পুরুষের প্রতারণার আট কারণ
ডেস্ক নিউজ : প্রতারণা বা বহুগামিতা নিয়ে নারী-পুরুষ উভয়েরই বহুকাল ধরে পরস্পরের বিরুদ্ধে অভিযোগের আঙুল তোলার বিষয়টি চলে আসছে। ঠিক কী কী কারণে পুরুষেরা প্রতারণা করে, তা নিয়েও জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। পুরুষদের বিশ্বাসঘাতকতার ওপর গবেষণা এবং দাম্পত্য পরামর্শক হিসেবে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে এ নিয়ে কিছু সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন নর-নারীর সম্পর্কবিষয়ক বিশেষজ্ঞ কামাল খুরানা। ভারতীয় এই বিশ্লেষকের অনুসন্ধান থেকে পুরুষদের প্রতারণার শীর্ষ আট কারণ।
দাম্পত্য কলহ:
ঘরে স্ত্রীর সঙ্গে সব সময়ই ঝগড়াঝাঁটি হচ্ছে কিন্তু সমস্যার সমাধান হচ্ছে না। অবস্থাটা এমনই যে ‘অসুখী’ এবং ‘বিরক্ত’ হয়ে থাকাটাই নৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ পরিস্থিতিতে হয় তিনি লড়াই চালিয়ে যাবেন, নয় পালিয়ে যাবেন। অন্য একটি সম্পর্ক খোঁজাকে এ ক্ষেত্রে দাম্পত্যের অমীমাংসিত সমস্যা থেকে পালানোর পথ মনে করে থাকেন অনেক পুরুষই। এমন সময়ে অন্য নারীর সঙ্গে সহজ সম্পর্কের মানে দাঁড়ায় সংকটময় জীবনেও অন্য কোনো আশ্রয়ে সমান্তরাল জীবনে সুখী হওয়ার চেষ্টা করা।
পরকীয়া!
কিছু পুরুষ বিবাহিত জীবনের একঘেয়ে আটপৌরে নিয়মে ক্লান্ত ও বিরক্ত হয়ে পড়েন। দাম্পত্য সম্পর্ককে নতুনভাবে চাঙা করার চেষ্টার চেয়ে বাইরে কোথাও অন্য কোনো সম্পর্কের মধ্যেই উত্তেজনা বোধ করেন তাঁরা। সংসারের জটিল মারপ্যাঁচ থেকে বেরিয়ে আসার কাজ অনেক কঠিন মনে হয় তাঁদের। এর চেয়ে বর্তমানের কোনো জোয়ারে গা ভাসিয়ে দেওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে থাকতে চান এ পুরুষেরা। এমন সময়ে দায়দায়িত্বহীন নতুন প্রেমের তাজা আনন্দে পরকীয়ার ঝুঁকি নিতেও পিছপা হন না পুরুষেরা।
ভিন্ন অভিজ্ঞতা পেতে:
যৌনতা চিরদিনই দাম্পত্যের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল, চিরকাল তা থাকবেও। অনেক পুরুষই জীবনটা এক নারীর সঙ্গেই কাটিয়ে দেন স্বাচ্ছন্দ্যে। তবে অনেক পুরুষই যৌনতার আরও ভিন্ন অভিজ্ঞতা পাওয়ার প্রয়োজন বোধ করেন। এমন পুরুষেরা অনেক নারীর সঙ্গ চান। আর এ পথে পা বাড়ালে বরাবরের জন্যই বহুগামিতা পেয়ে বসে তাঁদের। ফলে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়ানোর আগে দ্বিতীয়বার ভাবেন না তাঁরা।
মানসিক আত্মসন্তুষ্টি থেকে:
নিজের কর্মজীবন, বাচ্চা-কাচ্চা পেলে-পুষে বড় করা কিংবা হয়তো শ্বশুর-শাশুড়ির দেখভাল করা নিয়ে ব্যস্ত স্ত্রী। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কে আর কোনো আবেগ-অনুভূতি নেই। এমন সময়েও কিছু পুরুষ মানসিকভাবে অসন্তুষ্ট বোধ করেন এবং ভাবতে শুরু করেন, স্ত্রী তাঁকে যথেষ্ট আদরযত্ন করছেন না, তাঁকে বোঝার চেষ্টা করছেন না, কঠোর পরিশ্রম করে সংসার টিকিয়ে রাখার জন্য তাঁকে প্রশংসা করছে না। সংসারের বাস্তবতা ভিন্ন হলেও স্ত্রী তাঁর কাঁধে হাত রাখুক, তাঁর খোঁজখবর রাখুক, এটা তিনি চান, কিন্তু নিজে থেকে এ নিয়ে উদ্যোগী হওয়াকে সে কাপুরুষোচিত মনে করে। ফলে সব সময়ই স্ত্রীর বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকে তাঁর।
ছেলেবেলার অভিজ্ঞতা থেকে:
ছেলেবেলায় বাবা-মায়ের পরকীয়া প্রেমের সাক্ষী হয়ে থাকলে অনেক পুরুষের এমন মনে হতে পারে, যে এটা খুব অন্যায় কিছু নয়। একে অনৈতিক মনে করলেও মা-বাবার কাছ থেকে শিক্ষা নেওয়ার সহজাত প্রবৃত্তি থেকে নিজের জীবনেও এমন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়তে পারেন তাঁরা। আবার ছেলেবেলায় বড় ভাই-বোন, নিকটাত্মীয় বা প্রতিবেশীদের কারও অনৈতিক সম্পর্ক প্রত্যক্ষ করে থাকলেও এটা ঘটতে পারে।
স্ত্রী প্রতারক হয়ে থাকলে:
অনেক সময় প্রতারক স্ত্রীর ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার স্পৃহা থেকেও প্রতারক হয়ে ওঠে পুরুষ। এমনকি স্ত্রী ভুল স্বীকার করে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক থেকে ফিরে এলেও স্বামী আর তাঁকে বিশ্বাস করতে পারেন না। এ অবস্থায় একদিকে স্ত্রীর ওপর অবিশ্বাস, অন্যদিকে নতুন সম্পর্কের নতুন মোহে পড়ে বিয়ের বাইরের সম্পর্কটিও চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতে থাকেন পুরুষেরা। স্ত্রীকে ক্ষমা করতে চান না, এমন পুরুষেরাই এটা করেন।
বিবাহ-বিচ্ছেদ চান বলে:
কিছু পুরুষ প্রবৃত্তিগত ভাবেই অবিশ্বাসী ও বহুগামী। সামাজিক কোনো কারণে বিয়ে করে ফেলেছেন কিন্তু এখন বিবাহ-বিচ্ছেদ চাইছেন তিনি। এ অবস্থায় পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তা লুকিয়ে না রাখার কৌশল নেন এ পুরুষেরা। আর এটা করেন সংসার ভেঙে দেওয়ার জন্যই। এভাবে স্ত্রীকে হতাশ করে দিয়ে তাঁর ধৈর্যের সব বাঁধ ভেঙে দেওয়ার চেষ্টায় থাকেন এমন পুরুষেরা। সংখ্যায় কম হলেও এমন পুরুষ বিরল নন।
নিজেকে ফিরে পেতে:
অনেক সময় কোনো পুরুষ অনুভব করতে পারেন যে তাঁর স্ত্রীর আর তাঁকে প্রয়োজন নেই। তখন অন্য কোনো নারীকে খুঁজতে পারেন তিনি, যে তাঁকে বুঝতে চাইবে, যার কাছে গেলে নিজেকে বিশেষ আর গুরুত্বপূর্ণ মনে হবে। তেমন কোনো নতুন সম্পর্ক পেলে অবধারিত পরিণতি হিসেবে কিছুদিনের জন্য হলেও নিজেকে নতুনভাবে খুঁজে পাওয়ার আনন্দে মাতোয়ারা হয়ে থাকেন তিনি।