এবার থিঙ্কট্যাঙ্ক, গবেষকদের বিরুদ্ধে মামলা করছে ‘বেপরোয়া’ চীন
চীন সরকারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন চালানোর একাধিক প্রতিবেদন প্রকাশ হয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোতে। এই ঘটনার পর দেশটির সরকার এখন থিঙ্কট্যাঙ্ক ও গবেষকদের বিরুদ্ধে মামলা করার কথা ভাবছে। আর এই ঘটনাগুলো সামনে আনার পেছনে ব্যক্তিগুলোকে শাস্তিও দেওয়ার জন্য উদ্যোগী হচ্ছে দেশটির কমিউনিস্ট সরকার।
চীনা কমিউনিস্ট পার্টির মুখপাত্র হিসেবে পরিচিত সংবাদপত্র গ্লোবাল টাইমস এক প্রতিবেদনে জানায়, চীনের সম্পর্কে বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে দেওয়ার দায়ে জার্মান গবেষক এবং অস্ট্রেলিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পলিসি ইনস্টিটিউটের থিঙ্কট্যাঙ্ক অ্যাড্রিয়ান জেনজের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। এর আগে সাংবাদিক, অধিকারকর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়।
অ্যাড্রিয়ান জেনজের বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনে বড় একটি কারণ রয়েছে। সম্প্রতি জেনজ তার গবেষণায় প্রকাশ করেছেন, জিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের (উইঘুর) মধ্যে হঠাৎ করে জন্ম হার হ্রাস পেয়েছে। হয়তো জন্মনিরোধ কৌশল গ্রহণ করে চীন সরকার জন্ম হার কমিয়েছে। এমন প্রতিবেদন প্রকাশ করার পরই তার পেছনে লেগেছে চীন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও উইঘুরদের বিরুদ্ধে বাধ্যতামূলক পরিবার পরিকল্পনার নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জিনজিয়াংয়ের সংখ্যালঘুদের ওপর ক্রমাগত নিপীড়ন প্রমাণ করে যে চীনা কমিউনিস্ট পার্টি (সিসিপি) মানুষের জীবন এবং মৌলিক মানবাধিকারের প্রতি সম্মান রাখে না।
উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের কাহিনি বহু পুরোনো
চীনের জিনজিয়াং প্রদেশের উইঘুর মুসলিম নির্যাতনের কাহিনি বহু পুরোনো। জিনজিয়াং কাগজে কলমে স্বায়ত্তশাসিত হলেও চীন সরকারের কঠোর নিয়ন্ত্রণে পরিচালিত হয়। এই অঞ্চলের শহরগুলোর ভেতর দিয়েই গেছে সিল্ক রোড, তাই শতাব্দির পর শতাব্দি ধরে জিনজিয়াং এর অর্থনীতি কৃষি ও বাণিজ্যের ওপর নির্ভরশীল। জন্ম নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে ধর্ম পালন করায় বাধাসহ একাধিক নির্যাতনের সম্মুখীন এখানকার মানুষরা।
এদিকে, উইঘুরদের পক্ষ থেকে চীন সরকারকে এরই মধ্যে চাপে রাখা হয়েছে। মামলা দায়ের হয়েছে শি জিনপিংয়ের দলের বিরুদ্ধে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টির বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার ঘটনা এটাই প্রথম। যদিও আইসিসির বিচারব্যবস্থা চীন স্বীকার করে না।