মানুষের ভেতরের শক্তিকে আবিস্কার করার ক্ষমতা ছিল হুমায়ূন আহমেদের
কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ক্ষমতা ছিল মানুষের ভেতরের শক্তিকে আবিস্কার করার। তাঁর আরো একটি বড় গুণ ছিল তিনি সবাইকে একত্রিত করতে পারতেন।
শুক্রবার ঢাকা লিট ফেস্টের দ্বিতীয় দিনে বাংলা একডেমি প্রাঙ্গনে সমকালীন বাংলা সাহিত্যের জনপ্রিয় ও নন্দিত এ কথাসাহিত্যিককে নিয়ে আলোচনাকালে লেখকের স্ত্রী ও অভিনেত্রী মেহের আফরোজ শাওন এ কথা বলেন।
চিত্রনায়ক রিয়াজের সঞ্চলনায় এ আলোচনা সভায় আরো অংশ নেন চলচ্চিত্র পরিচালক মতিন রহমান ও জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত সিনেম্যাটোগ্রাফার মাহফুজুর রহমান খান।
চলচ্চিত্র পরিচালনায় হুমায়ূন আহমেদের দক্ষতার প্রশংসা করে শাওন বলেন, তার সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তার আটটি চলচ্চিত্রের পাঁচটিতে আমি প্রধান চরিত্রে কাজ করেছি। তার গল্পগুলো এমন ছিল যে পাঠকরা চরিত্রগুলোর মধ্যে নিজেদের তুলে ধরতেন।
তিনি বলেন, আমি প্রথমে ছিলাম হুমায়ূন পাঠক, পরে হয়েছি তাঁর চলচ্চিত্রের অভিনেত্রী।
চলচ্চিত্রে হুমায়ূনের গল্প বলার ধারাবাহিকতা খুব সাধারণ ছিল উল্লেখ করে অভিনেত্রী শাওন বলেন, তিনি যখন চলচ্চিত্র বানিয়েছেন তখন সহজভাবে গল্প বলে গেছেন। সবসময় গল্প লিখেছেন দর্শকের চোখের ভাষা পড়ে। আমরা এটাকে সচরাচর ধারা কিংবা ব্যাতিক্রম ধারা না বলে বরং বলতে পারি, এটা হুমায়ূন আহমেদের নিজস্ব ধারা।
বাংলা সাহিত্যে হুমায়ূন আহমেদ ছিলেন অন্যতম কথক, এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, হুমায়ূন তিনি সাহিত্যে যেমন পটু ছিলেন, ঠিক তেমনি পারদর্শী ছিলেন চলচ্চিত্রে সাধারণ গল্পকে ভিন্ন মাত্রা দেওয়ার ক্ষেত্রেও।
হুমায়ূন আহমেদের সঙ্গে কাজ করার স্মৃতিচারণ করে মাহফুজুর রহমান খান বলেন, তাঁর সঙ্গে লোকেশন দেখতে দেশের বিভিন্ন জেলায় গিয়েছি। বহু জায়গা ঘুরেছি। তিনি সবসময় চরিত্রকে বিশ্লেষণ করার জন্য উপযুক্ত জায়গা খুঁজতেন।
তার পাঁচটি চলচ্চিত্রে কাজ করে, চারটিতেই পুরস্কার পেয়েছেন উল্লেখ করে তিনি বলেন, স্যার যখন স্ক্রিপ্ট লিখতেন তখন প্রতিটির পাশে শট উল্লেখ করা থাকত। এটা তাঁর একটা বড় গুণ।
আলোচনার শুরুতেই নায়ক রিয়াজ সঞ্চালনার পাশাপাশি হুমায়ূন আহমেদ সম্পর্কে বলেন, আমি তার পোষা শিল্পী ছিলাম, তার কাজ নিয়ে কথা বলা আমার জন্য খুব কঠিন এবং তা সম্ভবও নয়। তবে তার একটা ক্ষমতা ছিল, তিনি গল্পকে চমৎকার সুতায় গাঁথতেন। ‘শ্রাবণ মেঘের দিনে’ চলচ্চিত্রে একটি মেয়ের জীবনের গল্পকে অসাধারণভাবে তিনি বলেছেন। তার লেখায় বৃষ্টি, চাঁদ, জোছনার উপস্থিতিই বলে দেয়, এগুলোর সঙ্গে তার প্রেমের কথা।
উন্মুক্ত প্রশ্নোত্তর পর্বে হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী শাওন জানান, হুমায়ূন আহমেদের সবগুলো কাজ এবং ব্যবহার সামগ্রী একত্রিত করা হয়েছে। এখন শুধু জাদুঘর নির্মাণের অপেক্ষায় আছি।