খুলনা-কলকাতা ট্রেন সার্ভিস উদ্বোধন হাসিনা-মোদীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ যৌথভাবে খুলনা-কলকাতা ট্রেন সার্ভিস এবং ঢাকার সঙ্গে সিলেট ও চট্টগ্রামের সংযোগকারি ভৈরব ও তিতাসে দুটি রেল সেতুর উদ্বোধন করেছেন।
ঢাকা ও দিল্লী থেকে দুই প্রধানমন্ত্রী এবং তাঁদের সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী সকালে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তাঁরা একইসঙ্গে ঢাকা-কলকাতা মৈত্রী এক্সপ্রেস ট্রেনের উভয় প্রান্তের বহিরাগমন ও কাষ্টমস কার্যক্রমও উদ্বোধন করেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নয়া দিল্লীতে তাঁর কার্যালয়ে অবস্থান করছিলেন।
কলকাতার থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন সেখানকার মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
নয়া দিল্লী থেকে নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, অর্থনীতি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম এবং ড. মহিউদ্দিন খান আলমগীর, এমপি গণভবন প্রান্তে এবং দ্বিতীয় ভৈরব সেতু এলাকায় অবস্থানরত রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।
প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড.কামাল আব্দুল নাসের চৌধুরী, বাংলাদেশে ভারতের হাইকমিশনার হর্ষবর্ধণ শ্রীংলা, এনবিআর-এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ নজিবুর রহমান এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
নতুন দুটি রেলসেতু হচ্ছে দ্বিতীয় ভৈরব এবং দ্বিতীয় তিতাস সেতু। এ দু’টি সেতু ভৈরব এবং তিতাস নদীর উপর নির্মিত হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং সিলেটের মধ্যে ডাবল লাইনে রেল যোগাযোগ স্থাপনের জন্য সেতু দু’টি নির্মাণ করা হয়েছে। ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট-এর (এলওসি) আওতায় সেতু দু’টি নির্মাণ করা হয়েছে। ৯৮৪ মিটার দীর্ঘ এবং ৭ মিটার প্রসস্থ ভৈরব রেল সেতুটির নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ৫৬৭ কোটি টাকা এবং ২০১৩ সালের ২৫ ডিসেম্বরে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গত মাসে শেষ হয়। অন্যদিকে ২১৮ মিটার লম্বা এবং ৭ মিটার প্রসস্থ দ্বিতীয় তিতাস সেতুর নির্মাণ ব্যয় হয়েছে ১৬১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ২০১৪ সালের ২৭ জানুয়ারি এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়ে গত মাসে শেষ হয়। এই দু’টি রেলসেতুতেই ডুয়েল গেজ এবং ব্রডগেজ উভয় রেল লাইনই বসানো হয়েছে।
খুলনা-কলকাতার মধ্যে যাতায়াত সহজতর করতে বন্ধন এক্সপ্রেস নামের ট্রেনটি চালু করা হয়েছে।
ট্রেনটির আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে এই রুটে যাত্রী পরিবহন শুরু করার কথা রয়েছে এবং সকাল ১১টায় (ভারতীয় সময়) কলকাতা থেকে ছেড়ে মাত্র সাড়ে ৪ ঘন্টায় ১৭৭ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে খুলনা এসে পৌঁছবে।
রেলের পূর্ব জোনের জেনারেল ম্যানেজার এবং প্রকল্প পরিচালক মো. আব্দুল হাই জানান, ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেট রুটে চলাচলকারি ট্রেনগুলো পুরাতন এবং নতুন দু’ধরনের রেল নেতু ব্যবহার করেই যাত্রী পরিবহন করবে।
তিনি বলেন, ‘ব্রীজগুলো ঢাকা-চট্টগ্রাম এবং ঢাকা-সিলেটের যাত্রীদের যাত্রা দ্রুততর করবে কেননা এগুলো ডুয়েল গেজ এবং ব্রডগেজ লাইন দিয়ে একশ থেকে ১২০ কি.মি. গতিতে চলাচল করতে পারবে।’
ঢাকা-চট্টগ্রাম ডবল লাইন ট্রেন সার্ভিসকে আরো গতিশীল করার উদ্দেশ্যেই ২০১০ সালের ৯ নভেম্বর প্রকল্পটি একনেকে পাশ হয় বলেও তিনি উল্লেখ করেন।