ইয়াবার ট্রানজিট পয়েন্ট রোহিঙ্গা ক্যাম্প
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অভিযানের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্পে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে ইয়াবার মাফিয়া চক্র। শরণার্থী ক্যাম্প ঘিরে সক্রিয় রয়েছে বেশ কয়েকটি চক্র। তারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে ইয়াবার মজুদ, ইয়াবার বডি ফিটিং এবং ইয়াবার ডনদের নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে পরিণত করেছে।
সম্প্রতি ইয়াবাসহ গ্রেফতার হওয়া রোহিঙ্গাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এমন তথ্য পেয়েছে। চট্টগ্রাম মেট্রো মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. রাশেদুজ্জামান বলেন, ‘ইয়াবাসহ গ্রেফতার হওয়া রোহিঙ্গা নাগরিকদের উল্লেখযোগ্য সংখকই ক্যাম্পের মাঝি ও ক্যাম্পের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে ইয়াবা পরিবহনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হয়েছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে। বেশির ভাগ ক্যারিয়ার জানেই না চালানের ক্রেতা-বিক্রেতার নাম। তারা শুধু জানে, কোন এলাকায় ইয়াবা পৌঁছে দিতে হবে।’
কক্সবাজার জেলা পুলিশের একাধিক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রশাসন চাইলেই অভিযান চালাতে পারে না। ফলে এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে ইয়াবা মাফিয়ারা রোহিঙ্গা ক্যাম্পকে চারণভূমিতে পরিণত করেছে। গত এক বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পভিত্তিক বেশ কয়েকটি শক্তিশালী ইয়াবা চোরাচালান চক্র গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ইয়াবা ব্যবসার ৯৫ ভাগ নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে রোহিঙ্গারা। এছাড়া ইয়াবা বহন এবং খুচরা ইয়াবা ব্যবসার সঙ্গেও জড়িয়ে পড়েছে তারা। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোতে ইয়াবা মজুদ ছাড়াও ইয়াবার বডি ফিটিংও করা হয়।
চট্টগ্রাম রেঞ্জে সদ্য যোগদান করা ডিআইজি আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘ইয়াবা নিয়ে চট্টগ্রাম রেঞ্জ পুলিশের অবস্থান হবে জিরো ট্রলারেন্স। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হবে।’
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প ঘিরে সক্রিয় হয়ে উঠেছে বেশ কয়েকটি মাফিরা চক্র। তারা ক্যাম্পের মাঝি ও প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে চুক্তি করে সাধারণ রোহিঙ্গাদের ইয়াবার ক্যারিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। এ ছাড়া মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে রোহিঙ্গাদের যোগসূত্র করিয়ে দিচ্ছে পুরনো রোহিঙ্গারা।