বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Friday, December 27, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে টিভি তারকা থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ডোনাল্ড ট্রাম্প যেভাবে টিভি তারকা থেকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট 

173538_bangladesh_pratidin_trump-ppppiccc

প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার অনেক আগে থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ও বর্ণাঢ্য ব্যক্তিদের তালিকায় ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। বিশেষ করে তিনি পরিচিত ও আলোচিত ছিলেন একজন ধনকুবের ব্যবসায়ী ও সেলেব্রিটি হিসেবে।

রাজনীতির মাঠে পা ফেলার আগে তিনি ছিলেন বিশাল এক ব্যবসায়িক সাম্রাজ্যের মালিক। তখনও তিনি তার নানা কর্মকাণ্ড ও বক্তব্যের জন্য আলোচিত ও বিতর্কিত ছিলেন এবং প্রেসিডেন্ট হওয়ার পরেও তাকে ঘিরে নতুন নতুন আলোচনা ও বিতর্কের জন্ম হয়েছে।

অতীত ইতিহাস ও অভিবাসনবিরোধী বক্তব্যের কারণে ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী হতে পারবেন কিনা তা নিয়ে অনিশ্চয়তা ছিলো। কিন্তু অভিনব প্রচারণা চালিয়ে শেষ পর্যন্ত টেড ক্রুজ ও মারকো রুবিওকে পেছনে ফেলে ইন্ডিয়ানা প্রাইমারির পর তিনি রিপাবলিকান দলের প্রার্থী মনোনীত হন।

পরে নির্বাচনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী পেশাদার রাজনীতিবিদ হিলারি ক্লিনটনকে পরাজিত করে যুক্তরাষ্ট্রের ৪৫তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হয়ে তিনি সবাইকে তাক লাগিয়ে দেন।

নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে আগাম সব ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ, জরিপ ও পূর্বাভাসকে ভুল প্রমাণ করে ছাড়েন ৭০ বছর বয়সী এই ব্যবসায়ী।

তবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই বিজয়কে ঘিরে অনেক সমালোচনা ও বিতর্ক হয়েছে। নির্বাচনে রাশিয়ার হস্তক্ষেপেরও অভিযোগ উঠেছিল।

ওই নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে প্রায় ৩০ লাখ কম ভোট পেয়েও যুক্তরাষ্ট্রের অভিনব নির্বাচনী ব্যবস্থা ইলেকটোরাল কলেজের ভোটে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিভাজন সৃষ্টিকারী নীতি ও বক্তব্যের কারণে পরের চার বছরেও তার প্রচুর সমালোচনা হয়েছে। নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই তাকে ইমপিচমেন্টের মাধ্যমে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দেওয়ারও কথা উঠেছিল। এমনকি অনেক বিশ্লেষক বলেছিলেন যে তিনি এক বছরের বেশি প্রেসিডেন্ট থাকতে পারবেন কিনা তা নিয়ে সংশয় আছে।

কিন্তু সবাইকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চার বছরের পুরো মেয়াদ পার করে ২০২০ সালের নির্বাচনের জন্য রিপাবলিকান দল থেকে আবারও তিনি প্রার্থী হয়েছেন।

শুরুর জীবন

নিউ ইয়র্কে বিত্তশালী রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ফ্রেড ট্রাম্পের পাঁচ সন্তানের মধ্যে চতুর্থ ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি অর্ধেক স্কটিশ। কারণ তার মা মেরি ম্যাকলয়েডের জন্ম স্কটল্যান্ডে।

১৯৩০ সালে আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে মেরি ম্যাকলয়েড চলে যান যুক্তরাষ্ট্রে। সেখানে প্রথমে পরিচয় ও পরে পরিণয় হয় একজন উচ্চাকাঙ্ক্ষী বিল্ডার ও রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ী ফ্রেড ট্রাম্পের সঙ্গে।

অত্যন্ত পরিশ্রমী এই দম্পতির ঘরে ডোনাল্ড ট্রাম্পের জন্ম নিউ ইয়র্ক শহরে, ১৯৪৬ সালে। পরিবারের অঢেল সম্পত্তি সত্ত্বেও তার পিতা চেয়েছিলেন তার সন্তানরাও তাদেরই কোম্পানিতে অন্যান্য কর্মচারীদের সঙ্গে কাজ করবেন।

স্কুলে দুষ্টুমি করতে শুরু করলে ১৩ বছর বয়সে ডোনাল্ড ট্রাম্পকে পাঠিয়ে দেওয়া হয় সামরিক একাডেমিতে।

পেনসালভানিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি নিয়ে লেখাপড়া করেছেন মি. ট্রাম্প।

পাঁচ ভাই বোনের মধ্যে বড় ভাই ফ্রেড জুনিয়র পাইলট হতে চাওয়ায় বাবার ব্যবসার হাল ধরেন তিনি।

পরে ফ্রেড ট্রাম্প ৪৩ বছর বয়সে অ্যালকোহল আসক্তির কারণে মারা যান। ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তার ভাই-এর মৃত্যুর কারণে সারা জীবন তিনি অ্যালকোহল ও সিগারেট থেকে দূরে ছিলেন।

মি. ট্রাম্প বলেছেন, পিতার কাছ থেকে দশ লাখ ডলার ঋণ নিয়ে তিনি রিয়েল এস্টেট ব্যবসা শুরু করেছিলেন। পরে তিনি তার বাবার কোম্পানিতে যোগ দিয়ে ব্যবসার বিপুল সম্প্রসারণ ঘটান।

ডোনাল্ড ট্রাম্প- যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে প্রথম প্রেসিডেন্ট রাজনীতিতে যার অভিজ্ঞতা ছিল না।

১৯৭১ সালে এই কোম্পানির নাম বদল করে তিনি নতুন নামকরণ করেন – ট্রাম্প অর্গানাইজেশন।

তার বাবা ১৯৯৯ সালে মৃত্যুবরণ করেন। সেসময় তিনি বলেছিলেন, “আমার পিতাই ছিলেন আমার অনুপ্রেরণা।”

ব্যবসা সম্রাট

দায়িত্ব গ্রহণের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প তাদের পারিবারিক ব্যবসায় বড় ধরনের পরিবর্তন আনেন। ব্রুকলিন ও কুইন্সে আবাসিক বাড়িঘর নির্মাণ থেকে তিনি সরে আসেন নিউ ইয়র্কের কেন্দ্রে ম্যানহাটনের মতো পশ এলাকায় রিয়েল এস্টেটের ব্যবসায়।

ভগ্নপ্রায় কমোডোর হোটেলকে তিনি পরিণত করেন বিলাসবহুল গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে এবং ফিফথ এভিনিউতে নির্মাণ করেন ট্রাম্প প্রপার্টির বিখ্যাত ভবন ৬৮ তলার ঝকঝকে উজ্জ্বল ট্রাম্প টাওয়ার।

তার কোম্পানির নির্মিত অন্যান্য সুপরিচিত ভবনের মধ্যে রয়েছে ট্রাম্প প্যালেস, ট্রাম্প ওয়ার্ল্ড টাওয়ার, ট্রাম্প ইন্টারন্যাশনাল হোটেলসহ আরো কিছু ভবন। মুম্বাই, ইস্তাম্বুল ও ফিলিপিনেও আছে ট্রাম্প টাওয়ার।

ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কিছু হোটেল ও ক্যাসিনোও তৈরি করেছেন। তার ওই ব্যবসা অবশ্য পরে দেউলিয়া ঘোষণা করা হয়।

বিনোদন জগতের ব্যবসাতেও তিনি এক সাম্রাজ্য গড়ে তোলেন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত মিস ইউনিভার্স, মিস ইউ এস এ এবং মিস টিন ইউ এস এ সুন্দরী প্রতিযোগিতা আয়োজনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিক ছিলেন তিনি।

২০০৩ সালে তিনি এনবিসি টেলিভিশনে দ্য অ্যাপ্রেনটিস নামের একটি রিয়েলিটি শো চালু করেন। ওই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারীরা ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রতিষ্ঠানে চাকরি পাওয়ার জন্য প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হতেন। এই শো দর্শকদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল।

এই শো এর বেশ কিছু অনুষ্ঠানের উপস্থাপক ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। শো ম্যান থেকে শোবিজেও সফল হয়েছেন তিনি। পরে তিনি ঘোষণা করেন যে এই অনুষ্ঠান করে তিনি টেলিভিশন নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ (২১৩ মিলিয়ন ডলার) পেয়েছিলেন।

রেসলিং ম্যাচও উপস্থাপনা করেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

অর্থ-বিত্তের পাশাপাশি এসব অনুষ্ঠান থেকে তিনি প্রচুর নামযশও অর্জন করেছেন।

ডোনাল্ড ট্রাম্প কয়েকটি বই লিখেছেন। এমন কিছু ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেরও মালিক হয়েছেন যারা নেকটাই থেকে শুরু করে বোতল-জাত পানি বিক্রি করে।

কী নেই তার নামে- ট্রাম্প মর্টগেজ, ট্রাম্প শাটল, অনলাইন ট্রাভেল ওয়েবসাইট- গো ট্রাম্প, ট্রাম্প রেস্তোরা, ডোনাল্ড ট্রাম্প ডলস ইত্যাদি ইত্যাদি!

ফোর্বস ম্যাগাজিনের হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের অর্থ বিত্তের পরিমাণ ৩৭০ কোটি ডলার। যদিও মি. ট্রাম্পের হিসেবে এর পরিমাণ এক হাজার কোটি ডলার।

তবে এর মধ্যে নিজেকে তিনি কয়েকবার অর্থনৈতিকভাবে দেউলিয়া ঘোষণা করেছেন।

একবার ১৯৮০-এর দশকের একটি ঘটনার কথা উল্লেখ করে মি. ট্রাম্প বলেছিলেন, “আমি ফিফথ এভিনিউ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলাম। টিফানির (কন্যা) সামনে ছিল এক ব্যক্তি। তার হাতে ছিল একটি ক্যান। আমি তখন তাকে বললাম তুমি কি জানো যে এই লোকটি আমার চেয়েও বিত্তশালী। আমার দিকে তাকিয়ে সে বললো তুমি কী বলছো? আমি বললাম রাস্তার ওপাশে যে লোকটি তার এখন আমার চেয়েও ৯০০ মিলিয়ন ডলার বেশি অর্থ আছে।”

তবে তার এই সম্পদের পরিমাণ তার মেজাজ-মর্জির মতোই উঠা-নামা করেছে।

স্বামী ও পিতা ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প তিনবার বিয়ে করেছেন। স্ত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পরিচিত ছিলেন তার প্রথম স্ত্রী – ইভানা জেলনিকোভা। তিনি ছিলেন চেক প্রজাতন্ত্রের একজন অ্যাথলিট, ফ্যাশন ডিজাইনার ও মডেল।

এই দম্পতির তিন সন্তান- ডোনাল্ড জুনিয়র, ইভাঙ্কা এবং এরিক। পরে ১৯৯০ সালে তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ ঘটে যে যুদ্ধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছিল।

তাদের এই সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া নিয়ে তখনকার ট্যাবলয়েড পত্রিকাগুলোতে প্রচুর মুখরোচক গল্প প্রকাশিত হয়। এসব খবরে বলা হয় যে মি. ট্রাম্প তার স্ত্রীর ওপর নির্যাতন চালাতেন। যদিও তার সাবেক স্ত্রী ইভানা পরে এসব ঘটনাকে তুচ্ছ করে দেখিয়েছেন।

পরে ১৯৯৩ সালে তিনি অভিনেত্রী মারলা মেপেলসকে বিয়ে করেন। তাদের এক কন্যা- টিফানি। এর ছ’বছর পর ১৯৯৯ সালে তাদের বিয়ে ভেঙে যায়।

এর পরে ২০০৫ সালে তিনি তার বর্তমান স্ত্রী মেলানিয়া ক্নাউসকে বিয়ে করেন। তিনিও একজন মডেল। এই দম্পতির ঘরে এক ছেলে- ব্যারন উইলিয়াম ট্রাম্প।

তার প্রথম ঘরের সন্তানেরা এখন ট্রাম্প অর্গানাইজেশন পরিচালনা করেন।

অনেকেই ডোনাল্ড ট্রাম্পের মেজাজ-মর্জির কথা উল্লেখ করে তিনি প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্পের জীবনী লিখেছেন এরকম একজন টিম ও ব্রায়ান বলেছেন, মি. ট্রাম্প আট দশজনের মতোই একজন সাধারণ মানুষ।

“তিনি জাঙ্ক ফুড খেতে পছন্দ করেন, শুক্রবার রাতে টিভির সামনে বসে স্পোর্টস দেখেন। অনেক দিক থেকেই তার আচার আচরণ একজন কিশোরের মতো। কিশোর বয়সে তো অনেকেই অনেক সময় নিজের ওপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে।”

রাজনীতিতে অভিষেক

ডোনাল্ড ট্রাম্প ১৯৮৭ সালে একবার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য নির্বাচনে লড়াই করার আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। ২০০০ সালে রিফর্ম পার্টির প্রার্থী হিসেবে তিনি এই প্রতিযোগিতায় অংশও নিয়েছিলেন।

প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে কিনা – এই প্রশ্নে ২০০৮ সালে যখন আন্দোলন শুরু হয় তখন তিনি তার অত্যন্ত সরব একজন সদস্য ছিলেন।

এই প্রশ্ন ও বিতর্ক ছিল অবান্তর। কেননা মি. ওবামার জন্ম হাওয়াই রাজ্যে।

এই বিতর্কে সক্রিয়ভাবে অংশ নেওয়ার জন্য ডোনাল্ড ট্রাম্প পরে কোন ধরনের ক্ষমা না চাইলেও বলেছিলেন বারাক ওবামার জন্ম নিয়ে যেসব প্রশ্ন তোলা হয়েছিল সেসবের কোন ভিত্তি নেই।

২০১৫ সালে এসে ডোনাল্ড ট্রাম্প আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেন যে তিনি হোয়াইট হাউজে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় নামতে চান।

“এই দেশটিকে আবার মহান করে তুলতে পারেন আমাদের এমন এক ব্যক্তির প্রয়োজন। আমরা সেটা করতে পারি,” নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণায় এই মন্তব্য করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

‘মেক আমেরিকা গ্রেট’ এগেইন অর্থাৎ যুক্তরাষ্ট্রকে আবার একটি শ্রেষ্ঠ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে – এই স্লোগান নিয়ে নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে পড়েন ট্রাম্প।

বিতর্কিত এই নির্বাচনী প্রচারণার সময় তিনি যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতিকে শক্তিশালী করে তোলা, মেক্সিকো সীমান্তে দেয়াল নির্মাণ এবং মুসলিমদের যুক্তরাষ্ট্রে অভিবাসী হওয়ার বিরুদ্ধে অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা আরোপের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

ট্রাম্পের নির্বাচনী প্রচারণাকে ঘিরেও প্রচুর বিতর্ক হয়েছে। সেসময় এমন কিছু অডিও ফাঁস হয়েছে যেখানে মি. ট্রাম্পকে নারীদের সম্পর্কে অশোভন মন্তব্য করতে শোনা গেছে। এসময় তার দলেরও অনেকে মন্তব্য করেছেন যে মি. ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন।

শুধু তাই নয়, জনমত জরিপেও তিনি তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিনটনের চেয়ে পিছিয়ে ছিলেন। কিন্তু মি. ট্রাম্প সবসময় তার সমর্থকদের বলেছেন, এসব জরিপ যে ঠিক নয় সেটা তিনি প্রমাণ করে দেখাবেন। এবং শেষে তা-ই হয়েছে।

নির্বাচনের পরে ২০১৭ সালের ২০শে জানুয়ারি তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তিনিই প্রথম প্রেসিডেন্ট রাজনীতিতে যার কোন অভিজ্ঞতা ছিলো না।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে চার বছর

দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তাকে নানা সমস্যায় পড়তে হয়েছে। এই লড়াই ছিল রাজনীতির মাঠ থেকে আদালত পর্যন্ত।

নানা বক্তব্যের জন্যেও তিনি সমালোচিত হয়েছেন। যেমন মেক্সিকোর সাথে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে প্রাচীর নির্মাণের কথা বলতে গিয়ে একবার তিনি বলেছিলেন মেক্সিকো থেকে ধর্ষণকারীরা যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসছে।

বেশ কয়েকজন নারী তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তুলেছেন।

অনেকে তাকে একজন ভাঁড়, কমেডিয়ান হিসেবেও উল্লেখ করেন, কেউ কেউ তাকে বলেন মিথ্যাবাদী। আবার যেভাবে তিনি সহজ সরল ভঙ্গিতে সোজা সাপ্টা উচ্চারণ করেন সেটা অনেককে আকৃষ্টও করে।

প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত থেকে শুরু করে তার শারীরিক অঙ্গভঙ্গি নিয়েও কথাবার্তা হয়। এমনকি কথা হয় তার চুলের রঙ ও স্টাইল নিয়েও। অনেকেই এই চুল আসল নাকি নকল এনিয়েও প্রশ্ন করেন।

রিয়েল এস্টেট, ব্যবসা, রিয়েলিটি টিভি শো, উপস্থাপনা এবং রাজনীতি – সবকিছুতেই সফল ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার সমর্থকরা তাকে ডাকেন- ‘দ্য ডোনাল্ড।’

এতো কিছুতে সফল হওয়ার পরেও তিনি কেন প্রেসিডেন্ট হতে চান? তার নামের পরিধি আরো বাড়ানোর জন্য?

প্রথমবার প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, “আমাদের দেশের একজন বড় নেতার প্রয়োজন। আর সেজন্যই আমি প্রার্থী হওয়ার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করছি।”

এই ডোনাল্ড ট্রাম্পই অ্যাপ্রেন্টিস রাজনীতিবিদ থেকে হয়ে উঠেছেন একজন শীর্ষ রাজনীতিবিদ, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ব্যক্তি- আমেরিকার প্রেসিডেন্ট!

এখন হোয়াইট হাউজের টপ জবের জন্য ভোটাররা তাকে আরো চার বছরের মেয়াদে আবার হায়ার করবেন, নাকি গত চার বছরের পারফরমেন্স দেখে এবারই তাকে ফায়ার করে দেবেন- সেটা জানা যাবে তেসরা নভেম্বর

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone