নাটোরে পাওয়া যাচ্ছে জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন
জাপানের জাতীয় ফল পার্সিমন এখন পাওয়া যাচ্ছে নাটোরে। ফলের সূতিকাগার হিসেবে পরিচিত নাটোরে সীমিত আকারে পার্সিমনের ফলন পাওয়া গেলেও অচিরেই এ ফল এদেশের মানুষের কাছে নন্দিত হবে, ছড়িয়ে পড়বে সারাদেশে।
জাপান, ইটালী, থাইল্যান্ড এবং ভিয়েতনাম থেকে সংগ্রহ করা ১৫টি পার্সিমন গাছে ফল ধরানোর চেষ্টায় নিজেকে নিয়োজিত করেন দেশের প্রখ্যাত ফল গবেষক এস এম কামরুজ্জামান। নাটোরের মডার্ণ হর্টিকালচার সেন্টারে কয়েক বছরের অক্লান্ত চেষ্টা সফলতা পায় ২০১০ সালে। বর্তমানে প্রায় কুড়ি ফুট উচ্চতার থাইল্যান্ডের ছয়টি গাছের প্রত্যেকটিতে দেড় থেকে দুই হাজার করে ফল ধরেছে। ছয় থেকে সাতটা ফলে এক কিলোগ্রাম। রং এবং আকৃতিতে এদেশের টমেটো এবং গা্েবর সাথে সাদৃশ্য থাকা পার্সিমন ফল হলুদ ও কমলা রঙের মিশ্রনে গাছে ধরে রাশি রাশি। গাছ হয়ে ওঠে সুশোভিত।
সুস্বাদু ও রসালো পার্সিমনের মধ্যে ছবেদার মত কয়েকটি বিচি থাকে। আর ভিয়েতনামের পার্সিমন খানিকটা কচকচা। জাপানের পার্সিমন বিচিমুক্ত হবে বলে আশাবাদী এস এম কামরুজ্জামান।
পার্সিমন গাছে ফুল আসে মার্চে আর ফল সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে। তবে ফল প্রাপ্তির সময়কে দীর্ঘায়িত করে নভেম্বরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টায় কাজ করছেন এই উদ্যান তত্ত্ববিদ ও অবসরপ্রাপ্ত অতিরিক্ত সচিব এস এম কামরুজ্জামান। তিনি বলেন, নভেম্বরে এদেশে উৎপাদিত কোন ফল নেই। ফলশূন্য নভেম্বরে এই ফল উৎপাদনের মাধ্যমে দেশের মানুষের কাছে পৌছে দিতে পারলে অবশ্যই জনপ্রিয় হয়ে উঠবে।
মডার্ণ হর্টিকালচার সেন্টারে থাকা গাছগুলোকে মাতৃগাছ হিসেবে ব্যবহার করে এক হাজার চারা তৈরি করা হচ্ছে। এসব চারা বাণিজ্যিকভাবে ছড়িয়ে যাবে সারাদেশে। আর এসব গাছ থেকে ফল পাওয়া যাবে তিন থেকে চার বছরের মধ্যে। এক সময় দেশের মানুষের কাছে পরিচিত হয়ে উঠবে।
পার্সিমনের উৎপত্তি চায়নাতে হলেও জাপান, কোরীয় উপদ্বীপ ছাড়িয়ে চলে গেছে ইউরোপ ও আমেরিকাতে। ভিটামিন এ, বি এবং সি’তে ভরপুর এই ফল। রয়েছে এন্টি অক্সিডেন্ট এবং পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, ফসফরাস ও কপারসহ একাধিক খনিজ লবন। মানুষের শরীরের জন্যে উপকারী পার্সিমনের অসংখ্য গুনাগুণ থাকলেও এতে থাকা পেকটিন রক্তচাপ এবং ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে অনন্য।