চীন থেকে বাংলাদেশীদের ফিরিয়ে আনতে বিমান প্রস্তুত : পররাষ্ট্রমন্ত্রী
পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন আজ বলেছেন, সরকার ভয়াবহ করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের প্রেক্ষিতে চীন থেকে ‘ফিরে আসতে ইচ্ছুক’ বাংলাদেশী নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে এবং একটি বিমান প্রস্তুত রেখেছে।
রাজধানীর একটি হোটেলে কর্মশালা উদ্বোধনের পর তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমরা প্রস্তুত, প্রায় ৫০০ বাংলাদেশী শিক্ষার্থী এখন ভাইরাস আক্রান্ত এলাকার কেন্দ্রস্থল উহান শহরে রয়েছেন। আমরা তাদের ফিরিয়ে আনার জন্য একটি বিমানও প্রস্তুত করে রেখেছি “(যারা ফিরে আসতে ইচ্ছুক)”।
মোমেন বলেন, চীনে অবস্থিত বাংলাদেশ দূতাবাস একটি ওয়েবপেজ খুলেছে, যেখানে এখন পর্যন্ত ২৪৫ জন শিক্ষার্থী দেশে ফেরার জন্য নিবন্ধন করেছেন। তিনি আরও বলেন, আমরা তাদের সাথে অব্যাহত যোগাযোগ রাখছি।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চীনে আটকা পড়া বাংলাদেশী যারা ফিরে আসতে ইচ্ছুক তাদের ফিরিয়ে আনার পদক্ষেপ নেয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। তাই তারা সব ধরণের উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন।
মোমেন আরো বলেন, ‘দু’সপ্তাহের আগে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে না, কারণ চীনা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছে যে, তারা সেখানে সবাইকে আলাদা করে রেখেছে এবং কমপক্ষে ১৪ দিনের মধ্যে তাদেরকে চীন ত্যাগ করার অনুমতি দেয়া হবে না।’
যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতীয়রাও তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশের মতো আবেদন করেছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, তবে চীন তাদেরকেও ১৪ দিনের আগে চীন ছেড়ে যাওয়ার অনুমতি দেবে না।
এক প্রশ্নের জবাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার ঢাকা বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আগতদের ঠিকানা রেকর্ড করার নির্দেশ দিয়েছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সম্প্রতি চীন ও দক্ষিণ কোরিয়া ভ্রমণকারী চীনা ও কোরিয়ান নাগরিকসহ সকলকে পর্যবেক্ষণ করব।’
তিনি আরও বলেন, ভাইরাসটির প্রাদুর্ভাবের কারণে বাংলাদেশ এখনও চীনে ভ্রমণের ক্ষেত্রে কোনো নিষেধাজ্ঞা জারি করেনি।
মন্ত্রী বলেন, দেশের তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরেও সরকার বিদেশ থেকে আগত সব যাত্রীর শরীর পরীক্ষার জন্য থারমল স্ক্যানার স্থাপন করেছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা সব প্রস্তুতি নিয়েছি। তবে ভাইরাস প্রাদুর্ভাব নিয়ে কোনও আতঙ্ক সৃষ্টি করতে চাই না।’
বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাস প্রবাসী বাংলাদেশীদের কাছে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে কোনও জরুরি সহায়তার প্রয়োজন হলে তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য ২৪ ঘন্টার হটলাইন খুলেছে।
হটলাইন নম্বরটি +৮৬ ১৭৮-০১১১-৬০০৫ এবং এটি বাংলাদেশী প্রবাসী বিশেষত চীন জুড়ে বসবাসরত শিক্ষার্থী এবং গবেষকদের কাছে প্রচার করা হয়েছে।
চীন সরকার উহান ও অন্যান্য শহরগুলোকে সিল করে দিয়েছে। ফলে ভাইরাসটির সংক্রমন ঠেকাতে হাজার-হাজার বিদেশিসহ ৫০ মিলিয়নেরও বেশি লোক কার্যত আটকা পড়েছে। এতে মৃতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১০৬ জনে এবং আক্রান্ত লোকের সংখ্যাও এখন ৪,৫০০ জনের বেশি।