বার্সার গোল-উৎসব
গেটাফের বিপক্ষে আগের শেষ দুই ম্যাচে জয়বঞ্চিত হতে হয়েছিল বার্সেলোনাকে। জয়ের ক্ষুধাটা তাই একটু বেশিই ছিল কাতালানদের, ছিল আক্ষেপও। তবে আক্ষেপ মেটাতে বার্সেলোনার খেলোয়াড়রা যে গোল-উৎসবে মাতবেন, তা কে জানতো! মেসি-নেইমার-সুয়ারেজদের গোল-উৎসবের রাতে ৬-০ গোলে উড়ে গেছে গেটাফে।
বড় জয়ের এই ম্যাচে জোড়া গোল করেছেন লিওনেল মেসি ও লুইস সুয়ারেজ। এ ছাড়া নেইমার ও জাভি করেছেন একটি করে গোল। এই জয়ে লা লিগার শিরোপার লড়াইয়ে আরেক ধাপ এগিয়ে গেল বার্সা। সেই সঙ্গে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী রিয়াল মাদ্রিদের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধানটা আবার পাঁচ বাড়িয়ে নিল লুইস এনরিকের দল। এই মুহূর্তে ৩৪ ম্যাচে ৮৪ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে বার্সা। এক ম্যাচ কম খেলে ৭৯ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রিয়াল।
মঙ্গলবার ন্যু ক্যাম্পে ম্যাচের শুরু থেকেই আক্রমণের পর আক্রমণে গেটাফের রক্ষণভাগ কাঁপিয়ে তোলেন বার্সার খেলোয়াড়রা। চতুর্থ মিনিটে ডি বক্সের ভেতর থেকে শট নেন দানি আলভেজ। বার্সা ডিফেন্ডারের শট ডানদিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন গেটাফের গোলরক্ষক গুয়াইতা। দুই মিনিট পর আরেকটি ভালো সুযোগ পান আলভেজ। বক্সের ভেতর ব্রাজিলের এই ডিফেন্ডারকে পাস দেন মেসি। কিন্তু ঠিকমতো শট নিতে পারেননি আলভেজ। এর তিন মিনিট পরেই অবশ্য পেনাল্টি থেকে এগিয়ে যায় বার্সা। বক্সের ভেতর সুয়ারেজকে ফাউল করে বসেন গেটাফের ডিফেন্ডার আরোয়ো। সঙ্গে সঙ্গে পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেন রেফারি। পেনাল্টি থেকে স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন দলের সেরা তারকা মেসি। বাঁ পায়ের শটে অতিথি গোলরক্ষককে ফাঁকি দেন চারবারের বর্ষসেরা এই খেলোয়াড়।
১৪ মিনিটে লিড দিগুণ হতে পারতো বার্সার। সুয়ারেজের কর্নার কিক থেকে দারুণ এক হেড নিয়েছিলেন রাফিনহা। কিন্তু তার হেড গোলবারের সামান্য ওপর দিয়ে চলে যায়। পরের মিনিটে গোল হজম করতে বসেছিল বার্সা। তবে গোলরক্ষক ক্লাদিও ব্রাভো দুর্দান্তভাবে গোল সেভ করেন। ব্রাভো পোস্ট ছেড়ে কিছুটা ওপরে উঠে আসলে তার মাথার ওপর দিয়ে বল পাঠিয়ে দেন গেটাফের ফ্রেদি। বল প্রায় জালে জড়িয়ে যাচ্ছিল। আর এই সময়েই উড়ে গিয়ে এক হাতে বল গোললাইন বরাবর থেকে ফিরিয়ে দেন ব্রাভো।
এরপর ২৫ থেকে ৩০, এই পাঁচ মিনিটে গোল-উৎসবে মেতে ওঠেন বার্সার খেলোয়াড়রা। প্রথমে দলের ব্যবধান দিগুণ করেন সুয়ারেজ। এই গোলের যোগানদাতা ফুটবলের ক্ষুদে জাদুকর মেসি। আর্জেন্টাইন তারকা বক্সের ভেতর ক্রস দেন সুয়ারেজকে। বল পেয়ে নিজের শরীরকে শূন্যে ভাসিয়ে দারুণ এক ভলিতে বল জালে জড়িয়ে দেন উরুগুইয়ান তারকা। মেসি-সুয়ারেজ তো গোল করলেন, নেইমার কী বসে থাকবেন? বসে থাকেননি ব্রাজিলিয়ান সুপারস্টারও। তিন মিনিট পরেই দারুণ এক গোলে ব্যবধান ৩-০ করে ফেলেন নেইমার। সুয়ারেজের পাস থেকে বল পেয়ে বক্সে ঢুকে গেটাফের এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে লক্ষ্যভেদ করেন ব্রাজিল অধিনায়ক। এক মিনিট যেতেই স্কোরলাইন ৪-০ করেন জাভি। বক্সের সামনে থেকে জোরালো শটে গোলটি করেন এই স্প্যানিশ মিডফিল্ডার।
৩৯ মিনিটে তো ৫-০ গোলে এগিয়ে যায় বার্সা। নেইমারের সঙ্গে এক-দুই খেলে জাভিকে পাস দেন মেসি। বুদ্ধিদীপ্ত ফ্লিকে বলটি আবার সুয়ারেজকে দেন জাভি। নিজের জোড়া গোল পূর্ণ করতে কোনো ভুল করেননি সুয়ারেজ। ৪৩ মিনিটে স্কোরলাইন ৬-০ করার সুযোগ এসেছিল বার্সার সামনে। বক্সের ভেতর পাস দেন মেসি। কিন্তু পোস্টের বাইরে দিয়ে বল মারেন জাভি। ফলে ৫-০ গোলে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বার্সা।
বিরতি থেকে ফিরেই স্কোরলাইন ৬-০ করে ফেলেন মেসি। সুয়ারেজের পাস থেকে বল পেয়ে বুদ্ধিদীপ্ত শটে অতিথি গোলরক্ষকের মাথার ওপর দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন আর্জেন্টাইন তারকা। লা লিগায় এ মৌসুমে এটা মেসির ৩৮তম গোল। আর এক গোল করলেই রিয়াল মাদ্রিদ তারকা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোকে ধরে ফেলবেন বার্সা তারকা। ৬৪ মিনিটে হ্যাটট্রিক করার সুযোগ পেয়েছিলেন সুয়ারেজ। কিন্তু নেইমারের পাস থেকে বল পেয়ে পোস্টের ওপর দিয়ে মারেন তিনি। ৭৩ মিনিটে একটি গোল শোধ হতে পারতো গেটাফের। কিন্তু তাদের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় গোলপোস্ট। ফ্রেদির শট পোস্টে লেগে ফিরে আসে। ৮৪ মিনিটে হ্যাটট্রিক হতে পারতো মেসির। তবে আর্জেন্টাইন তারকার একটি ফ্রি-কিক ঝাঁপিয়ে পড়ে ঠেকিয়ে দেন অতিথি গোলরক্ষক। ফলে শেষ পর্যন্ত