী থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। দেশকে আজকে তারা অবরুদ্ধ করে ফেলেছে। আমি শুধু অবরুদ্ধ নই; দেশ অবরুদ্ধ। সরকার জনপ্রিয় হলে এমনটা করতো না।’
দশম সংসদ নির্বাচনের বছরপূর্তির দিন ৫ জানুয়ারিকে বিএনপি ‘গণতন্ত্র হত্যা’ দিবস হিসেবে পালনের ঘোষণা দিয়ে সারা দেশে সমাবেশ ও কালো পতাকা মিছিলের কর্মসূচি দেয়। অপরদিকে, ৫ জানুয়ারিতে ‘গণতন্ত্রের বিজয়’ দিবস পালনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ঢাকায় পাল্টা সমাবেশের ঘোষণা দিলে রাজনৈতিক উত্তাপের মধ্যে পুলিশ সব ধরনের সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
এদিকে বিএনপির একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি চেয়ারপারসনের ‘অবরুদ্ধ’ অবস্থা স্বাভাবিক করে সোমবার সমাবেশ করতে না দিলে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টা হরতাল দেওয়া হতে পারে। এরপর থেকে লাগাতার আন্দোলনের যাবে দলটি। পর্যায়ক্রমে অবরোধ, সচিবালয়, নির্বাচন কমিশনসহ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ঘেরাওয়ের মতো কঠোর কর্মসূচি আসবে। তবে এক্ষত্রে বিশ্ব ইজতেমার কয়েকটি দিন কর্মসূচিতে বিরতি টানা হবে।
যদিও দলটির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এরইমধ্যে নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ‘আন্দোলন সফল না হওয়া পর্যন্ত রাজপথ ছাড়া যাবে না। আন্দোলনকে গতিশীল করে ঢাকার এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্তের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করে দিতে বলেন তিনি।