ভারতের চাপে ‘নতুন মানচিত্র’ বদলাব না, জানিয়ে দিল নেপাল
ভারতের প্রবল আপত্তি অগ্রাহ্য করে নিজেদের সিদ্ধান্তে অটল রয়েছে হিমালয়ের কোল ঘেষে দাঁড়িয়ে থাকা নেপাল। অপেক্ষাকৃত ছোট্ট এ দেশটি নয়াদিল্লিকে সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ভারতের চাপের মুখে তারা কিছুতেই মানচিত্রে বদলাবে না। শুক্রবার নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম। নতুন এই মানচিত্রে ভারত-নেপাল সীমান্তের লিমপিয়াধুরা, কালাপানি ও লিপুলেখকে নেপালের অংশ বলে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু ভারতের দাবি, ওই তিনটি অংশই ভারতের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ এবং উত্তরাখণ্ড রাজ্যের পিথোরাগড় জেলার অন্তর্ভূক্ত।
এ নিয়ে ভারতের সঙ্গে সীমান্ত বিবাদে জড়িয়ে পড়েছে নেপাল। গত মে মাসে ওই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে নেপাল। তা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন শুরু হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালি সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে গত ২ নভেম্বর নিজেদের মানচিত্র বদল ঘটায় ভারত। তারপরই আমরা এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিই। এটা স্থায়ী সিদ্ধান্ত কারণ ওই এলাকাগুলো নেপালের মধ্যেই পড়ে। এ নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। তবে কোন এলাকা নেপালের মধ্যে পড়ছে, তা নিয়ে আলোচনা হওয়া দরকার।’
সম্প্রতি লিপুলেখ গিরিপথ থেকে কৈলাস-মানস সরোবরে যাওয়ার পথ পর্যন্ত একটি রাস্তার উদ্বোধন করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। তাতে প্রতিবাদ জানায় নেপাল সরকার। তারপরই ওই বিতর্কিত মানচিত্র প্রকাশ করে তারা। তা নিয়ে তীব্র আপত্তি জানায় ভারত। এমনকি এর পিছনে চীনের উস্কানি থাকতে পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় ভারত। তাতে দু’দেশের মধ্যে উত্তাপ আরো বাড়ে। এরপর গত ৮ জুন পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার প্রস্তাব দেয় নেপাল।
কিন্তু এ নিয়ে এখনো পর্যন্ত নেপালকে কিছু জানায়নি মোদি সরকার। তা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করে নেপালের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রদীপ গয়ালি বলেন,’পররাষ্ট্র সচিব স্তরে আলোচনা চালাতে ভারতকে চিঠি দিয়েছিলাম আমরা। কিন্তু এখনো পর্যন্ত তার জবাব পাইনি। কূটনৈতিক স্তরে আলোচনা চালাতে দু’দেশের দূতাবাসের পক্ষ থেকে চেষ্টা চালানো হচ্ছে।’ উল্লেখ্য, ভারত-নেপাল সম্পর্কে টানাপড়েন চলছে গত কয়েক মাস থেকেই। কয়দিন আগেই ভারতের তীব্র বিরোধিতা সত্ত্বেও বিতর্কিত ভূখণ্ডকে মানচিত্রে অন্তর্ভুক্ত করে সংবিধান সংশোধনের অনুমোদন দিয়েছে নেপাল সরকার। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।