‘রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করুন’
নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজনৈতিক নাশকতার নামে মানুষ হত্যা বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছেন মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির। শনিবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ‘সহিংসতা প্রতিরোধে জনতা’ সংগঠনের আয়োজনে ‘দেশব্যাপী চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা, আগুনে পুড়িয়ে মানুষ হত্যা, ত্রাস ও নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান’ শীর্ষক সন্ত্রাস প্রতিরোধে জনতার প্রতিবাদী সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন মানবাধিকারকর্মী জাহানারা নূরী, মানবাধিকারকর্মী মেঘনা গুহ ঠাকুরতা, ব্যারিস্টার জ্যতিময়া বড়ুয়া ও লেখক আনোয়ারা পারভেজ এবং মাহফুজা হক। মানবাধিকারকর্মী খুশি কবির বলেন, ‘রাজনৈতিক দলের বিভিন্ন কর্মসূচি থাকবে। কিন্তু সেই কর্মসূচির নামে মানুষ পুড়িয়ে মারা, নাশকতা সৃষ্টি করে জনজীবন বিপর্যস্ত করে দেওয়া বন্ধ করুন। কর্মসূচি হতে পারে শান্তিপূর্ণ।’
সংগঠনটির পক্ষে উপস্থিত বক্তারা বলেন, ‘নাশকতা ও অরাজকতার বলী দেশের সাধারণ জনগণ, খেটে খাওয়া কৃষক, শ্রমিক, দিনমজুর, যাদের জীবন-জীবিকার জন্য প্রতিদিন বাড়ির বাইরে বের হতে হয়। গত ৩ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত সহস্রাধিক মানুষ পেট্রোল বোমার শিকার হয়েছে। তার মধ্যে ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে, ৮১ জন বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। এদের মধ্যে কয়েকজন এখনো মৃত্যুর সঙ্গে লড়ছেন। বিএনপি-জামায়াত শিবিরসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের রাজনীতির নামে করা সন্ত্রাস-সন্ত্রাস খেলায় জনজীবন পরিণত হয়েছে মৃত্যু পুরীতে। আর মৃত্যুর কান্না ছড়িয়ে পড়েছে সারা দেশে। এই অপরাজনীতির কবল থেকে মুক্তি পায়নি আমাদের শিশু-কিশোরেরাও। এসএসসি পরীক্ষার্থী সকল ছাত্র-ছাত্রী এবং তাদের অভিভাকরা কী বিভীষিকাময় সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তা দেশবাসী জানেন।’
সংবাদ সম্মেলনে ‘সহিংসতা প্রতিরোধে জনতা’ দলটির পক্ষ থেকে সরকার প্রধান, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং তার প্রশাসনের কাছে কয়েকটি দাবি জানান। দাবিগুলি হচ্ছে, অনতিবিলম্বে হত্যা ও ধংসের অপরাজনীতি বন্ধ করে জনজীবনে নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে এবং ক্ষতিগ্রস্থ সকল ব্যক্তি ও পরিবারের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। রাজনীতির নামে সহিংসতা, সন্ত্রাস, খুনসহ দেশকে অস্থিতিশীল করার কাজে যে বা যারা যুক্ত, দল, মত নির্বিশেষে তাদের অবিলম্বে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশে আইনের শাসন পুনর্বহালের লক্ষ্যে জবাবদিহিতার সংস্কৃতি সৃষ্টি করতে হবে এবং খুন, লুণ্ঠন, সম্পদের ধংসের রাজনীতিসহ সকল বিচারবহির্ভূত হত্যার আইনি বিচার নিশ্চিত করতে হবে। দেশে আইনের শাসনে জনগণের আস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে বিচার বিভাগের পূর্ণ স্বাধীনতা বজায় রাখতে হবে। রাজনৈতিক সন্ত্রাস মোকাবিলার ঘোলাজলে যুদ্ধাপরাধীর বিচার হারিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না; যুদ্ধাপরাধীর বিচার তরান্বিত করা এবং বিচারের রায় দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।’