মায়ের স্মৃতিচারণে প্রধানমন্ত্রী কাঁদলেন এবং কাঁদালেন
মা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের স্মৃতিচারণ করে কাঁদলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বেগম রোকেয়া পদক প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের ৭ই মার্চের বক্তব্যের পেছনে তার মায়ের ভূমিকা, ১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের কথা। বাবা-মা, ভাই-বোনসহ পরিবারের প্রায় সবাইকে হারানোর সেই রাতটার কথা বলতে গিয়েই কেঁদে ফেলেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় দর্শকসারিতেও অনেককেই চোখ মুছতে দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের এক পর্যায়ে উঠে আসে ১৫ আগস্টের সেই রাতের কথা। সেই মর্মান্তিক ঘটনার কথা বলতে গিয়ে কিছু সময়ের জন্য স্তব্ধ হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী। আবেগরুদ্ধ কন্ঠে কম্পিত গলায় তিনি বলেন, সেই ঘটনার কথা মনে পড়লে তিনি ঠিক থাকতে পারেন না।
কিছুক্ষণ নীরব থেকে আবেগ নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন প্রধানমন্ত্রী। এসময় মিলনায়তন জুড়েই যেনো একটা নীরব কান্নার সৃষ্টি হয়। পরে যখন কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর কণ্ঠ ছিলো আবেগ কম্পিত। তিনি বলেন তার মায়ের কথা, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব।
প্রধানমন্ত্রী স্মৃতিচারণ করে বলেন, সেই রাতে আমার মাকে হত্যাকারীরা নিয়ে যেতে চেয়েছিলো। কিন্তু তিনি তাদের সাথে যাননি। বরং তার স্বামী বঙ্গবন্ধুর সাথে মৃত্যুকেই বেছে নিয়েছিলেন।
“কোন সাধারণ নারী হলে হয়তো বাঁচার চেষ্টা করতো। কিন্তু তিনি মৃত্যুকেই আলিঙ্গন করেছেন। ” অশ্রুসজল চোখে এমন মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। কথাটি বলা শেষ করেই চোখ মুছে নেন তিনি। দর্শকসারিতেও অনেকেই আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়েন। তাদেরকেও চোখ মুছতে দেখা যায়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৭ই মার্চের সেই ঐতিহাসিক ভাষণের প্রসঙ্গেও কথা বলেন। তিনি বলেন সেই ভাষণের আগে অনেকেই বঙ্গবন্ধুকে নানা ধরণের বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছিলো। কিন্তু বেগম ফজিলাতুন্নেছাই বঙ্গবন্ধুকে বলেছিলেন, তোমার মনে যা আসে তুমি তাই বলবে, কারণ তুমি এই বাঙলার মানুষদের জন্য এতোদিন সংগ্রাম করেছো। তুমি জানো কি বলতে হবে। আর স্ত্রীর পরামর্শ শুনেই বঙ্গবন্ধু সৃষ্টি করলেন সেই ‘অমর কবিতা’, ‘বিশ্বের সর্বশ্রেষ্ঠ ভাষণ’।