২০১৫ সালে যোগ হবে একটি “লিপ সেকেন্ড”
প্রযুক্তি ডেস্কঃ জুন মাসে ঘড়ির সময়ে এক সেকেন্ড বেশি যোগ করবেন বিজ্ঞানীরা। এই পরিবর্তনটি একেবারেই ক্ষুদ্র এবং নগণ্য মনে হলেও সারা পৃথিবীর কম্পিউটার এবং ওয়েবসাইটগুলোর জন্য এটি বিশাল মাথাব্যাথার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
২০১২ সালের জুনে এমন একটি “লিপ সেকেন্ড” যোগ করা হয়েছিলো ঘড়িতে। সে সময়ে রেডিট, লিঙ্কডইন এবং ইয়েল্প এর মতো সাইটগুলো সাময়িক বিপর্যয়ের মুখে পড়ে। রেডিট অচল ছিলো দেড় ঘন্টার মতো। এটা তেমন বেশি মনে না হলেও এর কারণে অ্যামেদিও অলটিয়া নামের এক এয়ারলাইন রিজার্ভেশন সিস্টেমের ওপরে এর প্রভাব পড়ে এবং কোয়ান্টাস এবং ভার্জিন অস্ট্রেলিয়ার ফ্লাইট প্ল্যানে বিচ্যুতি দেখা যায়। এ সমস্যাটা কেন হয়? কারণ অনেক কম্পিউটিং সিস্টেম পরপর দুইটি “একই সেকেন্ড” বুঝতে পারে না
তবে গুগল এই সমস্যারও সমাধান বের করে ফেলেছে যাকে বলা হচ্ছে “লিপ স্মিয়ার”। একেবারে একটি সেকেন্ড যোগ করে ফেলার বদলে তারা একটু একটু করে মিলিসেকেন্ড যোগ করে ফেলবে সময়ের সাথে। এ কারণে পুরো একদিন লেগে যাবে সময়ে এই পরিবর্তন আসতে। এর ফলে সহজে সময় পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নিতে পারবে ওয়েবসাইটটি।
প্রশ্ন আসতে পারে, মাত্র একটি সেকেন্ড যোগ করার জন্য এতো হাঙ্গামা করা হচ্ছে কেন? এই একটি সেকেন্ডের কি মূল্য? ঘটনা হলো, গত মঙ্গলবার ইন্টারন্যাশনাল আর্থ রোটেশন অ্যান্ড রেফারেন্স সিস্টেমস সার্ভিস এই লিপ সেকেন্ডের ঘোষণা দেয়। পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি কমে যাবার ব্যাপারটির সাথে আমাদের সময়ের ভারসাম্য রাখার উদ্দেশ্যেই এই সেকেন্ড যোগ করা।
পৃথিবীর ঘূর্ণন গতি কমে যাবার পেছনে অনেক কারণ থাকতে পারে। ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিনের প্রাক্তন প্রফেসর স্টিভেন ডাচ এর মতে, বড় ধরণের ভূমিকম্প ঘূর্ণন গতি বাড়িয়ে দিতে পারে, যার ফলে দিন ছোট হয়ে আসে। আবার পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে (যেমন ভূগর্ভস্থ পাহাড়) প্রাকৃতিক পরিবর্তন আসার কারণে ঘূর্ণন গতি কমে আসতে পারে। ১৯৭২ সালের পর ২৫ বার এভাবে এক সেকেন্ড করে সময় যোগ করা হয়েছে। এভাবে অল্প অল্প করে সেকেন্ড যোগ করার ফলে আসলে আমাদের স্বাভাবিক সময়ের নিয়ম ঠিক থাকে।