স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২৭ হাজার কোটি, সামরিক খাতে বাড়ছে ৪ হাজার কোটি
কোভিড-১৯ এর মহামারীতে দেশের স্বাস্থ্যখাতের দৈন্যতা ফুটে উঠেছে স্পষ্টভাবে। এরপরও আসছে বাজেটে এ খাত আশানুরূপ বরাদ্দ পাচ্ছে না। তবে আগের চেয়ে বরাদ্দ বাড়বে।
অর্থবিভাগ সূত্র জানায়, আসছে বাজেটে এলজিইডি টানা অষ্টমবারের মতো সর্বোচ্চ বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে। আর স্বাস্থ্যখাত থাকবে পঞ্চম স্থানে। অন্যদিকে সামরিক খাতেও বরাদ্দ বাড়ছে ৪ হাজার কোটি টাকা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর, আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্থানীয় সরকার বিভাগ ৩৬ হাজার ১০৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পেতে যাচ্ছে। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১ হাজার ৮৬০ কোটি টাকা বা ৫ দশমিক ৪৩ শতাংশ বেশি। অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ইতিমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেথ হাসিনার কাছে ২০১৯-২০ অর্থবছরের বাজেট সংশোধন এবং ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের রূপরেখা উপস্থাপন করেছেন।
জানা গেছে, আগামী ১লা জুন জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর কাছে অর্থমন্ত্রী বাজেটের যে রূপরেখা দিয়েছেন, সেখানে তিনি বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকার কথা বলেছেন। এছাড়া স্থানীয় সরকার বিভাগ সর্বোচ্চ ৩৬ হাজার ১০৩ কোটি টাকা বরাদ্দের কথা বলেছেন। বরাদ্দের দিক থেকে দ্বিতীয় স্থানে রয়েছে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। আগামী বাজেটে প্রতিরক্ষা মন্ত্রাণালয় ৩৪ হাজার ৮১৭ কোটি টাকা। আর তৃতীয় সর্বোচ্চ বরাদ্দ পাচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় (মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক) ৩৩ হাজার ১১৯ কোটি টাকা। এরপরে রয়েছে সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক বিভাগ। সেখানে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে ২৯ হাজার ৪৪২ কোটি টাকা।
বাজেটের পঞ্চম বৃহত্তম ব্যয় ধরা হয়েছে স্বাস্থ্যসেবার জন্য। এখাতে ব্যয় ধরা হচ্ছে ২৭ হাজার ৮৫০ কোটি টাকা। যা আগামী অর্থবছরের মোট জিডিপির ০.৪৪ শতাংশ। এরপরে রয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা খাতে ২৪ হাজার ৯৩৭ কোটি টাকা। চলতি বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ১৯ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা। এরপরে রয়েছে জ্বালানি খাতে ২৪ হাজার ৮৫৩ কোটি টাকা, জননিরাপত্তা বিভাগ ২২ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ১৭ হাজার ৯৪৫ কোটি টাকা এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় ১৬ হাজার ৪১৯ কোটি টাকা।
তবে অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ বেশি হওয়ার বিষয়ে সমালোচনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, কোভিড-১৯ আজ বিশ্বব্যাপী মহামারীতে রূপ নিয়েছে। আগামীতে কি হয় বলা যাচ্ছে না। এজন্য স্বাস্থ্য খাতের প্রতি সর্বোচ্চ নজর দেওয়া উচিৎ।
সূত্র জানিয়েছে, আগামী অর্থবছরের বাজেটের আকার ৫ লাখ ৬০ হাজার কোটি টাকা হতে পারে। এরমধ্যে ১৯ মন্ত্রণালয় খরচ করবে ৪৭ শতাংশ। জানা গেছে, স্থানীয় সরকার বিভাগের মূল ব্যয় হবে সিটি কর্পোরেশন এবং পৌর এলাকায়। কারণ এই প্রতিষ্ঠানগুলি গত কয়েক বছরে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অর্থনীতিবিদ ও পলিসি রিসার্স ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর বলেন, বরাদ্দের দিক থেকে স্বাস্থ্য খাত ৫ নাম্বারে। তাদের যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে সেটাই সঠিকভাবে খরচ করতে পারবে না। এ খাতে আমাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।
তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম বলেন, করোন ভাইরাস মহামারীকালে একটি ভালো অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে হবে। আগামী বাজেটে স্বাস্থ্য খাতের দিকে এবং খাদ্য নিরাপত্তার দিকে সর্বোচ্চ নজর দিতে হবে।