দর্শনার্থীশূন্য ফ্যান্টাসি ও নন্দন পার্ক
জাফর ইকবাল, সাভার : রাজধানী থেকে বেরিয়ে আশুলিয়া। মাত্র এক ঘণ্টার পথ। যেখানে পৌঁছানো মাত্রই অফুরন্ত বিনোদন। কিন্তু স্বল্প দূরত্বের এ পথ পাড়ি দিয়ে ফ্যান্টাসি কিংডম কিংবা নন্দন পার্কের দিকে ছুটছে না বিনোদন প্রেমীরা। দেশব্যপী চলমান রাজনৈতিক সহিংসতা বৃদ্ধি পাওয়ায় দর্শনার্থী শুন্য হয়ে পড়েছে দেশের এই আধুনিক বিনোদন কেন্দ্র দুটি। এমনকি ছুটির দিনেও তেমন দর্শক সমাগম হচ্ছে না পার্ক দুটিতে। রাজনৈতিক সহিংসতার ফলে দর্শনার্থীরা মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় ছোট বড় প্রায় সব ধরনের উৎসব আয়োজন থেকেও বিরত রয়েছে পার্ক দুটি। শীত মৌসুম শেষ হতে চললেও এখন পর্যন্ত সেখানে অনুষ্ঠিত হয়নি কোনো কনসার্ট। দিন দিন বেড়েই চলেছে পার্ক দুটির আর্থিক লোকসান। সরেজমিন শুক্রবার দুপুরে ফ্যান্টাসি কিংডমে গিয়ে দর্শক শুন্যতা দেখা গেছে। উৎসব আয়োজন না থাকলেও সাধারণত শুক্রবার ছুটির দিনে পার্কটিতে দর্শকদের সমাগম বাড়ে। কিন্তু দুপুর পর্যন্ত মাত্র কয়েকজন দর্শনার্থী প্রবেশ করেছে পার্কে। দর্শকদের এমন বিমুখতায় সেখানে গত একমাসে দেখা দেয়নি দীর্ঘ লাইন। টিকেট কাউন্টার থেকে শুরু করে রোলার কোস্টার কিংবা বাম্পার কারেও ওঠেননি দর্শকরা। অলস সময় পার করছে পার্কের অধিকাংশ জনপ্রিয় রাইডের অপারেটররাও।
ফ্যান্টাসি কিংডমের সিনিয়র ডিজিএম মেজর (অব.) মঞ্জুর আহমেদ এ প্রতিবেদককে জানান, শীতকালে সাধারণ দর্শনার্থীদের পাশাপাশি বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক বনভোজন থাকায় প্রতিদিন মুখরিত থাকে ফ্যান্টাসি কিংডম কমপ্লেক্স। কিন্তু রাজনৈতিক সহিংসতার ফলে এ বছর দর্শনার্থী কমেছে কয়েকগুণ। শুক্রবারেও দর্শনার্থীরা পার্কে আসছেন না। প্রতিদিন মূল পার্কের পাশাপাশি দর্শক শুন্য থাকছে হেরিটেজ ওয়ার্ল্ড ও ওয়াটার কিংডম। ফ্যান্টাসি কিংডম রিসোর্টেও আসছেন না অতিথিরা। সব মিলিয়ে গত একমাসে পার্কের রক্ষণাবেক্ষণ খরচও উপার্জিত হয়নি। একই অবস্থা বিরাজ করছে আশুলিয়ার বাড়ইপাড়ায় অবস্থিত নন্দন পার্কেও। দশনার্থী না থাকায় প্রতিদিন খালি থাকছে পুরো পার্কটি। বনভোজনের এ মৌসুমে স্কুল কলেজের শিক্ষার্থীদের পদচারনায় বিনোদন কেন্দ্রটি মুখরিত থাকার কথা থাকলেও তা হচ্ছে না। গত একমাসে সেখানে বনভোজন করেছে মাত্র তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। লোকসানের আশঙ্কায় শীতকালীন কনসার্ট থেকেও নিজেদের বিরত রেখেছে নন্দন কর্তৃপক্ষ।
নন্দন পার্কের চিফ অপারেশন অফিসার স্কোয়াড্রন লিডার নাজমুল হুদা এ প্রতিবেদককে বলেন, দর্শনার্থী না থাকায় প্রতিদিন লোকসান গুণতে হচ্ছে আমাদের। পার্কের ২৫০ জন কর্মচারীর বেতন দিতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ বিল ছাড়াও অতিরিক্ত জ্বালানী বাবদ প্রতিদিন খরচ হচ্ছে প্রায় পনের হাজার টাকা। কিন্তু অতিরিক্ত সুবিধা প্রদান করেও দর্শক সমাগম বাড়ানো যাচ্ছে না। শীতকালীন কনসার্ট এখনও হয়নি। এমন অবস্থা চলতে থাকলে কোনো বিনোদন কেন্দ্র বেশী দিন টিকতে পারবে না বলে দাবি করেন তিনি।