কমলার খোসার উপকারিতা
লাইফস্টাইল ডেস্কঃ কমলালেবু রসালো একটি ফল তা নিশ্চয় সবার জানা। আর ছোটোবড় সবাই ফলটি খেতে পছন্দ করেন। তবে প্রায় সবাই ফলটির রসালো কোষ খাওয়ার পর খোসা ফেলে দেন। অনেকেই হয়তো জানেন না খোসার উপকারিতার কথা। এমনকি খোসাসুদ্ধ কমলা খাওয়াই নাকি বেশি পুষ্টিকর! আপেলের মতো কমলার খোসাও নানা দিক দিয়ে বেশ উপকারি।
কমলালেবুর খোসায় রয়েছে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল, অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি ও অ্যান্টি-ফাঙ্গাল উপাদান যা বিভিন্ন ধরনের পেটের সমস্যা, কাশি বা অ্যাজমার সমস্যা ও লিভারসহ নানা সমস্যা থেকে মানুষকে সুরক্ষিত রাখতে পারে। নিচে কমলার খোসার তেমনই কয়েকটি উপকারি ব্যবহারের কথা তুলে ধরা হলো :
কফ ও পিত্তের সমস্যায়: কমলার খোসার রসের অন্যতম বৈশিষ্ট্যই হলো এটি কফের সমস্যা ও পিত্তের যে কোনো ধরনের সমস্যা দূর করে। এজন্য প্রথমে কমলার খোসা বেশ পাতলা করে ছাড়িয়ে নিতে হবে। এরপর ভেজিটেবল পিলারের সাহায্যে কিংবা গ্রেটারে ঘষে নিন। পরে খোসার কুচিগুলো রঙ চা তৈরির সময়েই ঢেলে দিন। সাথে অল্প পরিমাণে আদা দিলে আরও ভাল হয়। এবার পানি একটু ফুটিয়ে আদা ও কমলার গন্ধ ছড়ালেই চায়ের মতো পান করুন। সাথে দিতে পারেন মধুও। তাহলে কফ ও পিত্ত সমস্যার অবশ্যই সমাধান হবে।
পেটের সমস্যায় : কমলালেবুর খোসা পেটের সমস্যার সমাধান করে। এমনকি গ্যাস, অ্যাসিটিডি ও বমি বমি ভাব দূর করতেও কমলার খোসার জুড়ি নেই। প্রতিদিন সকালে খোসার মিহি কুচি এক চা চামচ পরিমাণ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে খেতে পারেন। এতে এ ধরনের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে। এমনকি সকালের নাস্তায় সালাদের সঙ্গে এটি খেতে পারেন।
ওজন হ্রাসে : উচ্চমাত্রায় কোলেস্টেরলের সমস্যা ও ওজন কমানোর জন্য কমলার খোসা অনেক বেশি কার্যকরী। কারণ এতে ট্রাইগ্লিসারাইড দ্রবীভূত থাকে যা সমস্যাগুলো দূর করতে সাহায্য করে।
অনিদ্রায় : কমলার খোসা মিশ্রিত পানি গোসলের সময় ব্যবহার করলে এটি অনিদ্রা দূর করে। এমনকি কুসুম গরম পানিতে এর খোসা ফেলেও গোসল করা যায়। তবে চাইলে পানির সঙ্গে খোসার তেল মিশিয়ে নিতে পারেন।ক্যান্সার ও হাড়ের রোগ প্রতিরোধে কমলার খোসায় ফ্লেভোনয়েড রয়েছে যা ‘হেস্পিরিডিন’ নামে পরিচিত। এটি কোলন ক্যান্সার এবং অস্টিওপরোসিস বিরুদ্ধে কাজ করে আমাদের রক্ষা করে।
অ্যাজমা ও কাশির সমস্যায় : কমলার খোসার গুঁড়ো কাশির সমস্যা দূর করে। এমনকি শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যা ও অ্যাজমা উপশমে এটি কাজে লাগে। এসব কষ্ট থেকে মুক্তি পেতে কমলার খোসায় তৈরি চা নিয়মিত পান করুন। আবার কমলার খোসা দিয়ে মোরব্বা বা টফিও তৈরি করে রাখা যায়। সেক্ষেত্রে প্রতিদিন সকালে এই টফি চা পানের সময় ভালো করে চিবিয়ে খেতে পারেন। এতে রোগমুক্তি ঘটবে।
অ্যাসিডিটির সমস্যায় : কমলার খোসার তেলে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি-মাইক্রোবিয়াল ও অ্যান্টি-ইনফ্লেমেটরি রয়েছে যা পেটের অ্যাসিডিটি দূরীকরণে সহায়তা করে। এছাড়াও এতে ডি-লিমোনেন নামের একটি উপাদান আছে যা অন্ত্র ও লিভার ফাংশনকে স্বাভাবিক রাখে। আর এর তেল পানিতে দু’ফোঁটা মিশিয়ে পান করলে অ্যাসিডির সমস্যা একেবারেই চলে যাবে।
তাই কমলার খোসা ফেলে না দিয়ে তা সংরক্ষণ করার চেষ্টা করুন। পরবর্তীতে যথাযথভাবে এগুলো ব্যবহার করে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক সমস্যা থেকে মুক্তির পাওয়ার কাজে ব্যবহার করতে পারেন।