যে কারণে মোদির প্রশংসায় পঞ্চমুখ চীনা গণমাধ্যম
লাদাখ সীমান্তে গত ১৫ জুন চীনা সেনাদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় ২০ ভারতীয় সেনা নিহত হয়। এর পর থেকে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে ভারত ও চীনের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে সর্বদলীয় বৈঠকের ডাক দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই বৈঠকে মোদির দেওয়া বক্তব্যের প্রশংসায় পঞ্চমুখ চীনের গণমাধ্যম। তাদের দাবি, মোদি নিজের উগ্র-জাতীয়তাবাদী সমর্থকদের শান্ত করার পাশাপাশি সংঘাতের বিষয়টিকে কম গুরুত্ব দেওয়ার চেষ্টা করছেন।
শুক্রবার সর্বদলীয় বৈঠকে মোদি বলেন, ‘সীমান্তে আমাদের ভূখণ্ডে কেউ অনুপ্রবেশ করেনি। বর্তমানে সেখানে কারও অবস্থান নেই। আমাদের কোনও পোস্টও কেউ দখল করেনি।’
সীমান্ত সংঘাতের জন্য শুরু থেকেই পুরোপুরি ভারতকে দায়ী করে আসছিল চীন। তাদের দাবি ছিল, সীমান্তে চীনের অংশেই উস্কানিমূলকভাবে ভারতের সেনারা সংঘাতে জড়িয়েছিল।
দ্য হিন্দু জানায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় বৈঠকে দেওয়া বক্তব্য রবিবার চীনের বেশ কয়েকটি সংবাদমাধ্যম ফলাও করে প্রচার করে।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপত্র গ্লোবাল টাইমস লিখেছে, ‘সংঘাতের বিষয়টি তিনি (মোদি) এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।’
প্রতিবেদনে বলা হয়, যখন প্রধানমন্ত্রী মোদি সামরিক বাহিনীকে যেকোনও ব্যবস্থা নেওয়ার পূর্ণ স্বাধীনতা দিচ্ছেন, একই সঙ্গে তিনি সংঘাতের বিষয়টি এড়িয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হচ্ছে।
পত্রিকাটি আরও বলছে, ‘চীনা পর্যবেক্ষকদের মতে- কড়া কথা বলে মোদি জাতীয়তাবাদী ও উগ্রপন্থীদের মন রক্ষার চেষ্টা করছেন, তিনি আবার এটাও জানেন যে, তার দেশ চীনের সঙ্গে ফের কোনও সংঘাতে জড়াতে পারবে না। তাই তিনি উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা করছেন।’
সাংহাই’র ফুদান ইউনিভার্সিটির সেন্টার ফর সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের অধ্যাপক লিন মিনওয়াং বলেন, ‘উত্তেজনা প্রশমনে মোদির বক্তব্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। কারণ, চীনকে ফের অভিযুক্ত করার উগ্রপন্থীদের নৈতিক ভিত্তি একজন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি মুছে দিয়েছেন।’
শনিবার চায়না ডেইলি’র এক কলামে চায়না ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের আলোচক লেন চিয়ানশুয়ে বলেন, ‘জাতীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে একের পর এক আগ্রাসী ইস্যুর মাধ্যমে ডানপন্থী ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) তার উগ্র-জাতীয়তাবাদী হিন্দুত্ববাদী ইস্যু সামনে আনছে।’
তিনি বলেন, ‘কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন মর্যাদা ভারত এককভাবে পরিবর্তন করে পাকিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা বাড়িয়েছে, আবার তথাকথিত নবগঠিত কেন্দ্র শাসিত অঞ্চল লাদাখে চীনের ভূখণ্ড অন্তর্ভুক্ত করে সংঘাত উস্কে দিয়েছে।’ সূত্র: দ্য হিন্দু