শুঁটকি খাওয়া কি খারাপ?
বাংলাদেশে অনেক এলাকায় শুঁটকি মাছ খাওয়ার প্রবণতা আছে। রুপচাঁদা, লইট্টা, ছুরি, ছোট চিংড়ি, গজার, পুঁটি, কাঁচকি ইত্যাদি মাছ শুকিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। এটি বেশ জনপ্রিয় পদ। কথা হলো শুঁটকি মাছ কি খাওয়া খারাপ, নাকি এতে কোনো উপকারিতা আছে?
শুঁটকি মাছে তাজা মাছের তুলনায় আমিষ, প্রোটিন ও খনিজ লবণের পরিমাণ অনেক বেশি। ক্যালসিয়াম ও লৌহের পরিমাণও অনেক। ছোট চিংড়ির শুঁটকিতে লৌহের পরিমাণ বেশি। রক্ত স্বল্পতা ও গর্ভবতী নারীরা এটি খেলে উপকারই পাবেন। যাঁরা দুধ খেতে পারেন না বা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে, তাঁরা প্রোটিনের বিকল্প উৎস হিসেবে মাঝে মাঝে শুঁটকি খেতে পারেন। আসুন, জেনে নিই কোন ধরনের শুঁটকিতে কী উপাদান আছে?
প্রতি ১০০ গ্রামে আমিষ, প্রোটিন ও খনিজ লবণ
ছোট চিংড়ির শুঁটকি: ৬২ দশমিক ৪ গ্রাম প্রোটিন, ৩৫৩৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৩৫৪ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২৮ গ্রাম লৌহ ও ২৯২ ক্যালরি।
ছুরি শুঁটকি: ৭৬ দশমিক ১ গ্রাম প্রোটিন, ৭৩৯ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৭০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৪ দশমিক ২ মিলিগ্রাম লৌহ, ৩৮৩ ক্যালরি।
টেংরার শুঁটকি: ৫৪ দশমিক ৯ গ্রাম প্রোটিন, ৮৪৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪০০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ৫ মিলিগ্রাম লৌহ ও ২৫৫ ক্যালরি।
লইট্টার শুঁটকি: ৬১ দশমিক ৭ গ্রাম প্রোটিন, ১৭৮১ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ২৪০ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ২০ মিলিগ্রাম লৌহ ও ২৯৫ ক্যালরি।
ফাইস্যা মাছের শুঁটকি: ১১ গ্রাম প্রোটিন, ১১৭৬ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম, ৪৭৮ মিলিগ্রাম ফসফরাস, ১৮ মিলিগ্রাম লৌহ ও ৩৩৬ ক্যালরি।
সতর্কতা
* শুঁটকি প্রক্রিয়াজাতকরণ ও সংরক্ষণের সময় প্রচুর লবণ দেওয়া হয়। তাই উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদ্রোগীদের জন্য এটি ক্ষতিকর হতে পারে।
* বাত ও কিডনির রোগীদের বেশি শুঁটকি খাওয়া উচিত নয়।
* যাঁদের কিডনিতে ক্যালসিয়াম পাথর হওয়ার ঝুঁকি আছে, তাঁরাও শুঁটকি এড়িয়ে চলবেন।
* ইদানীং শুঁটকি সংরক্ষণে ক্ষতিকর কীটনাশক ডিডিটি-জাতীয় উপাদান দেওয়া হয়। তাই রান্নার আগে হালকা গরম পানিতে ভিজিয়ে বারবার পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নেবেন।
* বাড়িতে শুঁটকি সংরক্ষণ করতে হলে মাঝে মাঝে কড়া রোদে দেবেন।