ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে ১ বছরে ৬৮৩ জনকে হত্যা
২৩ সেপ্টেম্বর দক্ষিণ লন্ডনের ক্রয়ডনে সার্জেন্ট ম্যাট রাতানাকে পুলিশ স্টেশনের ভিতরেই এক সন্ত্রাসী গুলি করে হত্যা করে। এই ঘটনার পরপরই ওই থানায় পূর্ব কর্মরত পুলিশ কর্মকর্তা ক্যাথেরিন টাকার বলেন, ওই পুলিশের সঙ্গে যা ঘটেছে তা সত্যিই অগ্রহণযোগ্য, কিন্তু ওই অপরাধীর জন্যই আমার কষ্ট হচ্ছে।
তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে, ক্রয়ডনে এই গুলির ঘটনায় আমি অবাক হইনি। সেখানে পুলিশ ও তরুণদের মধ্যে উত্তেজনা আছে। বিশেষ করে তাদের থামানো ও তল্লাশি নিয়ে এবং যেভাবে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সঙ্গে পুলিশ সম্পর্কযুক্ত তা নিয়ে উত্তেজনা রয়েছে।
তবে হামলা করে পুলিশ হত্যার বিষয়টি এই প্রথম নয়, ২০১২ সালেও লন্ডন এবং ম্যানচেস্টারে ৩ জন পুলিশকে হত্যা করা হয় গুলি করে।
ক্রয়ডনে পুলিশ হত্যার ঘটনার ঠিক ১০ দিন আগে নর্থ লন্ডনের এনফিল্ডে নাহিদ আহমেদ নামে একজন বাংলাদেশী তরুণকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হয়, বাসার সামনেই পার্কিংয়ে।
তারও এক সপ্তাহ আগে ৬ সেপ্টেমর রাতে এক ব্যক্তি বার্মিংহামে উম্মত্ত হয়ে লোকজনের উপর ছুরি দিয়ে হামলে পড়ে, এতে ৭ জন আহত হোন এবং ১ জন নিহত হোন।
মিডল্যান্ডস পুলিশের দেয়া তথ্য অনুযায়ী, শুধু তাদের এলাকায়ই গত জানুয়ারি থেকে আস্টি পর্যন্ত ১৮৫০টির বেশী ছুরি নিয়ে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। যা মাসে ২৩১টিরও বেশী, আর প্রতিদিন গড় হিসাবে প্রায় ৮টির মতো ঘটনা ঘটেছে ছুরি নিয়ে।
জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুারোর তথ্য অনুযায়ী ২০১৯ মার্চ থেকে ২০২০ মার্চ পর্যন্ত শুধু আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ইংল্যান্ড এন্ড ওয়েলসে ৬২০০ অপরাধ সংগঠিত হয়েছে। একই সময়ে ছুড়ি দিয়ে অপরাধ সংগঠিত হয়েছে ৪৬২৬৫টি। এরমধ্যে ৪৩৯৯টি ঘটনা মানুষের জীবনের আশংকা তৈরি করেছিলো, ২০১৫৯টি ডাকাতির ঘটনায় ছুরি ব্যবহার করা হয়েছে। একই সময় এই অপরাধগুলোর কারণে ৬৮৩ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। যা বিগত বছরের চেয়ে ১০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।
২৬ সেপ্টেম্বর মেট পুলিশের ডেপুটি এসিস্ট্যান্ট কমিশনার স্টুয়ার্ট কান্ডি সার্জেন্ট ম্যাট রাতানার হত্যার বিবৃতি গিয়ে বলেন, এই হত্যাকে হত্যা হিসাবেই তদন্ত করা হচ্ছে, এটি কোন সন্ত্রাসী গোষ্টীর পরিকল্পিত হামলা হিসাবে বিবেচিত করা হচ্ছে না। আমরা বদ্ধ পরিকর রাস্তা থেকে সকল অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার ও ধ্বংস করতে।
জাতীয় পরিসংখ্যান ব্যুারোর মুখপাত্র সোফি স্যান্ডার বলেন, ২০১৯ এর তুলনায় যদি সামগ্রিক অপরাধের সংখ্যা ২০২০ মার্চে এসে কমেছে, তবে এটা নিশ্চিতভাবে বলা যায় অপরাধের ধরন কোনভাবেই পরিবর্তন হয়নি। তবে মার্চ মাস পর্যন্ত যে পরিসংখ্যান দেয়া হয়েছে সেটি এপ্রিল থেকে আরো খারাপরে দিকে গেছে যা সাম্প্রতিক সময়ে ঘটা অপরাধের দিকে নজর দিলেই বুঝা যায়। এছাড়া মেট পুলিশের ওয়েবসাইটে প্রতিদিনই নতুন নতুন অপরাধের খবর আসছে, সেই সাথে অপরাধীদের ধরার জন্য প্রতিনিয়ত সাধাণে মানুষের সহায়তা কামনা করা হচ্ছে।