রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্পৃক্ততা অব্যাহত রাখার আহবান বাংলাদেশের
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে জোরপূর্বক রোহিঙ্গা বাস্তুচ্যুত হওয়া এবং এখনো তাদের অনুপ্রবেশ অব্যাহত থাকায় বাংলাদেশে সৃষ্ট মানবিক সংকট শান্তিপূর্ণ উপায়ে সমাধানের আহবান জানিয়েছে বাংলাদেশ।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সোমবার অপরাহ্নে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন পদ্মায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী কূটনীতিকদের ব্রিফিংকালে বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যে নৃশংসতা এখনো বন্ধ হয়নি এবং রোহিঙ্গা সীমান্ত অতিক্রম অব্যাহত রেখেছে।’
তিনি বলেন, জাতিসংঘের সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী গত ২৫ আগস্ট থেকে রাখাইন থেকে আসা জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৫ লাখ ২০ হাজার। গত ১০ দিনে প্রায় ৪০ হাজার রোহিঙ্গা এ দেশে পালিয়ে এসেছে।
অস্ট্রেলিয়া, চীন, মিসর, ফ্রান্স, ইতালি, জাপান, রাশিয়া, সুইডেন, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, জার্মানী, কানাডা, ভারত, নেদারল্যান্ডস, ভ্যাটিকান, ডেনমার্ক, স্পেন, ইইউ, মিয়ানমার, সিঙ্গাপুর, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, ভিয়েতনাম, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া, ব্রুনাই দারুসসালাম, সুইজারল্যান্ড ও নরওয়ের কূটনীতিকগণ ব্রিফিংয়ে যোগ দেন।
মাহমুদ আলী বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার তার স্টেট কাউন্সেলর অফিসের ইউনিয়ন মিনিস্টার ইউ কাউ তিন্ত সুইকে বাংলাদেশে পাঠায় এবং তিনি সে দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, মিয়ানমার এ সময় ১৯৯২ সালের ‘যৌথ বিবৃতি’র নীতিমালা ও মানদন্ড অনুসরণ করে রোহিঙ্গাদের ফেরত নেয়ার প্রস্তাব দেয়। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতি ১৯৯২ সালের ‘সম্পূর্ণ বিপরীত’।
মাহমুদ বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের প্রায় অর্ধেক মুসলিম গ্রাম আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে এবং এখনো আগুন জ্বলছে। সুতরাং রাখাইনে বসবাস অনুযায়ী রোহিঙ্গা ভিত্তিক পরিচিত বাস্তবসম্মত হবে না।’
তিনি বলেন, তাই বাংলাদেশ সফরকারী মিয়ানমারের মন্ত্রীকে বাস্তবসম্মত নীতিমালা ও মানদন্ডের ভিত্তিতে করা প্রস্তাবিত নতুন চুক্তি হস্তান্তর করা হয়েছে এবং উভয় দেশ এ ব্যাপারে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠনে সম্মত হওয়ায় মিয়ানমারের পক্ষ থেকে সম্মতির জন্য এখন বাংলাদেশ অপেক্ষা করছে।
মন্ত্রী বলেন, আমরা মিয়ানমারের প্রতিনিধির ঢাকা সফর এবং তাদের ইচ্ছা অনুযায়ী বাস্তুচ্যুত মিয়ানমারের নাগরিকদের’ ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে তাদের আগ্রহকে স্বাগত জানাচ্ছি।’