শেষ ম্যাচে জয় চায় বাংলাদেশ
স্বাগতিক দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ওয়ানডে সিরিজের শেষ ম্যাচে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এক ম্যাচ হাতে রেখে ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে বাংলাদেশের বিপক্ষে সিরিজ জয়ও নিশ্চিত করে ফেলেছে প্রোটিয়ারা । কিন্তু শেষ ম্যাচে জয়ের লক্ষ্য নিয়ে মাঠে নামবে মাশরাফি বিন মর্তুজার দল। প্রোটিয়াদের লক্ষ্য হোয়াইটওয়াশ হলেও বাংলাদেশ তা এড়াতে মরিয়া। এমন লক্ষ্যে আগামীকাল ইস্ট লন্ডনের বাফেলো পার্কে বাংলাদেশ সময় বেলা ২টায় মাঠে নামবে দু’দল।
দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের পর রঙ্গীন পোশাকেও নিজেদের সেরাটা ধরে রেখেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়ানডে সিরিজের প্রথম দুই ম্যাচে দুর্দান্ত পারফরমেন্স প্রর্দশন করেছে প্রোটিয়ারা। কিম্বার্লিতে প্রথম ওয়ানডেতে দুই ওপেনার কুইন্ট ডি কক ও হাশিম আমলার ব্যাটিং দৃঢ়তায় ১০ উইকেটের বড় ব্যবধানে জয়ের স্বাদ নেয় দক্ষিণ আফ্রিকা।
এরপর পার্লে ১৭৬ রানের দানবীয় ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ১০৪ রানের জয় এনে দেন সাবেক অধিনায়ক এবি ডি ভিলিয়ার্স। ফলে এক ম্যাচ আগেই ওয়ানডে সিরিজ জয় নিশ্চিত করে ফেলে প্রোটিয়ারা। এবার বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশের সুযোগ পেয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এমন সুযোগ কাজে লাগানোর কথাই বললেন প্রোটিয়া দলের ব্যাটিং কোচ নিল ম্যাকেঞ্জি, ‘আমরা ৩-০ ব্যবধানে সিরিজ জয়ের চেষ্টা করবো। আমরা কোন দলকে ছোট করছি না এবং বাংলাদেশ গেল কয়েক বছর ধরে নিজেদের সেরা ক্রিকেটই খেলছে। সম্প্রতি টেস্ট ফরম্যাটে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়েছে তারা। এমনকি কয়েক বছর আগে দক্ষিণ আফ্রিকাকে নিজেদের মাটিতে দু’টি ওয়ানডেতেও হারিয়েছিলো। তাই বাংলাদেশকে শক্ত প্রতিপক্ষ ভেবেই তৃতীয় ওয়ানডের জন্য আমাদের পরিকল্পনা সাজিয়েছি। সেরা পারফরমেন্স দেখিয়ে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডেও জিততে চাই আমরা।’
ওয়ানডে ম্যাচের প্রথম ম্যাচে মুশফিকুর রহিমের সেঞ্চুরিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২৭৯ রানের টার্গেট দিয়েছিলো বাংলাদেশ। অপরাজিত ১১০ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন তিনি। দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও কথা বলেছে মুশির ব্যাট। ৬০ রানের ইনিংস এসেছিলো তার ব্যাট থেকে। কিন্তু দলের অন্যান্য ব্যাটসম্যানরা ব্যাট হাতে নিজেদের মেলে ধরতে পারছেন না। শুরুটা ভালো করেও তা ধরে রাখতে ব্যর্থ হচ্ছেন মাহমুদুল্লাহ-সাকিব-সাব্বিররা।
ব্যাটসম্যানদের চেয়ে বোলারদের ব্যর্থতা আরও বেশি। প্রথম ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার কোন উইকেটই শিকার করতে পারেনি টাইগাররা বোলাররা। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৬ উইকেট শিকার করলেও, ডি ভিলিয়ার্স ততক্ষণে যা ক্ষতি করার করে দিয়েছেন বাংলাদেশের।
বোলারদের এমন ব্যর্থতার পেছনে ফিল্ডারদের অবদান সবচেয়ে বেশি। ক্যাচ ড্র’পের সাথে আন্ডারআর্ম ফিল্ডিং মিসের কাজটা বেশ দক্ষতার সাথেই করেছেন তারা। এই সুযোগে জীবন পেয়ে নিজেদের ইনিংসটা বড় করেছেন দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটসম্যানরা। তবে ব্যাটিং-এর সময় দক্ষিণ আফ্রিকার ফিল্ডারদের হাতে জীবন পেয়েছেন বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরাও। কিন্তু তারপরও নিজেদের বড় করতে পারেননি মাহমুদুল্লাহ-সাকিব-সাব্বিররা।
শেষ ওয়ানডেতে সুযোগ আছে বলে দ্বিতীয় ম্যাচ শেষে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা, ‘আমাদের জন্য এখনো একটা সুযোগ আছে। আমরা দল হিসেবে ভালো খেলতে পারছি না। একজন-দু’জন ভালো খেললে হবে না। সবাইকে এক সাথে ভালো খেলতে হবে। দ্বিতীয় ম্যাচে ইমরুল-মুশফিক ভালো ব্যাটিং করেছে, কিন্তু অন্যরা পারেনি। বোলিং-এ রুবেল-সাকিব ভালো করেছে। তবে অন্য বোলাররা ব্যর্থ।’
ওয়ানডেতে এখন পর্যন্ত ৪টি ওয়ানডে সিরিজ খেলেছে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এরমধ্যে ৩টি প্রোটিয়ারা ও ১টি বাংলাদেশ জয় করে। ৩টি সিরিজের সবক’টিতেই বাংলাদেশকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা।
বাংলাদেশ দল : মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), ইমরুল কায়েস, লিটন দাস (উইকেটরক্ষক), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মেহেদি হাসান, মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন, মুমিনুল হক, মুশফিকুর রহিম (উইকেটরক্ষক), মুস্তাফিজুর রহমান, নাসির হোসেন, রুবেল হোসেন, সাব্বির রহমান, সাকিব আল হাসান, সৌম্য সরকার ও তাসকিন আহমেদ।
দক্ষিণ আফ্রিকা দল : ফাফ ডু প্লেসিস (অধিনায়ক), আইডেন মার্করাম, টেম্বা বাভুমা, ফারহান বেহার্দিয়েন, কুইনটন ডি কক (উইকেটরক্ষক), এবি ডি ভিলিয়ার্স, জেপি ডুমিনি, ইমরান তাহির, ডেভিড মিলার, ওয়েইন পারনেল, ডেন পিটারসন, আনডিলে ফেলুকুয়ায়ো, ডুয়াইন প্রেটোরিয়াস ও কাগিসো রাবাদা।