ট্রেন ছাড়া কোথাও মানা হচ্ছে না স্বাস্থ্যবিধি
করোনার মহামারী বিরাজ করছে দেশে। দুই মাসের বেশি সময় ছুটি থাকার পর খুলে দেয়া হয়েছে সব। বলা হয়েছে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবে গণপরিবহন, লঞ্চ ও ট্রেন। কিন্তু ট্রেনে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললেও গণপরিবহন ও লঞ্চে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মেনে চলা হচ্ছে না। এতে দিনে দিনে বেড়ে যাচ্ছে করোনা সংক্রমণ ঝুঁকি।
শুক্রবার ছুটির দিনে ঢাকার ফার্মগেইট, মিরপুরসহ নানা জায়গায় ঘুরে দেখা যায়, অন্যান্য দিনের চেয়ে রাস্তায় লোকসমাগম একটু কম। কিন্তু গণপরিবহনে চলাচলের ক্ষেত্রে যেভাবে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মানার কথা ছিল তার কোনোটাই হচ্ছে না। বাসে দুইজনের সিটে একজন করে বসার কথা থাকলেও দুইজনের সিটে দুইজনই বসছেন। মানা হচ্ছে না সামাজিক দূরত্ব। কিন্তু বাসের ভাড়া ঠিকই বেশি নেয়া হচ্ছে। কোথাও কোথাও এ নিয়ে বাসের চালক ও সহকারীদের সঙ্গে ঝগড়া হচ্ছে যাত্রীদের।
রাজধানী বাসে করে মিরপুর থেকে বাড্ডা যাচ্ছিলেন শহীদুল আলম। তিনি যুগান্তরকে বলেন, দুইজনের সিটে একজন করে বসিয়ে নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটাতো মানা হচ্ছেই না বরং বেশি করে যাত্রী বাসে উঠানো হচ্ছে।
এ ব্যাপারে চালক আবদুল হকের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, বাসে উঠার সময় আমরা প্রত্যেক যাত্রীর হাতে স্প্রে করছি। আর আমরা অনেক সময় যাত্রীদেরকে উঠতে বারণ করলেও তারা আমাদের কথা শোনে না। বাধ্য হয়েই তখন আমরা সবাইকে উঠাই।
বিকালে রাজধানীর শাহবাগ এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, শুক্রবার ছুটির দিনে অনেকেই বের হয়েছেন। বিকালে বাসে মানুষের যাতায়াত বেড়ে যায়। এই সময় অনেক গাড়িতে এমনও দেখা যায় যে, গাদাগাদি করে অনেকেই দাঁড়িয়ে চলাচল করছেন।
এদিকে রাজধানীর সদরঘাট টার্মিনালে দেখা যায়- চাঁদপুর, বরিশালসহ নানা রুটে লঞ্চ ছেড়ে যাচ্ছে। শুরুর দিকে কিছুটা স্বাস্থ্যবিধি মেনে যাত্রী চলাচলের ব্যবস্থা করলেও এখন এসবের তোয়াক্কা করছে না কেউই। স্বাস্থ্যবিধি মানাতো দূরে থাক সামাজিক দূরত্ব মেনে যাত্রী নেয়ারও কোনো বালাই নেই।
রবরব নামের একটি লঞ্চে উঠে দেখা যায়, চাঁদপুর যাওয়ার জন্য যাত্রীরা অনেকেই লঞ্চে জমায়েত হয়েছেন। যাত্রীদের কারো কারো মুখে মাস্ক দেখা যায়নি। আর সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়টি যেন কারো মাথাতেই নেই। একেবারেই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা যায়নি কাউকেই।
চাঁদপুরগামী যাত্রী মহিবুল বলেন, লঞ্চে আমরা আগের মতোই যাচ্ছি। করোনার আগেকার সময় আর এখনকার সময়ের মধ্যে কোনো পার্থক্য খুঁজে পাচ্ছিনা। আর কর্তৃপক্ষকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার তেমন কোনো তৎপরতাই দেখা যায়নি। এভাবে চললে করোনার সংক্রমণ দিনে দিনে আরও বাড়বে।
তবে ট্রেন চলাচলের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব মেনেই চলাচল করতে দেখা গেছে। বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে খুবই তৎপর। যে কয়টি ট্রেনই চলছে সবগুলোতে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে দেখা গেছে। রেলে যাতায়াত করা যাত্রীরাও এ নিয়ে তাদের তৃপ্তির কথা জানিয়েছেন।
রেল কর্তৃপক্ষ জানায়, আমরা সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে যাত্রীদের আনা নেয়ার কাজটি করছি। সবার সহযোগিতায় রেলের কার্যক্রম এভাবেই চলবে।