যৌনমিলনের সুযোগ পাবে বন্দিরা
ইন্টারন্যাশনাল ডেস্কঃ ভারতের পাঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্ট বন্দিদের জন্যে স্বামী অথবা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলনের অনুমতি দিয়ে ঐতিহাসিক এক রায় ঘোষণা করেছেন। মঙ্গলবার দেয়া ওই রায়ে বলা হয়েছে, কারাগারে বন্দিরা স্বামী অথবা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলনের সুযোগ পাবেন এবং তারা চাইলে সন্তানও নিতে পারবেন। এই সুযোগকে বন্দিদের জন্যে মৌলিক অধিকার হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে রায়ে জানানো হয়।
পাটিয়ালার জেলে বন্দি দম্পতি জাসভির সিং এবং সোনিয়ার করা এক পিটিশনের রায়ে বিচারপতি সুরায় কান্ত যুগান্তকারী এ রায় ঘোষণা করেন। জাসভির সিং এবং সোনিয়ার বিরুদ্ধে এক ধনীর পুত্রকে অপহরণ এবং হত্যার অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের মৃত্যুদ-ের রায় দেয়া হয়
এই দম্পতি আদালতের কাছে এক আবেদনে মৃত্যুদ-ের রায় কার্যকর হওয়ার আগ পর্যন্ত তারা একসঙ্গে থাকার আগ্রহ ব্যক্ত করার পাশাপাশি সন্তান জন্ম দেয়ার জন্যে যৌনমিলনের সুযোগ করে দেয়ার চান। পরে এই মামলার ওপর দীর্ঘ শুনানি শেষে এই রায় দেয়া হয় এবং জেল কর্তৃপক্ষকে এজন্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আবেদন জানান ওই বন্দি দম্পতি।
জাসভিরের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, আমি বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে সন্তান এবং বিয়ের মাত্র আটমাসের মধ্যে আমাকে এই অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত জৈবিক চাহিদা পূরণের জন্যে আমি এই পিটিশনের আবেদন করিনি।
বন্দিদের যৌনমিলনের সুযোগ করে দিলে সমাজে অপরাধ প্রবণতা আরও বাড়বে বলে আদালত জাসভির আপিল প্রত্যাখ্যান করলেও পরবর্তীতে এটিকে বিস্তৃত সামাজিক দিক থেকে বিবেচনা করা হয়েছে।
বিচারপতি স্বামী অথবা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলনের অধিকারকে বন্দিদের মৌলিক অধিকার সংক্রান্ত ২১ নম্বর অনুচ্ছেদে সংযোজনের আদেশ দেন।
আদালতের রায়ে আরও বলা হয়েছে, ‘বর্তমানে আমাদের সমাজ ব্যবস্থা শিক্ষায় এবং আধুনিকতায় অনেক দূর এগিয়েছে। এখন ‘সমকামিতা’, ‘তৃতীয়-লিঙ্গ’ এসব বিষয় নিয়ে আমরা সরাসরি কথা বলি। সেখানে বন্দিদের তাদের স্বামী অথবা স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলনের বিষয়ে বৈধতা দিতে লজ্জার কী আছে?’
আদালতের রায়ে আরও বলা হয়েছে, ‘সমাজ অনেক এগিয়েছে, বরং আমাদের এই রায় আরও আগে দেয়া উচিত ছিল।’
আদালত বন্দিদের জন্যে এই অধিকার সংযোজনে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত এক আইনজীবির নেতৃত্ব কমিটি গঠনের আদেশও দিয়েছে কারাগার কর্তৃপক্ষকে। ওই কমিটি কোন ধরনের বন্দিরা যৌনমিলনের সুযোগ পাবে এবং কিভাবে এই সুযোগ করে দেয়া হবে ইত্যাদি বিষয় নির্ধারণ করবে। ওই কমিটিতে সমাজ বিজ্ঞানী এবং বন্দি ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞদেরও অর্ন্তভুক্তের আদেশ দেয়া হয়েছে। একবছরের মধ্যে কারাগার ঘুরে ওই কমিটি তাদের পূর্ণাঙ্গ প্রস্তাব পেশ করবে।