পরমাণু চুক্তি মানার প্রতিশ্রুতি দিলেন রুহানি
আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ইরানের ‘বিতর্কিত’ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার সমঝোতায় পৌঁছেছে তেহরান ও ছয় বিশ্বশক্তি। প্রাথমিক ওই চুক্তি মেনে চলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। শুক্রবার জাতির উদ্দেশে দেওয়া টেলিভিশন ভাষণে রুহানি বলেন, ‘বিশ্বকে অবশ্যই জানা উচতি যে আমাদের প্রতারণার কোনো মতলব নেই।’একইসঙ্গে তিনি এও বলে হঁশিয়ারি দেন, যদি কোনো দিন বিশ্বশক্তি ভিন্ন কোনো পন্থা অবলম্বন করে, তাহলে ইরানেরও বিকল্প পদ্ধতি নেওয়ার সুযোগ থাকবে।সুইজারল্যান্ডের লুজান শহরে আট দিন ধরে আলোচনার পর দুই পক্ষের প্রতিনিধিরা সমঝোতায় পৌঁছান।পরে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে রূপরেখা চুক্তির বিষয়ে মতৈক্যের ঘোষণা দেওয়া হয়। এতে ছয় বিশ্বশক্তির পক্ষে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ফেদেরিকা মগেরিনি ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ উপস্থিত ছিলেন।
তাদের ঘোষণায় জানানো হয়, পরমাণু প্রকল্পের বিষয়ে ইরান ছাড় দেবে আর পশ্চিমারা তুলে নেবে অবরোধ।ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও ব্রিটেন, চীন, জার্মানি, রাশিয়া ও ফ্রান্সের ওই আলোচনার সমন্বয় করে ইইউ।যুক্তরাষ্ট্র এ চুক্তিকে ঐতিহাসিক বললেও মিত্র ইসরায়েল এটাকে তাদের অস্তিত্বের জন্য চরম হুমকি বলে অভিহিত করে। তবে হোয়াইট হাউস পরে এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের ইরানের সঙ্গে এমন কোনো চুক্তি করবে না যাতে ইসরায়েলের অস্তিত্ব বিপন্ন হয়।ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানিও তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এটা কোনো দেশের জন্য এটা হুমকি নয় বলেও আশ্বস্ত করেন তিনি।ভাষণে রুহানি বলেন, ‘যদি অপর পক্ষ তাদের প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে তাহলে ইরানও চুক্তির বিষয়বস্তু মেনে চলবে। তবে যদি কোনো দিন তারা ভিন্ন পথে পা বাড়ায় তাহলে আমাদের রাষ্ট্রও যেকোনো মুক্ত সিদ্ধান্ত সব সময়ই নিতে পারবে।তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘নিজের মাটিতে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার ইরানের যে অধিকার রয়েছে বিশ্ব তা গ্রহণ করেছে। এটা কোনো দেশের জন্য হুমকি নয়।’ এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে হোয়াইট হাউস থেকে পাঠানো এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট ওবামা এটাকে ‘ভালো চুক্তি’ বলে অভিহিত করেন। এর মাধ্যমে তেহরানের পরমাণু অস্ত্র তৈরির উচ্চাকাঙ্ক্ষা রোধ করা যাবে বলেও আশা প্রকাশ করেন তিনি।ইরানের পরামাণু প্রকল্প নিয়ে উদ্বেগ কমাতে সৌদি আরবসহ আরব দেশগুলো ও ইসরায়েলের সঙ্গে তার নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করবে বলে জানান ওবামা।এই সমাঝোতাকে একটি ভালো চুক্তির ‘শক্ত ভিত্তি’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি।
তথ্যসূত্র : বিবিসি।