টানা চতুর্থবারের মত জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশের লক্ষ্য বাংলাদেশের
সফরকারী জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে আধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্য নিয়ে আগামীকাল থেকে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ শুরু করছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগামীকাল সিরিজের প্রথম ওয়ানডে শুরু হবে দুপুর ১টায়।
আফ্রিকান দল জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে জয়ের ধারা অব্যাহত রাখতেই কাল মাঠে নামছে বাংলাদেশ। সাফল্য নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারলে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টানা ১৪ ম্যাচে জয়ের স্বাদ পাবে টাইগাররা এবং অবশ্যই টানা চতুর্থবারের মত তাদের হোয়াইটওয়াশের পথে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হারের স্বাদ কেমন তা শুধুমাত্র বর্তমান টাইগার দলের চার খেলোয়াড়- তামিম ইকবাল, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজাই জানেন।
২০১৩ সালে বুলাওয়েতে সর্বশেষ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ হারের স্বাদ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। মাশরাফি বাদে, সেই দলে এই তিন সদস্যই ছিলেন। এই দলের বাকী সদস্যদের ঐ সময় অভিষেক হয়নি।
ঐ সিরিজের পর জিম্বাবুয়ের সাথে ১৩টি ম্যাচ খেলে বাংলাদেশ। প্রত্যকটিই ছিলো দেশের মাটিতে। প্রথমটি ছিলো ২০১৪ সালে মাশরাফির নেতৃত্বে। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করেছিলো টাইগাররা।
এ সিরিজ জয় দিয়ে নিজেদের ক্রিকেটে নতুন জাগরনের শুরু করেছিলো বাংলাদেশ। এরপর থেকেই ক্রিকেট বিশ্বে অন্যরুপে আবির্ভুত হয় টাইগাররা।
এরপর ২০১৫ ও ২০১৮ সালে দু’বার তিন ম্যাচের দ্বিপাক্ষীক সিরিজে জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করে বাংলাদেশ। আর ২০১৮ সালে শ্রীলংকাকে নিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের দু’ম্যাচে জিম্বাবুয়েকে হারিয়েছিলো টাইগাররা।
এরমাঝে বাংলাদেশের বিপক্ষে একটি টেস্ট ও কিছু টি-২০ ম্যাচ জিতেছিলো জিম্বাবুয়ে। কিন্তু ওয়ানডে ফরম্যাটে অবিচল ছিলো বাংলাদেশ। অন্য দুই ফরম্যাটের চেয়ে ওয়ানডে ভার্সন বাংলাদেশকে বিশ্ব পর্যায়ে উঁচু স্থানে রয়েছে।
তারপরও ইতিহাস বাংলাদেশের পক্ষে কথা বলছে। ওয়ানডে সিরিজের আগে এক ম্যাচের টেস্ট বড় জয় পেয়েছে টাইগাররা। ইনিংস ও ১০৬ রানের বড় ব্যবধানে জয় পায় বাংলাদেশ। তাই আত্মবিশ্বাসী হয়ে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে নামছে টাইগাররা।
জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজই হবে বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক হিসেবে মাশরাফির শেষ সিরিজ। মাশরাফি বলেন, ‘আমরা জিম্বাবুয়ের চেয়ে এগিয়েই আছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কোন দলই দুর্বল নয়। তারা আমাদের হারাতে পারে এবং সম্প্রতি তারা অন্য দুই ফরম্যাটে আমাদের হারিয়েছে। তাই আপনি কোন কিছুই নিয়েই নিশ্চিত হতে পারেন না।’
সিরিজ শুরুর আগে মাশরাফি বলেন, ‘যেমনটি আমি আগেও বলেছি, শুরু থেকেই আমাদের জ্বলে উঠতে হবে। শুরুটা আসলেই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ম্যাচ বাই ম্যাচ এগোতে চাই। আমরা প্রথম ম্যাচটি জিততে চাই এবং এরপর দ্বিতীয় ম্যাচ নিয়ে ভাববো। প্রথম দুই ম্যাচ জিততে পারলে তখন লক্ষ্য থাকবে হোয়াইটওয়াশ। তবে এখনই আমরা হোয়াইটওয়াশ নিয়ে কিছুই বলতে পারছি না। তারাও আমাদের হারাতে চাইবে।’
এর আগে ৭২বার মুখোমুুখি হয়েছে বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ে। বিশ্বের যেকোন দলের চেয়ে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে বেশি ম্যাচ খেলেছে টাইগাররা। ৭২ ম্যাচের মধ্যে বাংলাদেশ ৪৪টিতে জয় পায়। ২৮টিতে জিতেছে জিম্বাবুয়ে।
২০১৯ সালের জুলাইয়ে শ্রীলংকা সিরিজের পর প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামছে বাংলাদেশ। শ্রীলংকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের ঐ সিরিজে দলে থাকা অনেকই নেই এবারের স্কোয়াডে। ইংল্যান্ড ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ঐ সিরিজ খেলতে নেমেছিলো বাংলাদেশ। নতুন স্টাফ ও নতুন কোচ রাসেল ডোমিঙ্গোর অধীনে কালকের ম্যাচটি বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডে।
ঐ দলের সাতজন খেলোয়াড় এবারের স্কোয়াডে নেই। তাই অনেক পরিবর্তন হয়েছে এবং কিছু নতুন খেলোয়াড়ও এসেছে। টি-২০তে দুর্দান্ত পারফরমেন্স করা আফিফ হোসেনের ওয়ানেডেতে অভিষেক হতে পারে।
মাশরাফি বলেন, ‘আমি জানি না, টিম কম্বিনেশন কেমন হবে। কোচিং স্টাফরা নতুন এবং অবশ্যই প্রধান কোচ, নতুন খেলোয়াড়দের প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করবেন। তবে টিম মিটিং শেষে একাদশ নিয়ে আমরা সিদ্বান্ত নেবো।’