ইউএনও’র উপর হামলার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ আরও ২ জন আটক
দিনাজপুর. ৪ সেপ্টেম্বর. ২০২০ : দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী অফিসার ওয়াহিদা খানমের ওপর হামলার ঘটনায় মূল পরিকল্পনাকারীসহ আরও ২ জনকে আটক করেছে র্যাব। শুক্রবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান র্যাব-১৩ এর অধিনায়ক রেজা আহমেদ ফেরদৌস।
তিনি জানান, এ নিয়ে ইউএনও’র উপর হামলার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফরকৃতরা হলো- আসাদুল, সান্টু ও নবীরুল।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মোট ছয় জনকে আটক করা হয়। এদের মধ্যে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গাীরসহ ৩ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।
রেজা আহমেদ ফেরদৌস বলেন, ‘জবানবন্দিতে আসাদুল জানান ইউএনও হামলার মূল পরিকল্পনাকারী হলেন নবীরুল। সে আরও জানায়, ইউএনও’র বাসায় চুরির উদ্দেশ্যে প্রবেশ করে তারা। আরও তদন্ত করে ঘটনার মোটিভ সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যাবে বলে জানান তিনি।
তিনি জানান আজ ভোরে আসাদুল হক (৩৫) কে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী বিকেলে ঘোড়াঘাট এলাকা থেকে সান্টু ও নবীরুলকে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ঘোড়াঘাট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো, মমিনুল ইসলাম জানান, এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে গতকাল ও আজ ভোরে ৪ জনকে আটক করা হয়েছে।
পরে বিকেলে আরও ২ জনকে আটক করে র্যাব।
তিনি জানান, বৃহস্পতিবার দুপুরে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের নৈশ্য প্রহরী পলাশ আহম্মেদকে আটক করা হয়। তার দেয়া তথ্যানুযায়ী শুক্রবার ভোরে অপর ৩ জনকে আটক করা হয়।
আটকরা হলেন, ঘোড়াঘাট উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক জাহাঙ্গীর আলম (৩৫)। শিংড়া ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মাসুদ আলম (৩৪) ও আসাদুল হক (৩৫)।
আটককৃতদের পুলিশ, র্যাব সদস্য ও গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে যুবলীগ নেতা জাহাঙ্গীরসহ ৩ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
ঘোড়াঘাট থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. আমিরুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় আজ শুক্রবার সকালে আহত ইউএনও’র বড় ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন বাদি হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন।
উল্লেখ্য গত বুধবার দিবাগত মধ্যরাতে ঘোড়াঘাট উপজেলা পরিষদের নৈশ্য প্রহরীকে বেধে রেখে সন্ত্রাসীরা পিপিই পরিধান অবস্থায় বাসায় প্রবেশ করে নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানমকে হাতুড়ি দিয়ে মাথায় ও শরীরে বেধম আঘাত করে। বাসায় থাকা নির্বাহী কর্মকর্তার পিতা শেখ ওমর আলী তাকে বাচাতে এগিয়ে আসলে তাকেও সন্ত্রাসীরা বেদম প্রহার করে। ঘটনার পর সন্ত্রাসীরা পালিয়ে যায়। পরে ঘটনাস্থল থেকে গুরুতর আহত অবস্থায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াহিদা খানম, তার পিতা শেখ ওমর আলীকে উদ্ধাার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বৃহস্পতিবার জনপ্রশাসন মন্ত্রানলয়ের ব্যবস্থাপনায় ওয়াহিদা খানমকে বিমান বাহিনীর এয়ার এ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
তাকে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
আজ শুক্রবার সকালে ঢাকার আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস অ্যান্ড হসপিটালে ওয়াহিদা খানমের অস্ত্রোপচারে অংশ নেওয়া চিকিৎসক জাহেদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন,গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তার মাথার অস্ত্রপাচার করা হয়েছে। তিনি এখন অনেকটা আশঙ্কা মুক্ত রয়েছেন। অস্ত্রোপাচারের পর ওয়াহিদা খানমের জ্ঞান ফিরেছে। তিনি কথাও বলেছেন।