খুলনা বিভাগে সাহিত্যে প্রথম ‘স্বাধীনতা পদক’ পাচ্ছেন কথা সাহিত্যিক রইজ উদ্দিন
খুলনা বিভাগে প্রথম ‘স্বাধীনতা পদক’ (সাহিত্য) পাচ্ছেন অবসরপ্রাপ্ত যুগ্নসচিব কথা সাহিত্যিক মুক্তিযোদ্ধা এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ। নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ি গ্রামের কৃতি সন্তান রইজ উদ্দিন এবছর ‘সাহিত্য’ ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য স্বাধীনতা পদকে মনোনীত হয়েছেন।আগামী ২৫ মার্চ সকাল ১০টায় ঢাকায় ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘স্বাধীনতা পদক- ২০২০’ প্রদান করবেন।
গত ২০ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, জাতীয় পর্যায়ে গৌরবোজ্জ্বল ও কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ মুক্তিযোদ্ধা এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ ‘স্বাধীনতা পুরস্কার ২০২০’ (সাহিত্য ক্ষেত্রে) এর জন্য মনোনীত হয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য আরো আট ব্যক্তি ও একটি প্রতিষ্ঠানকে এ পদক প্রদান করা হবে। এদিকে, নড়াইলসহ খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় কোনো ব্যক্তি এ প্রথম সাহিত্য ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পদকের জন্য মনোনীত হলেন। এর আগে ১৯৯৩ সালে বরেণ্য চিত্রশিল্পী এসএম সুলতান তার শিল্পকর্মের জন্য ‘স্বাধীনতা পদক” লাভ করেন।
স্বাধীনতা পদকে মনোনীত মুক্তিযোদ্ধা ও সাহিত্যিক এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ বলেন, এ আনন্দ ও অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হওয়ায় আমার লেখালেখির দায়িত্ববোধ আরো বেড়ে গেছে বলে আমি মনে করি।
তিনি জানান, তার প্রকাশিত বইয়ের সংখ্যা ৩০টি। এছাড়া সম্পাদিত বইয়ের সংখ্যা একশ’ বেশি। তিনি গল্প, কবিতা, উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছড়া, আঞ্চলিক ইতিহাস, ভ্রমণ কাহিনী, কাহিনী কাব্য, ইতিহাস-ঐহিত্য, জ্ঞান-বিজ্ঞান, রম্য রচনা, গবেষণা গ্রন্থ, বয়স্ক শিক্ষার বই, সম্পাদনা বই, প্রশিক্ষণ গাইডসহ বিভিন্ন ধরণের বই লিখেছেন। সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে ১৩টি পুরস্কার লাভ করেছেন।
দিঘলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি অহিদুর রহমান বলেন, রইজ উদ্দিন ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনের একজন সাহসী যোদ্ধা। তিনি স্বাধীনতা পদকে মনোনীত হওয়ায় দিঘলিয়া ইউনিয়ন তথা নড়াইলবাসী গর্বিত।
কুমড়ি গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা শেখ নওশের আলী বলেন, এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদ আমার সঙ্গে লোহাগড়া ও নড়াইলের বিভিন্ন এলাকায় যুদ্ধ করেছেন। তিনি সবসময় মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। রইজ উদ্দিন এ বছর স্বাধীনতা পদকে ভূষিত হওয়ায় আমরা আনন্দিত।
সূত্রে জানা যায়, এস এম রইজ উদ্দিন আহম্মদের বাবার নাম তাহাজ্জুদ্দিন আহম্মদ ও মায়ের নাম মনু বিবি। পৈতৃক নিবাস নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার কুমড়ি গ্রামে। চাকুরি সূত্রে দীর্ঘদিন ধরে খুলনা শহরের বসুপাড়া বাঁশতলা এলাকায় বসবাস করছেন। বাংলা সাহিত্যে এম এ, এলএল-বি ও হোমিওপ্যাথিতে ডিএইচএমএস করেছেন। খুলনা বিভাগীয় উপভূমি সংস্কার কমিশনার (যুগ্মসচিব) থেকে চলতি বছরের ১৫ জানুয়ারি অবসরে গেছেন রইজ উদ্দিন।বর্তমানে ১৪টি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সাথে জড়িত আছেন তিনি। স্ত্রী, দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও পুত্রবধূদের নিয়ে সংসার জীবন তাঁর।