পাকিস্তানকে বাংলাওয়াশ করেই ছাড়লো
ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, নিউজিল্যান্ডের পর এবার পাকিস্তানও বাংলাদেশের কাছে ‘হোয়াইটওয়াশ’!
প্রথম দুই ম্যাচ জিতে সিরিজ মুঠোয় পুরে ফেলেও আত্মপ্রসাদে ভোগেনি মাশরাফির দল। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচ জিতে দেশের মানুষকে আবারও আনন্দের সাগরে ভাসাতে চেয়েছিলেন ক্রিকেটাররা। লক্ষ্যে সম্পূর্ণ সফল তাঁরা। বোলারদের নৈপুণ্যে পাকিস্তানকে ২৫০ রানে বেঁধে ফেলার পর সৌম্য সরকারের প্রথম ওয়ানডে শতক আট উইকেটের সহজ জয় এনে দিয়েছে বাংলাদেশকে। বাংলাদেশ ৩-পাকিস্তান ০—সিরিজ শুরু হওয়ার আগে এমন ফলাফল কি কারো কল্পনাতেও ঠাঁই পেয়েছিল!
মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে ২৫১ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকারের শুরুটা ছিল দুর্দান্ত। উদ্বোধনী জুটিতে দুজনে ১৪৫ রান এনে দেন দলকে। বাংলাদেশের প্রথম ব্যাটসম্যান হিসেবে ওয়ানডেতে টানা তৃতীয় শতকের সম্ভাবনা জাগিয়েও কীর্তিটা গড়তে পারেননি তামিম, জুনায়েদ খানের বলে এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফিরেছেন ৬৪ রান করে।
তবে তামিমের মতো আক্ষেপে পুড়তে হয়নি সৌম্যকে। ওয়ানডে ক্যারিয়ারের প্রথম শতক পূর্ণ করেছেন ছক্কা মেরে। ১১০ বলে ১২৭ রানে অপরাজিত সৌম্যর চমৎকার ইনিংস সাজানো ছিল ১৩টি চার ও ছয়টি ছক্কায়।
বিশ্বকাপে বাংলাদেশের সেরা ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ অবশ্য আবারও ব্যর্থ হয়েছেন। জুনায়েদের বলে বোল্ড হওয়ার আগে মাত্র চার রান করেন তিনি। তবে তৃতীয় উইকেটে ৯৭ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে গেছেন সৌম্য ও মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশের ব্যাটিং নির্ভরতার প্রতীকে পরিণত মুশফিক ৪৩ বলে ছয়টি চারে ৪৯ রান করে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে অধিনায়ক আজহার আলীর প্রথম ওয়ানডে শতক আর হারিস সোহেলের অর্ধশতক বড় সংগ্রহের স্বপ্ন দেখাচ্ছিল পাকিস্তানকে। তবে বোলারদের নৈপুণ্যে ঘুরে দাঁড়িয়ে লক্ষ্যটা বড় হতে দেয়নি বাংলাদেশ। ৪৯ ওভারে ২৫০ রানে অলআউট হয়ে গেছে অতিথিরা।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে উদ্বোধনী জুটিতে দলকে ৯১ রান উপহার দেন আজহার আলী ও অভিষিক্ত সামি আসলাম। দশম ওভারে আরাফাত সানির বলে সামির ক্যাচের জোরালো আবেদন করেছিল বাংলাদেশ। লেগ স্লিপে দারুণ ক্যাচ নিয়েছিলেন তামিম। কিন্তু রিভিউ নেওয়ার পরও সাফল্য পায়নি বাংলাদেশ।
১৮তম ওভারে অবশ্য হতাশ হতে হয়নি মাশরাফির দলকে। নাসির হোসেনের করা সেই ওভারের শেষ বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান সামি। ৪৫ রান এসেছে এই বাঁহাতি ওপেনারের ব্যাট থেকে।
২২তম ওভারে বাংলাদেশকে দ্বিতীয় সাফল্য এনে দেন আরাফাত সানি, মোহাম্মদ হাফিজকে বোল্ড করে। আগের দুই ম্যাচে চার ও শূন্য রানে আউট হওয়া এই অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার আবারও ব্যর্থ। বল করার অধিকার ফিরে পাওয়া হাফিজ এবার করেছেন চার রান।
তৃতীয় উইকেটে ৯৮ রানের জুটি গড়ে পাকিস্তানকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যাচ্ছিলেন আজহার ও হারিস। কিন্তু ৩৯ ও ৪০তম ওভারে দুজনকে ফিরিয়ে দেন সাকিব ও মাশরাফি। ক্যারিয়ারের প্রথম ওয়ানডে শতক করার পর আজহার বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি।
সাকিবের বলে আউট হয়েছেন ১০১ রান করে। পরের ওভারে ৫২ রান করা হারিস সোহেলকেও ফিরিয়ে দেন মাশরাফি। এরপর তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে পাকিস্তানের ইনিংস। ৪৭ রানে শেষ আট উইকেট হারানো অতিথিরা কোনো রকমে আড়াইশ রান করেছে।
দুটি করে উইকেট নিয়েছেন সাকিব, মাশরাফি, আরাফাত সানি ও রুবেল হোসেন।
ম্যাচসেরা : সৌম্য সরকার।