নিষিদ্ধ হতে যাচ্ছে বিএনপি!
ডেস্ক রিপোট : বিএনপি কয়েকটি রাজনৈতিক শর্ত মানলে তাদের সঙ্গে সংলাপে যেতে পারে আওয়ামী লীগ। শর্তগুলো হলো বিএনপিকে আগে সহিংস রাজনীতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অবরোধ প্রত্যাহারের পাশাপাশি যুদ্ধাপরাধী, জঙ্গিগোষ্ঠী ও আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এছাড়া আন্দোলনের নামে জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতামূলক রাজনীতি না করার অঙ্গীকার করতে হবে। তাহলে সংবিধানের মধ্যে থেকে আলোচনায় বসবে আওয়ামী লীগ।
এদিকে বিএনপির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাম্প্রতিক বৈঠক নিয়ে মোটেও চিন্তিত নয় আওয়ামী লীগ। দলটি মনে করছে, কূটনীতিকরা সামাজিক কারণে বিভিন্ন ব্যক্তির বাসায় যেতেই পারেন। অপরদিকে বিএনপি যদি নাশকতামূলক কর্মকা- অব্যাহত রাখে তাহলে তাদের অবৈধ ঘোষণার উদ্যোগ নেবে আওয়ামী লীগ। ইতিমধ্যে বিএনপিকে অবৈধ ঘোষণা করার জন্যও আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়েছেন। এর পক্ষের যুক্তি হিসেবে তারা তুলে ধরেছেন যে, সামরিক শাসকদের সব কার্যক্রম আদালত অবৈধ ঘোষণা করায় জিয়াউর রহমানের দল বিএনপিও অবৈধ। তাছাড়া বিএনপি এখন সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদী কর্মকান্ড চালাচ্ছে। এসব কারণে বিএনপিকে অবৈধ ঘোষণা করার সময় এসেছে।
আওয়ামী লীগের উপদেষ্টাম-লীর সদস্য এবং আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি বলেন, খালেদা জিয়া যতই কূটনীতিকদের নিয়ে বসেন কোন লাভ হবে না। বিশ্বের কোনো দেশই সন্ত্রাস ও নাশকতাকারীদের সঙ্গে নেই।
গতকাল শুক্রবার বিকালে ধানমন্ডিস্থ আওয়ামী লীগ সভানেত্রীর রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলের পক্ষে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপি একটি সন্ত্রাস ও জঙ্গি দল হিসেবে চিহ্নিত। এই সহিংস রাজনীতি থেকে বিএনপিকে আগে বেরিয়ে আসতে হবে। অবরোধ প্রত্যাহার করে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদী কর্মকান্ড পরিহার করতে হবে। তারপর সংলাপের ব্যাপারটি ভেবে দেখবে আওয়ামী লীগ। বিএনপি চেয়ারপারসন যদি বাসায় ফিরে যান, সব কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেন এবং কূটনীতিকরা যদি সংলাপের উদ্যোগ নিতে চাপ দেন তাহলে আওয়ামী লীগ কী করবে-একজন সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে হানিফ বলেন, আগে বিএনপি অবরোধ প্রত্যাহার করুক। জ্বালাও-পোড়াও, নাশকতা বন্ধ করুক। তারপর এটা নিয়ে ভেবে দেখা যাবে।
মাহবুব-উল-আলম হানিফ বলেন, জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন ও আন্দোলনে ব্যর্থ হয়ে বিএনপি কূটনীতিকদের সহানুভূতি পাওয়ার জন্য চক্রান্ত করছে। তবে তাদের এ ষড়যন্ত্র সফল হবে না। বিএনপির শীর্ষনেতাদের সঙ্গে বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকদের সাম্প্রতিক বৈঠক নিয়ে আওয়ামী লীগ মোটেও চিন্তিত নয়।
হানিফ বলেন, খালেদা জিয়া এখন নিজের দলের নেতাকর্মীদের হত্যা করতে কুণ্ঠাবোধ করছেন না। রিয়াজ রহমানের ওপর হামলা তারই অংশ। তাকে বলির পাঠা বানানো হয়েছে। আমরা রিয়াজ রহমানের ওপর হামলাসহ সকল হত্যাকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। তিনি বলেন, এর সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের নির্দেশও দেয়া হয়েছে।
বিএনপির সঙ্গে কূটনীতিকদের বৈঠকের বিষয়ে তিনি বলেন, কূটনীতিকরা তো সামাজিক অনুষ্ঠানে যেতেই পারেন। এ সব নিয়ে আওয়ামী লীগ ভাবছে না। আর সেখানে কূটনৈতিকরা হয়তো তাদের নৈশভোজে গিয়েছিলেন। নৈশভোজে তারা যেতেই পারেন। প্রসঙ্গত, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মঈন খানের বাসভবনে বৃহস্পতিবার রাতে আটটি দেশের কূটনীতিকরা বৈঠক করেন।
বিজিবি প্রধানের সাম্প্রতিক বক্তব্যকে স্বাগত ও সাধুবাদ জানিয়ে মাহবুব-উল আলম হানিফ বলেন, বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য একটি বিবৃতি দিয়েছেন। তার ওই বিবৃতিটি মজার ও হাস্যকর। সেখানে বলা হয়েছে, ‘সরকার গাড়ি পোড়াচ্ছে।’ সরকারই যদি গাড়ি পোড়াবে তাহলে বিএনপির এত মাথা ব্যথা কেন। তিনি বলেন, গত এক বছর ধরে সরকার সাফল্যের সঙ্গে দেশ পরিচালনা করে আসছে। এসময় দেশের স্থিতিশীলতা ফিরে এসেছে। দেশের যখন উন্নয়ন হচ্ছে, তখনই বিএনপি দেশের অগ্রগতি স্থবির করে দিতে তাদের পাকিস্তানি প্রভুদের নির্দেশে অস্থিতিশীলতা ও সহিংসতা শুরু করেছে।
বিএনপি তাদের ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনার জন্য সহিংস রাজনীতি ত্যাগ করবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে হানিফ বলেন, রাজনীতি যদি করতে হয়, রাজনীতির ধারায় ফিরে আসতে হবে। এই সহিংস রাজনীতি বন্ধ করুন। অবরোধের নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করতে হবে। তিনি বলেন, প্রত্যেক দলের গণতান্ত্রিক অধিকার আছে। সেই গণতান্ত্রিক সুফল তারা ভোগ করবে।
এ ব্যাপারে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। আমরা সবসময় সব দলের গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল এবং সে ব্যাপারে আমরা সবসময় সহযোগিতা করব। তবে পেট্রোল বোমা দিয়ে মানুষ মেরে রাজনৈতিক দোহাই দিয়ে এবার পার পাওয়া যাবে না। প্রত্যেকটা হত্যাকান্ডের বিচার হবে। কাউকে ছাড় দেয়া হবে না।
সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী এমপি, ত্রাণ ও দুর্যোগ বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী প্রমুখ। ই.ফা