দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী
আজ সকালে খুলে দেওয়া হচ্ছে বহুল প্রত্যাশিত দেশের প্রথম প্রবেশনিয়ন্ত্রিত ৫৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ে। এটি ঢাকার হানিফ ফ্লাইওভার থেকে মুন্সীগঞ্জের মাওয়া হয়ে পদ্মা সেতুর ওপর দিয়ে ফরিদপুরের ভাঙ্গায় পৌঁছাবে। ৫৫ কিলোমিটারের এই পথ পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ৪২ মিনিট, যা এই সময় কল্পনা করাটাই স্বপ্ন। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এর বাস্তবতা মিলবে। তবে এখনই এর সুফল পাবেন দক্ষিণবঙ্গের মানুষ। কারণ ঢাকার হানিফ ফ্লাইওভার থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার পথ এখন পাড়ি দিতে সময় লাগবে মাত্র ২৭ মিনিট এবং এটি আজ থেকেই শুরু হলো। আজ সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মো. মনিরুজ্জামান তালুকদারের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শুভ উদ্বোধন ঘোষণা করবেন দেশের প্রথম প্রবেশনিয়ন্ত্রিত ঢাকা-মাওয়া-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের। এ উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জের সর্বত্র, বিশেষ করে ঢাকা-মাওয়া মহাসড়কে সাজ সাজ রব পড়েছে। সর্বত্র বইছে উৎসবের আমেজ। এ বিষয়টি নিশ্চিত করে মুন্সীগঞ্জের জেলা প্রশাসক মনিরুজ্জামান তালুকদার বলেন, ‘ঢাকা থেকে মাওয়া হয়ে ভাঙ্গা পর্যন্ত ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়েটি শুভ উদ্বোধনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। এখন শুধু সময়ের অপেক্ষা কখন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এর শুভ উদ্বোধন করবেন। এ উপলক্ষে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়সহ জেলায় ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।’ প্রথম এক্সপ্রেসওয়ে ঢাকা-খুলনা জাতীয় মহাসড়কের রাজধানী ঢাকার যাত্রাবাড়ী মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের ইন্টারসেকশন, অর্থাৎ ইকোরিয়া-বাবুবাজার লিংক রোড হয়ে মাওয়া পর্যন্ত। এ ছাড়া ভাঙ্গা ও পাঁচ্চর অংশে ধীরগতির যানবাহনের জন্য পৃথক লেনসহ চার লেনের উন্নয়ন কাজের সমাপ্ত হওয়া দেশের প্রথম এক্সপ্রেসওয়েটির শুভ উদ্বোধন হবে আজ। ঢাকা-ভাঙ্গা ৫৫ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছিল ২০১৬ সালের জুলাই মাসে এবং শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে। সব মিলিয়ে ১১ হাজার ৩ কোটি ৯১ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ প্রকল্পটি পদ্মা নদীর কারণে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়েছে। এর একটি অংশ ঢাকার যাত্রাবাড়ী হানিফ ফ্লাইওভার থেকে মাওয়া পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার। অন্য অংশে পদ্মার ওপারে পাঁচ্চর থেকে ভাঙ্গা পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার। শেষ পর্যন্ত এ মাসের প্রথম সপ্তাহেই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ শেষ হয়। এতে আছে ৫৪টি কালভার্ট, চারটি রেলওয়ে ওভারপাস, পাঁচটি ফ্লাইওভার, ২০টি পাতালপথ বা আন্ডারপাস, ২৯টি মাঝারি ও ছোট সেতু, দুটি ইন্টারচেঞ্জ এবং দুটি টোলপ্লাজা। দেশের প্রথম প্রবেশনিয়ন্ত্রিত এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদফতরের তত্ত্বাবধানে নির্মাণকাজ সম্পন্ন করছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর স্পেশাল ওয়ার্কস অর্গানাইজেশন। এদিকে দেশের বহুল প্রত্যাশিত এই এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধনের খবরে মুন্সীগঞ্জের সর্বত্র বইছে আনন্দের বন্যা। মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের এমপি অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস বলেন, ‘দেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। এর প্রমাণ এক্সপ্রেসওয়ের শুভ উদ্বোধন এবং পদ্মা সেতুর চার কিলোমিটার দৃশ্যমান হওয়া। শেখ হাসিনা সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নের মহাসড়কে পৌঁছে দিয়েছে। আগামীকাল (আজ) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম প্রবেশনিয়ন্ত্রিত এক্সপ্রেসওয়ে উদ্বোধন করবেন। আর আগামী বছর উদ্বোধন করবেন পদ্মা সেতু। শেখ হাসিনা যা বলেন তা করেন। দেশের সব মানুষের সঙ্গে মুন্সীগঞ্জবাসী তথা এ এলাকার মানুষ আজ মহাখুশি। মুন্সীগঞ্জবাসী আর মাত্র একটি রাতের পর সকালে তাদের বহুল আকাক্সিক্ষত এক্সপ্রেসওয়েটির শুভ উদ্বোধন দেখবেন, উপভোগ করবেন।’