বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » বাংলাদেশ এখন ‘সাইনিং স্টার’ : সজীব ওয়াজেদ জয়

বাংলাদেশ এখন ‘সাইনিং স্টার’ : সজীব ওয়াজেদ জয় 

2017-10-21_6_853686

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, বাংলাদেশ এখন ‘সাইনিং স্টার’। তাই দেশের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখতে আগামী জাতীয় নির্বাচনে আবারো আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনার জন্য তরুণদের প্রতি তিনি আহবান জানিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন আইটি বিশেষজ্ঞ সজীব ওয়াজেদ জয় গতকাল রাজধানীর অদূরে সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব কমপ্লেক্স মিলনায়তনে সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই)’র তারুণ্যের প্লাটফর্ম ইয়ং বাংলার উদ্যোগে দেয়া জয়বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড-২০১৭ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ আহবান জানান।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সিআরআইয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য ও বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বীপু এমপি। এ সময় সিআরআইয়ের ট্রাস্ট্রি বোর্ডের সদস্য রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি উপস্থিত ছিলেন।
সিআরআইয়ের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘আমরা উন্নত দেশের উদাহরণ হিসেবে মালয়েশিয়ার কথা বলে থাকি। সে দেশটিকে যে রাজনৈতিক দল স্বাধীন করেছিল সে দলটিকে তাঁরা ২০ বছর ক্ষমতায় রেখেছিল।’
তিনি বলেন, ‘আর আওয়ামী লীগ এবারই প্রথমবারের মত টানা দ্বিতীয়বারের মত দেশ পরিচালনা করছে। আর এ আট বছরে দেশে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে। বাংলাদেশ নি¤œ মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত হয়েছে। স্বাধীনতার পক্ষের শক্তি আবার ক্ষমতায় এলে দেশ আরো উন্নত হবে।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র জয় বলেন, যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তাদের দেশপ্রেম নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার আগে সারা বিশ্বে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পাঁচবার চ্যাম্পিয়ান হয়েছিল এবং একটি জঙ্গীবাদী রাষ্ট্র হিসেবে পরিচিত পেয়েছিল।
তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে বাংলাদেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্র হিসেবে উল্লেখ করা হতো এবং যে পাকিস্তানকে আমরা যুদ্ধ করে পরাজিত করেছি তাদের সাথে দেশকে তুলনা করা হতো।
সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, বর্তমান সরকারের সফল নেতৃত্ব দেশের সমন্বিত উন্নয়নে বাংলাদেশকে এখন বলা হচ্ছে সাইনিং স্টার। নেক্সট ইলেভেন অর্থনীতির দেশের মধ্যে আমরাও একটি।
জয়বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড বিজয়ীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আত্মমর্যাদা, আত্মবিশ্বাস, দেশপ্রেম ও স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে আপনাদের এগিয়ে যেতে হবে। আর স্বাধীনতার চেতনা না থাকলে আত্ম বিশ্বাস ও দেশপ্রেম অর্জন করা সম্ভব না।
তিনি বলেন, বিশ্বের শক্তিধর দেশগুলো সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ বাধিয়ে দেওয়ায় সে দেশের হাজার হাজার মানুষ শরনার্থী হয়েছে। তাদের প্রতিবেশী দেশগুলোও তাদের আশ্রয় দেয়নি।
তিনি বলেন, কিন্তু বাংলাদেশ মিয়ানমার থেকে আশা রোহিঙ্গাদের জন্য দরজা খুলে দিয়েছে। বাংলাদেশ সাহায্যের জন্য কারো কাছে হাত পাতে নি। কোন বিশ্ব সংস্থার কাছে সাহায্যও চায়নি। এটাই হচ্ছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অর্জিত আত্মবিশ্বাস।
জয় বলেন, আমাদের আত্মবিশ্বাসের জন্যই নিজেদের অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করতে সমর্থ হচ্ছি। বিশ্বব্যাংক ভেবেছিল, তাদের অর্থায়ন বাতিল করলে আমরা তাদের কাছে মাথানত করবো। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে দেশ স্বাধীন হয়েছে। আর স্বাধীনতার শক্তি কারো কাছে মাথানত করে না।
আপনারাই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্বাধীনতার চেতনা কখনো ভুলবেন না এবং ভবিষ্যত প্রজন্মকেও ভূলতে দেবেন না। কারণ আপনাদের নেতৃত্বেই বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন বাস্তবায়িত হবে।
বিএনপি-জামায়াত দেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ৩০ লাখ শহীদের সংখ্যা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু থাকতে পারে না।
জয় বলেন, বিএনপি জামায়াত যাতে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নিয়ে মিথ্যাচার করতে না পারে সেজন্য তরুণদের দায়িত্ব পালন করতে হবে। কারণ যে জাতি নিজের ইতিহাস ভূলে যায় সে জাতির কোন ভবিষ্যত নেই।
তিনি বলেন, দেশের ছেলে মেয়েরা নিজেদের উদ্যোগে নিজেদের কমিউনিটির উন্নয়নের জন্য কাজ করছে। তাঁরা নিজ উদ্যোগে যেভাবে দেশের মানুষের জন্য কাজ করছে তা আগে দেখা যেত না।
তিনি বলেন, ইয়াং বাংলার মাধ্যমে আমরা যখন কাজ শুরু করি তখন তাঁরা সমাজের নানা সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে শুরু করে। আগে তাদের আত্মবিশ্বাস ছিলনা এখন তাদের সে বিশ্বাস তৈরি হয়েছে।
জয় বলেন, স্বাধীনতার চেতনা হারিয়ে ফেলার জন্যই তরুণরা তাদের আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিল। লড়াই করে দেশকে স্বাধীন করা এবং সাড়ে তিন বছরের মধ্যে যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশকে পুনগঠিত করা জাতির জন্য আত্মবিশ্বাস হারিয়ে ফেলাটা সত্যিই দু:খ জনক।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের মত ঘটনা ঘটানো হয়। আর তখন থেকেই স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি আবার ক্ষমতায় ফিরে আসে। তখন থেকেই আমাদের দেশকে বিশ্বের কাছে ভিক্ষুকের দেশ হিসেবে তুলে ধরা হয়।
সজীব ওয়াজেদ জয় এ সময় সাবেক অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের ধনী দেশ হলে বিদেশী সাহায্য পাওয়া যাবে না বলে করা মন্তব্যের কথা উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, বিএনপি চায়নি দেশ স্বাধীন হোক। আর সেজন্যই তারা দেশের উন্নয়নও চায় নি।
সামাজিক সমস্যা মোকাবেলায় সুশীল সমাজের কঠোর সমালোচনা করে বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র জয় বলেন, সামাজিক সমস্যা সমাধানের নামে সুশীল সমাজের নামে এনজিও করে ব্যবসা করেছে আর বিদেশে সফর করেছে এবং টাকা পাচার করেছে।
জয় সামাজিক, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখায় এ বছর যে ৩০ টি সংগঠনের কাছে জয়বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড তুলে দেন।
কমিউনিটি উন্নয়ন, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া তিনটি বিভাগে অবদান রাখা ৫০টি সংগঠনের মধ্যে ৩০টি সংগঠনকে নির্বাচিত করা হয়।
এ বছর কমিউনিটি উন্নয়নের জন্য ২০ টি , সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদানের জন্য সাতটি এবং ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদানের জন্য তিনটি সংসঠনকে নির্বাচিত করা হয়।
কমিউনিটি উন্নয়নে অবদান রাখায় পুরস্কারপ্রাপ্ত সংগঠনগুলো হলো সিলেটের কাকতাড়–য়া, বরিশালের বরিশাল ইয়ুথ সোসাইটি, যশোরের স্বপ্ন দেখ সমাজ কল্যাণ সংগঠন, চাঁদপুরের অডিও ভিজ্যুয়াল শিক্ষার সাথে জড়িত হোন (ব্রেভ),সিলেটের ইচ্ছাপূরণ সামাজিক সংগঠন, কুমিল্লার দূর্বার ফাউন্ডেশন, ঠাকুরগাওয়ের আইপজিটিভ, ঢাকার মডেল লাইভ স্টক অ্যাডভান্সমেন্ট ফাউন্ডেশন, সাতক্ষীরার জাগরণ ক্লাব, চট্টগ্রামের পতেঙ্গা প্রতিবন্ধী উন্নয়ন সংগঠন, নাটোরের কল্লোল ফাউন্ডেশন, মৌলভীবাজারের মানবসেবা মূলক সংগঠন প্রত্যয়, গাইবান্ধার আমার স্কুল, মৌলভীবাজারের উত্তরণ বাংলাদেশ, রাঙ্গামাটির স্পার্ক-সাপোর্টিং পিপুল এন্ড রিবিল্ডিং কমিউনিটিজ, ঢাকার ওয়ার্ক ফর হিউমিনিটি, নেত্রকোনার মানব কল্যাণকামী অনাথালয়, নওগাঁর শিশু বিকাশ, সিলেটের ইচ্ছাপূরণ সামাজিক সংগঠন ও দিনাজপুরের স্বাধীন।
সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অবদান রাখায় পুরষ্কার প্রাপ্ত সংগঠনগুলো হলো বগুড়ার চৌপাশ নাট্যাঞ্চল, ঢাকার কুইজার্ড, ঝিনাইদহের কথন সাংস্কৃতিক সংসদ, সিলেটের ইনোভেটর বইপড়া উৎসব, পঞ্চগড়ের মুক্ত সাংস্কৃতিক সংঘ, সিলেটের থিয়েটার মুরারীচাদ এবং রাঙ্গামাটির জুমফুল থিয়েটার।
ক্রীড়া ক্ষেত্রে অবদান রাখায় পুরস্কার পাওয়া সংগঠনগুলো হলো সাতক্ষীরার শ্যামনগর ফুটবল একাডেমী, গাজীপুরের হুইল চেয়ার ক্রিকেট ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন বাংলাদেশ (ডব্লিউসিডব্লিউএবি) এবং রংপুরের রাঙ্গাটুঙ্গি ইউনাইটেড ওমেন ফুটবল এসোসিয়েশন।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone