বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Monday, December 23, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » উদ্বোধনের অপেক্ষায় ওসমানী বিমানবন্দরের রিফুয়েলিং স্টেশন

উদ্বোধনের অপেক্ষায় ওসমানী বিমানবন্দরের রিফুয়েলিং স্টেশন 

নিজস্ব প্রতিবেদক, সিলেট : সিলেট এমএজি ওসমানী বিমানবন্দর নামের আগে ‘আন্তর্জাতিক’ শব্দটি যুক্ত হয়েছিল প্রায় বছর পনের আগে, ১৯৯৮ সালের ২০ ডিসেম্বর। কিন্তু এতো দীর্ঘ সময়েও ওসমানী বিমানবন্দরে সরাসরি আন্তর্জাতিক বিমান ফ্লাইট চালু হয়নি। রিফুয়েলিং স্টেশন না থাকায় এই অবস্থার সৃষ্টি হয়।আন্তর্জাতিক তকমা পাওয়ার পরেও ওসমানী বিমানবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন না থাকায় সরাসরি ফ্লাইট চালু করা সম্ভব হয়নি। তবে সম্প্রতি প্রায় ৫৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ওসমানী বিমানবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। আগামীকাল ২৯ মার্চ রোববার স্টেশনটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করতে পারেন বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা। উদ্বোধনকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে জ্বালানি সরবরাহের কাজ করা হয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়- এমএজি ওসমানী বিমাবন্দর ‘আন্তর্জাতিক’ তকমা পাওয়ার পর সিলেট-দুবাই এবং সিলেট-লন্ডন রুটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু হয়।

Biman100-1427504191

কিন্তু ওসমানীতে রিফুয়েলিং স্টেশন না থাকায় কিছুদিন পরই বন্ধ হয়ে যায় সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট। এতে করে বিপাকে পড়তে হয় বৃহত্তর সিলেটের লাখ লাখ প্রবাসীদের।বৃহত্তর সিলেটের চারটি জেলার কয়েক লাখ লোক বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছেন। শুধুমাত্র মধ্যপ্রাচ্যেই আছেন প্রায় ২০ লাখ লোক। এ ছাড়া যুক্তরাজ্যেও আছেন পাঁচ লাখের মতো প্রবাসী। অন্যান্য দেশ মিলিয়ে প্রায় ৪০ লাখ সিলেটি প্রবাসী। ওসমানী বিমাবন্দর থেকে সরাসরি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বন্ধ থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েন এই বিশাল সংখ্যক প্রবাসী। এ ছাড়া বাধাগ্রস্ত হয় এ অঞ্চলের রপ্তানি বাণিজ্যও।এ অবস্থায় ওসমানী বিমাবন্দর থেকে সরাসরি ফ্লাইট চালুর দাবিতে সিলেট জুড়ে দানা বাঁধে আন্দোলন। এমন প্রেক্ষিতে ২০১০ সালে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত উদ্যোগ নেন ওসমানী বিমাবন্দরে রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের। এই রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের দায়িত্ব পায় পদ্মা অয়েল কোম্পানি। প্রায় ৫১ কোটি ১৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বিমানের ‘কনস্ট্রাকশন অ্যাভিয়েশন রিফুয়েলিং ফ্যাসিলিটিজ’ (স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে উড়োজাহাজে জ্বালানি সরবরাহ ব্যবস্থা) নামে ২০১২ সালে শুরু হয় রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণের কাজ।ওসমানী বিমাবন্দরের অভ্যন্তরে এবং দক্ষিণ সুরমাস্থ পুরাতন রেলস্টেশন এলাকার পদ্মা অয়েল ডিপোতে চলে প্রকল্পের নির্মাণ কাজ। পদ্মা অয়েল ডিপোতে তৈরি করা হয়েছে রিফুয়েলিং স্টেশনের রিজার্ভ স্টেশন। সেখানে রয়েছে দুই তলা বিশিষ্ট অফিস ভবন, তিনটি স্টোরেজ ট্যাংঙ্ক, পাইপ লাইন, বিদ্যুৎ কেন্দ্র, রেস্ট হাউজ, গ্যারেজ, অফিসার্স রুম ও স্টাফ রুম, দুটি ডিসপেনসার ও ফিল্টারিং ব্যবস্থা। এ ছাড়া মূল স্টেশনটি বিমাবন্দরের অভ্যন্তরে নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানে রয়েছে তিনটি স্টোরেজ ট্যাঙ্ক, হাইড্রেন্ট লাইন, ডিপো রিফুয়েলার ডিসপেনসার ও ফিল্টার এবং জেট ফুয়েল পরিবহনের জন্য ব্রিজার অর্থাৎ বড় ট্যাঙ্ক লরি।এই রিফুয়েলিং স্টেশন নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ ছিল ২০১৩ সালের জুন মাস পর্যন্ত। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে শেষ হয়নি এই প্রকল্পের কাজ। ফলে নির্ধারিত বরাদ্দের চেয়ে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৫৩ কোটি ১৫ লাখ ৫০ হাজারে। অর্থাৎ নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ায় এই ব্যয় বাড়ার পরিমাণ প্রায় দুই কোটি টাকা। চলতি মার্চ মাসেই শেষ হয় এ প্রকল্পের কাজ।প্রকল্পটির দায়িত্বপ্রাপ্ত পদ্মা অয়েল কোম্পানির ব্যবস্থাপক (সিলেট) সরদার মোহাম্মদ আলম জানান, রিফুয়েলিং স্টেশনের নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়েছে। আগামী রোববার প্রধানমন্ত্রী এটি উদ্বোধন করতে পারেন। তবে তিনি সরাসরি না আসতে পারলে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এ প্রকল্পটির উদ্বোধন করবেন বলে ধারণা করছি।সরদার আলম আরো জানান, আপাতত ট্যাংক লরির মাধ্যমে জ্বালানি সরবরাহ করা হবে। তবে কিছুদিনের মধ্যেই পাইপ লাইন দিয়ে জ্বালানি সরবরাহ শুরু  হবে।ওসমানী বিমানবন্দরের মহাব্যবস্থাপক মো. হাফিজ উদ্দিন আহমদ জানান, রোববার স্টেশনের উদ্বোধনের পর ওইদিন ‘ফ্লাই দুবাই’ এবং পরদিন ‘এয়ার আরাবিয়া’ যাত্রী নিয়ে সিলেট থেকে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা করবে।এদিকে ২৯ মার্চ উদ্বোধনকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার পরীক্ষামূলকভাবে নভোএয়ার ও ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের দুটি এয়ারক্রাফটে জ্বালানি সরবরাহ করা হয়েছে। এয়ারক্রাফট দুটিতে যথাক্রমে ৭৭৪ ও ৮০০ লিটার জ্বালানি সরবরাহ করা হয়।

 

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone