কবি বেলাল চৌধুরীর ৮০তম জন্মদিন আগামীকাল
আগামীকাল বাংলা সাহিত্যের বিশিষ্ট কবি বেলাল চৌধুরীর ৮০তম জন্মদিন। ১৯৩৮ সালের এই দিনে তিনি ফেনী জেলার শর্শদি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
বাংলা সাহিত্যের মেধাবী, সৃষ্টিশীল এবং বোহেমিয়ান কবি হিসেবে খ্যাত এই কবির পিতার নাম রফিকউদ্দিন আহমাদ চৌধুরী এবং মা মুনীর আখতার খাতুন চৌধুরী।
সাহিত্য, সংস্কৃতি ও সাংবাদিকতায় কবি বেলাল চৌধুরী বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী। জীবনের প্রায় পাঁচ দশকেরও বেশি সময়ব্যাপী তিনি কবিতা, সাংবাদিকতা, গবেষণা, প্রবন্ধ, অনুবাদসহ সাহিত্যের বিভিন্ন পত্রিকায় সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। দীর্ঘদিন ঢাকাস্থ ভারতীয় দূতাবাসের পত্রিকা ‘ভারত বিচিত্রা’র সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া সাপ্তাহিক সন্দ্বীপ, সচিত্র সন্ধ্যানী সম্পাদনা করেন। বেশকিছু কাল তিনি ভারতের কলকাতায় বসবাস করেন। সে সময়ে কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা, অমৃত বাজার, যুগান্তর, সাপ্তাহিক দেশ, কৃত্তিবাসে লেখালেখি করেন।
বেলাল চৌধুরীর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ হচ্ছে নিষাদ প্রদেশ (১৯৬৪), বেলাল চৌধুরীর কবিতা (১৯৬৮), আত্মপ্রতিকৃতি (১৯৭৪), স্থির জীবন ও নিসর্গ (১৯৭৫), স্বপ্নবন্দী (১৯৮৪) যাবজ্জীবন সশ¯্র উল্লাস (১৯৯২), বত্রিশ নম্বর (১৯৯৮), সেলাই করা ছায়া। প্রবন্ধ গ্রন্ধের মধ্যে রয়েছে কাগজে কলমে (১৯৯৭), স্ফুলিঙ্গ থেকে দাবানল (২০০১)। এ ছাড়া শিশুসাহিত্য,অনূদিত, সম্পাদিত গ্রন্থসহ কবির প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্য হচ্ছে ্আটাশটি।
কবি বেশকিছু কাল ধরে অসুস্থ অবস্থায় রয়েছেন। গত কয়েক মাসে দু’বার হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। বর্তমানে পল্টন একালায় নিজ বাসায় অবস্থান করে চিকিসা নিচ্ছেন। গত সপ্তাহে এক সাক্ষাৎকারে কবি বেলাল চৌধুরী বলেন, ‘কবিতা কোন আদর্শকে সামনে রেখে বদলায় না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে চিন্তার অনেক বদল হয়। সেই চিন্তা থেকে কবিরাও বদলায়। কবিতার ভাষা কাউকে সামনে রেখে, তাকে অনুসরণ করে বদলায় না। এটা আসে কবির ভেতর থেকে। পরিবর্তিত ভাষাটা কবি নিজের ভেতর থেকেই অর্জন করেন। সেটা তার দেখা ও অভিজ্ঞতার নিরিখে হয়। ’
কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইন কবির আশিবছরে পদার্পণে কবিকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘বেলাল চৌধুরী হচ্ছেন বহুমাত্রিক সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারি। তিনি আমাদের সাহিত্য, সংস্কৃতি, সামাজিক বিভিন্ন ক্ষেত্রকে অবিরাম পরিশ্রম করে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তিনি হচ্ছেন বেসরকারীভাবে আমাদের সাহিত্যের দূত। শুধু বাংলাদেশে নয়, বাংলা ভাষাভাষি মানুষ যেখানেই আছেন, যেমন কলকাতার কথা বলা যায়, বেলাল চৌধুরী সেখানে প্রবাদতূল্য ব্যাক্তিত্ব তার কর্মগুনেই। অজাতশক্র এই কবি আমাদের কাব্য, সংস্কৃতি, সাহিত্যকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন নানা সাধনায় এবং মেধাবী সাধক হিসেবে।’
সাহিত্যে বিশেষ অবদানের জন্য কবি বেলাল চৌধুরীকে বাংলাদেশ সরকার একুশের পদক প্রদান করে ১৯৯৪ সালে। পেয়েছেন বাংলা একাডেমি পুরস্কার (১৯৮৪), অলক্ত সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৭), নীহাররঞ্জন সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯২), কবিতালাপ পুরস্কার।