যেভাবে বন্ধুত্বপূর্ণভাবেই চীনের সঙ্গে সীমান্ত সমস্যার সমাধান করতে পারে ভারত
গালওয়ানে ভারতীয় সেনাদের মৃত্যুর পর থেকেই অশান্ত হয়েছে ভারত-চীন সীমান্ত। তবে অশান্তির আগুন যে কেবল সীমান্তে থেমে ছিল তা নয়। ভারতের অন্দরেও তৈরি হয় পুঞ্জীভূত ক্ষোভ। চীনা পণ্য বর্জনের রব ওঠে চারিদিকে। ভারত সরকার নিজেও চীনা অ্যাপ বাতিল, যুদ্ধসামগ্রী কেনা বাতিলের মত একাধিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। যদিও পাল্টা মত প্রকাশ করা হয় যে এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ভারতের অর্থনীতি। এও বলা হয় যে, আমদানি বন্ধের মত পদক্ষেপ গ্রহণ ভারতে বাড়বে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম। কারণ বিশ্বব্যাপী সরবরাহের ক্ষেত্রে ভারত বহুলাংশে চীনের ওপর নির্ভরশীল।
যদিও ভারতের এই সিদ্ধান্তকে ইতিবাচকভাবেই গ্রহণ করেছেন আইএফএস এবং আইএএস’র অবসরপ্রাপ্ত আমলা মীরা শঙ্কর এবং অজয় শঙ্কর।
দুজনই নিজেদের ভাবনা প্রকাশ করতে গিয়ে বলেন, “এটি কিন্তু মারাত্মক দৃষ্টিভঙ্গি। যদি সরকারের এই ইচ্ছা থাকে এবং সেটিকে বাস্তবায়িত করার সংকল্প থাকে, তবে এই জাতীয় নির্ভরতা কমানোই যেতে পারে।”
তারা এও বলেন, “ভারতের যে বাজার এবং তার যে পরিধি সেখান থেকেই কিন্তু যথেষ্ট উপার্জন সম্ভব। যদি সেই উদ্দেশ্য থেকে থাকে। যা আছে সেটাকে সঠিকভাবে ব্যবহার করার ইচ্ছে থাকতে হবে। তবে এটা যে শুধু সরকারের থাকবে তা নয়। ভারতের প্রতিটি নাগরিকেরও সেটা থাকবে হবে। গ্রাহক এবং সংস্থা উভয়কেই এটা মেনে নিতে হবে প্রাথমিক কিছুটা সময় বেশি দাম দিয়ে পণ্য কিনতে হবে। তারপর সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি আবার স্বাভাবিক অবস্থানে ফিরে আসবে।”
আর চীনকেও এটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিতে হবে যদি পারস্পতিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক না রেখে সীমান্ত সমস্যার সমাধান না করা যায়, বর্তমান সমস্যার চিরকালীন সমাপ্তি না হয় সেক্ষেত্রে ব্যবসা চলতে পারে না। ভারতের বাজার তাদের জন্য নিজেদের গুটিয়ে নেবে না।
চীনের সুবিধা হল তারা যেসব পণ্য উৎপাদন করে বিশ্বব্যাপী সেগুলোর যোগ রয়েছে। কিন্তু তারা যেটা বিক্রি করছে সেটা কিন্তু অন্য যেকোনও জায়গায় উৎপাদন করা যায়। এমনকি আমরা ভারতে যেসব চিনা দ্রব্য আমদানি করি তা কিন্তু ভারতেই তৈরি করা যেতে পারে। যদি বিপুল সংখ্যায় তৈরি করা যায় এবং চাহিদা থাকে তাহলে চিনা পণ্যের থেকেও কম দামে তা পাওয়া যেতে পারে।
প্রাথমিকভাবে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া যদি এক্সচেঞ্জ রেট পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনে তবে সেক্ষেত্রে তা আমদানি শুল্কে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করবে এবং আমদানি পণ্যের ওপর চাপ বৃদ্ধি করবে। এর ফলে ভারতীয় উৎপাদনকারীরা নিজেরাই চাইবে উৎপাদন বাড়াতে। দুই আমলারই মত, “এর জন্য ভারত সরকারকে অর্থের প্রবাহকে সহজতর রাখতে হবে। প্রযুক্তিগত ক্ষেত্র, পণ্য পরীক্ষার মান উন্নয়ন এই বিষয়গুলোতে সহায়তা দিতে হবে।