প্রযুক্তি ভিত্তিক বাংলাদেশ গড়ার অঙ্গীকার প্রধানমন্ত্রীর
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি নিশ্চিতকরণের পাশাপাশি বিশ্ব মঞ্চে বাংলাদেশকে একটি প্রযুক্তি এবং জ্ঞানভিত্তিক মর্যাদাপূর্ণ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠায় তাঁর সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন একটা জাতি হিসেবে বাঙালি জাতিকে আমরা গড়ে তুলতে চাই। অর্থনৈতিক স্বাবলম্বীতার সাথে সাথে প্রযুক্তি জ্ঞান নিয়ে সারাবিশ্বে একটা সম্মানিত জাতি হিসেবে আমরা একে গড়ে তুলে ক্ষুধা ও দারিদ্রমুক্ত সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলবো, যে বাংলাদেশের স্বপ্ন জাতির পিতা দেখেছিলেন।’
প্রধানমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অমর একুশে ফেব্রুয়ারি এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির ভাষণে একথা বলেন।শেখ হাসিনা বলেন, প্রায় এক দশক ক্ষমতায় থাকার ফলে বিশ্বে বাংলাদেশ একটা মর্যাদা পেয়েছে। আমাদেরকে বিভিন্ন স্থানে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে ঘোষণা দেয়া হচ্ছে। এক সময় সকলেই আমাদের অবহেলার চোখে দেখতো। বাংলাদেশ নাম শুনলেই বলে উঠতো-ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দরিদ্রের দেশ ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন,আল্লাহর রহমতে আর কেউ তা বলতে পারবেনা। আমরা ইতোমধ্যেই ঘোষণা দিয়েছি ২০২১ সালের মধ্যেই প্রতিটি ঘরে বিদ্যুতের আলো জ্বলবে। আর একটা সিদ্ধান্ত দিয়েছি আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী যে যেখানেই আছেন, যে যার মতো পারেন সহযোগিতা করবেন যেন বাংলাদেশের একটা মানুষও আর গৃহহীন না থাকে।
তিনি বলেন, ‘প্রতিটি গ্রামে খোঁজ নিতে বলেছি। নদী ভাঙ্গনে যারা ঘর-বাড়ি হারিয়েছে তাঁদেরকে আমরা ঘর করে দেব। আর যারা ভূমিহীন, গৃহহীন প্রত্যেককেই আমরা ঘর-বাড়ি করে দেব। প্রত্যেকটি মানুষের একটা ঠিকানা হবে।’তাঁর সরকার তৃণমূল পর্যন্ত চিকিৎসা ও শিক্ষার ব্যবস্থা করেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ করেছি এবং বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক ভাবেই নয়, প্রযুক্তি শিক্ষাকেও আমরা গুরুত্ব দিয়েছি। সারা বাংলাদেশে আমরা মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেটসহ প্রযুক্তি ব্যবহারের আমরা সুযোগ করে দিয়েছি।’
শেখ হাসিনা আরো বলেন, ‘ভাষা আন্দোলনে যাঁরা রক্ত দিয়ে মাতৃভাষার মর্যাদা রক্ষা করেছিল আর যাঁদের পদাংক অনুসরণ করেই আমরা লাখো শহিদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করেছি, সেই ত্যাগ কখনো বৃথা যাবেনা।’
দৃপ্ত কন্ঠে সরকার প্রধান বলেন,‘বৃথা যেতে আমরা দেবনা, এটাই আমাদের প্রতিজ্ঞা।’ আলোচনা সভার শুরুতেই ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এক মিনিট দাঁড়িয়ে নিরবতা পালন করা হয়।আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু ও তোফায়েল আহমেদ, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, এ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ডেনভারের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ও লেখক-গবেষক হায়দার আলী খান আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন।এছাড়াও মহিলা বিষয়ক সম্পাদক মেহের আফরোজ চুমকি, কার্যনির্বাহী সদস্য মেরিনা জামান কবিতা, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানও আবু আহম্মেদ মান্নাফী বক্তৃতা করেন।ভাষা শহিদদের স্মরণে কবিতা আবৃত্তি করেন কবি তারিক সুজাত।আলোচনা সভা যৌথভাবে পরিচালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও উপ-প্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।