২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণা
নিজস্ব প্রতিবেদক : পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে তুলে ধরতে ২০১৬ সালকে পর্যটন বর্ষ ঘোষণার পাশাপাশি তিন বছর মেয়াদি কর্মসূচি পালনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
সোমবার সচিবালয়ে পর্যটন বর্ষ পালন উপলক্ষে গঠিত জাতীয় স্টিয়ারিং কমিটির প্রথম বৈঠক হয়। কমিটির চেয়ারম্যান অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতের সভাপতিত্বে এ বৈঠকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেননসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পর্যটন বোর্ড, বাংলাদেশ বিমান ও ট্যুর অপারেটরস অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিগণ উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, তিন ধরনের ট্যুরিজম হতে পারে- অভ্যন্তরীণ, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক। এবার আমরা অভ্যন্তরীণ ট্যুরিজমকেই বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছি। পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে অভ্যন্তরীণ ট্যুরিজমকে আরো গুরুত্ব দিতে হবে। সেই সঙ্গে পর্যটন স্পটগুলোকেও উন্নত করতে হবে।
তিনি বলেন, ‘বৈঠকে তিন বছরব্যাপী পর্যটন বর্ষ পালনে পর্যটন মন্ত্রণালয় ও পর্যটন বোর্ডের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পরিকল্পনা উপস্থাপন করা হয়েছে। আর এ জন্য ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ চেয়েছেন তারা। এ বিষয়ে বৈঠকে কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। এর বাইরে ২০১৬ পর্যটন বর্ষের প্রাক-প্রস্তুতিমূলক বিভিন্ন কর্মকা-ের জন্য ১৫ কোটি টাকা চেয়েছেন তারা।’
মুহিত বলেন, ‘আমাদের দেশে পর্যটন সংক্রান্ত তেমন প্রকাশনা বা বইপত্র নেই। অন্যান্য দেশে তা রয়েছে। বৈঠকে পর্যটন সংক্রান্ত এলাকাভিত্তিক বই প্রকাশ, দেশে-বিদেশে তথ্য কেন্দ্র স্থাপন ও মিডিয়া ক্যাম্পেইনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া দেশে অন-অ্যারাইভাল ভিসা প্রদানের বিষয়টি আরো সহজ ও সম্প্রসারণ করা হবে।’তিনি জানান, পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে ইতিমধ্যে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় আগ্রহ প্রকাশ করেছে। দেশের বিভিন্ন স্থানে এলজিআরডিসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের বাংলো রয়েছে। এগুলো ব্যবহার করা যেতে পারে। এ ছাড়া রেল যোগাযোগ উন্নয়নের ওপরও গুরুত্বারোপ করেন তিনি।
প্রসঙ্গক্রমে মুহিত বলেন, ‘দেশে হেলথ ট্যুরিজমেরও বিশেষ সম্ভাবনা রয়েছে। এর প্রসার হওয়া উচিত। নেপাল ও ভুটান থেকে প্রচুর সংখ্যক রোগী বাংলাদেশে চিকিৎসার জন্য আসেন। কিন্তু এখানে একমাত্র স্কয়ার হাসপাতাল ছাড়া অন্য কোথাও হেলথ ট্যুরিজমের ব্যবস্থা নেই।’
রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘সারা বিশ্বেই পর্যটন এখন শিল্পে পরিণত হয়েছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলো পর্যটন খাত থেকে প্রচুর বৈদেশিক মুদ্রা আয় করলেও আমরা এ ক্ষেত্রে অনেক পিছিয়ে আছি। অথচ পর্যটক আকর্ষণ করার মতো বাংলাদেশে বহু দর্শনীয় স্থান ও প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন রয়েছে। তিন বছরব্যাপী কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে এগুলো বিশ্বের কাছে তুলে ধরা হবে।’
তিনি জানান, আগামী অক্টোবরে দেশে ১১টি দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলন হবে। ওই সম্মেলনে বাংলাদেশে বৌদ্ধ ধর্মের বিভিন্ন নিদর্শন তুলে ধরা হবে। বিশেষ করে আঞ্চলিক পর্যটন শিল্প বিকাশের জন্যই এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।’