প্রধানমন্ত্রী-সিরিসেনা ২০১৭ সালের মধ্যেই এফটিএ স্বাক্ষর করতে সম্মত
বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কা এ বছরের মধ্যেই মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করার বিষয়ে সম্মত হয়েছে।
শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে আনুষ্ঠানিক আলোচনার পর দু’দেশ এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে।
দুই নেতার আনুষ্ঠানিক বৈঠক সম্পর্কে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে পররাষ্ট্র সচিব এম. শহীদুল হক জানান, ‘প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালের মধ্যে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (এফটিএ) করতে সর্বসম্মতিক্রমে সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন’।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, যত দ্রুত সম্ভব মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি করতে উভয় দেশ আলোচনা ও পর্যবেক্ষণ সম্পন্ন করার জন্য সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যা হবে কোন দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রথম এফটিএ চুক্তি।
এরআগে উভয় নেতার উপস্থিতিতে ভাতৃপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির অংশ হিসেবে অর্থনীতি, কৃষি, জাহাজ শিল্প, উচ্চ শিক্ষা, তথ্য, প্রযুক্তি এবং মিডিয়া বিষয়ে একটি চুক্তি ও ১৩টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়।
পররাষ্ট্র সচিব শহীদুল হক এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন। এ সময় অন্যান্যের মধ্যে শ্রীলংকায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রিয়াজ হামিদুল্লাহ উপস্থিত ছিলেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে কারো মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি নেই। যদি ২০১৭ সালের মধ্যে এই এফটিএ সম্পন্ন হলে এটিই হবে কোন দেশের সঙ্গে প্রথম কোন মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি। এর মধ্যে দিয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ এফটিএ এর অভিজ্ঞতা লাভ করতে যাচ্ছে।
মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হলে ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রতিবন্ধকতাগুলো দূর হবে বলে জানান তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, এফটিএ চুক্তিতে দুই দেশ লাভবান হবে। তবে বাংলাদেশ অনেক লাভবান হবে।
শ্রীলঙ্কার সঙ্গে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন হলে বাংলাদেশ অন্য যেসব দেশের সঙ্গে এই চুক্তি করতে চাইছে সেগুলো করতে সুবিধা হবে বলে জানান তিনি।
শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে ব্যবসা বাণিজ্যের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পায় জানিয়ে পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ১৪টি দলিল সই হয়েছে। যার মধ্যে ৭টি বাণিজ্য ও ব্যবসা কেন্দ্রিক।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের কৃষিক্ষেত্রের সাফল্য বিশেষ করে বীজ উৎপাদনে বিপ্লব সাধনের বিষয়ে শ্রীলংকার প্রেসিডেন্ট এর নেপথ্য কথা জানার আগ্রহ ব্যাক্ত করেন।
পররাষ্ট্র সচিব বলেন, চুক্তিগুলো এবং দুই দেশের যৌথ ঘোষণা দুই দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের গভীরতাই নির্দিষ্ট করে এবং যাতে দুই দেশের ব্যবসায়িক এবং রাজনৈতিক সম্পর্ক জোরদার করণেরও ইঙ্গিত বহন করে।
সফর বিষয়ে শ্রীলঙ্কান প্রেসিডেন্টের বক্তব্য তুলে ধরে শহীদুল হক বলেন, প্রেসিডেন্ট এ সফরকে ঐতিহাসিক হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
এই সফরের মধ্যে দিয়ে দুই দেশের সর্ম্পকের একটা নব যাত্রা শুরু হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।