বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Monday, December 23, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » মোবাইল ব্যাংকিং থেকে যেভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রতারক চক্র!

মোবাইল ব্যাংকিং থেকে যেভাবে টাকা হাতিয়ে নিয়ে যাচ্ছে প্রতারক চক্র! 

image-313473-1591540086

মোবাইল ব্যাংকিং ও ডেবিট-ক্রেডিট কার্ড প্রতারকচক্রের ১৩ সদস্যকে ঢাকা ও ফরিদপুর থেকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব। তাদের মধ্যে ৯জনই মাস্টারমাইন্ড। তাদের কাছ থেকে নগদ প্রায় ১৫ লাখ টাকা এবং প্রতারণার কাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। তারা র‌্যাবের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।

র‌্যাবের দাবি, করোনাকালীন এ প্রতারকচক্র বিভিন্ন লোকজনকে ফাঁদে ফেলে কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। এদের ফাঁদে শিক্ষিত অনেক গ্রাহকও পা দিয়েছেন।

রোববার দুপুরে কারওয়ানবাজারে র‌্যাবের মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র‌্যাবের লিগাল মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার-বিন-কাশেম।

তিনি বলেন, একটি ব্যাংকের পক্ষ থেকে মামলার পর ঘটনার তদন্তে নামে র‌্যাব। র‌্যাব-২ ও র‌্যাব-৮ যৌথভাবে অভিযান পরিচালনা করে শনিবার দিবাগত রাতে রাজধানী এবং ফরিদপুরের ভাঙ্গায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ১৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলো, নাজমুল জমাদ্দার(১৯), হাসান মীর(১৮), ইব্রাহিম মীর(১৮), তৌহিদ হাওলাদার(২৩), মোহন শিকদার(৩০), পারভেজ মীর(১৮), সোহেল মোল্লা (২৬), দেলোয়ার হোসেন (৩৫), সৈয়দ হাওলাদার (২০), রাকিব হোসেন (২৪), মোহাম্মদ আলী মিয়া (২৬), পলাশ তালুকদার(৩৪) ও ইমন (২৫) কে ঢাকা ওফরিদপুরের ভাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করা হয়।

তাদের কাছ থেকে ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৪৬২ টাকা, ৩১টি মোবাইল ফোন, দুটি ল্যাপটপ, ২টি ট্যাব, ১২০টি সিম, ১টি রাউটার এবং একটি টিভিকার্ড জব্দ করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা তাদের অপরাধের কথা স্বীকার করে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছে।

তিনি জানান, জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা জানিয়েছে, একজন মাস্টারমাইন্ড প্রতারকচক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে। পুরো চক্রে ৩০ থেকে ৪০ জন সদস্য থাকে। এরা ৫টি গ্রুপে ভাগ হয়ে কাজ করে। এর মধ্যে রয়েছে হান্টার টিম, স্পুফিং বা নম্বর ক্লোন টিম, ফেইক কাস্টমার কেয়ার, টাকা উত্তোলন ও ওয়াচম্যান টিম।

তিনি জানান, অনলাইন মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে প্রতারণার শিকার হচ্ছে অনেকে। বিশেষ করে করোনাকালে ঘরবন্দি মানুষ বেশি প্রতারিত হচ্ছে। রাজধানী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলায় এ ধরনের উপদ্রব বেড়েছে। যারা ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বর ক্লোন করে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছিল।

তিনি জানান, হান্টার টিম প্রথমে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর, ডেবিট-ক্রেডিট কার্ডের তথ্য জোগাড় করে। এরপর দ্বিতীয় ধাপে বিকাশ বা নগদ বা যেকোনো মোবাইল ব্যাংকিংয়ের হেল্পলাইন নম্বর ক্লোনিং করে। এমনকি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতনদের নম্বর ক্লোন করে তারা। এজন্য নম্বর প্রতি একহাজার টাকা করে দেয়া হয়। পরে কাস্টমার কেয়ার খুলে (১০ জনের টিম) বসে গ্রাহকদের ফোন দেয়। এর আগে গ্রাহকের মোবাইলে পিন বা কোড নম্বর পাঠিয়ে বলা হয় দ্রুত কোড দেন, না হলে আপনার মোবাইল অ্যাকাউন্ট বন্ধ হয়ে যাবে। যে কোডটি পাঠাবে সেই ‘ফাঁদে’পড়ল। প্রতারকরা ব্যাংক ম্যানেজার বা এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের নম্বর ক্লোন করে ফোন দেয় বলে অনেক গ্রাহক তাদের খপ্পড়ে পড়ে যান।

গ্রাহকের টাকা পাওয়ার পর দ্রুত সময়ের মধ্যে সেই টাকা উত্তোলন করে ফেলা হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে এসব টাকা তোলে। যেমন- ঢাকার টাকা সিলেটে বা চট্টগ্রামে পাঠায়। আবার অনেক সময় টাকা তোলা না গেলে- টিভি, ফ্রিজ, এসি বা জামা কাপড় কিনে ফেলা হয়।

এত সতকর্তার পরও এগুলো বন্ধ হচ্ছে না জানিয়ে র‌্যাবের এ কর্মকর্তা বলেন, বিভিন্ন ছোট ছোট দোকান- যেমন পানের দোকান, সাইকেলের দোকান থেকে তাদের তথ্য ফাঁস করে দেয়া হয়। এছাড়া তারা ফরিদপুরের বিভিন্ন নদীর পাড়ে ছোট ছোট ঘর তৈরি করে রাত জেগে এসব কাজ করে। আবার লটারির ফাঁদে ফেলে অনেক সময় সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে থাকে।

গ্রেফতার ১৩ জন এর আগে কখনও ধরা পড়েনি জানিয়ে র‌্যাব কর্মকর্তা জানান, তারা এর আগে গ্রেফতার হয়নি। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে ২ মাসে এক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। তাদের সঙ্গে ব্যাংকের কেউ জড়িত আছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ফরিদপুরের ভাঙ্গা এলাকায় আরও কয়েকটি গ্র“প এ ধরনের কাজ করছে বলেও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়। তাদের ধরতে র‌্যাব কাজ করছে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone