বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Sunday, December 22, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » প্রযুক্তি » যুক্ত হচ্ছে নভোথিয়েটারে আরো দুটি প্রযুক্তি

যুক্ত হচ্ছে নভোথিয়েটারে আরো দুটি প্রযুক্তি 

navoter ai

প্রযুক্তি ডেস্ক : কুসংস্কারের ঘনঘটা থেকে একদিন এই সমাজকে মুক্ত করবে তরুণরা- এমন স্বপ্ন চোখে নিয়েই রাজধানীর বিজয় সরণীতে ২০০৪ সালে ২১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নভোথিয়েটার। তবে কর্তৃপক্ষের নানা অব্যবস্থাপনার জন্য খুব একটা দর্শনার্থী টানতে পারছে না দেশের সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সমন্নয়ে তৈরি এ থিয়েটার। ফলে পরিচিতির দিক থেকে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছে এই শিক্ষা-বিনোদন কেন্দ্রটি। তাই নতুন করে দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করতে নভোথিয়েটারে যুক্ত হতে যাচ্ছে নতুন দু’টি ডিজিটাল প্রযুক্তি, যার মাধ্যমে এক সঙ্গে ৪০ জন দর্শনার্থী দেখতে পাবেন মহাকাশের নানা চিত্র।

নভোথিয়েটারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা (সাধারণ) নাইমা ইয়াসমিনের সঙ্গে কথা বলে জানা যায় এসব তথ্য। তিনি বলেন, ‘এটাতো ব্যবসায়িক কোনো প্রতিষ্ঠান নয়। এটা মূল শিক্ষনীয় প্রতিষ্ঠান। তাই উপস্থিতি বা লাভ-লোকসান মুখ্য নয়। মুখ্য বিষয় সবাইকে বিজ্ঞান সম্পর্কে সঠিক ধারণা দেয়া। আর সে কারণেই এখানে সংযোজন করা হচ্ছে নতুন দু’টি ডিজিটাল প্রযুক্তি, যার মধ্যে রয়েছে ৩১ সিটের এইচডি সিসটেম ও ৪০ সিটের ৫ডি সিসটেম।’

নাইমা ইয়াসমিন আরো জানান, সপ্তাহের বুধবার ছাড়া প্রতিদিনই এখানে চলে চারটি শো। ৩৭ মিনিট ৩৮ সেকেন্ডের প্লাটিনাম শো’তে দেখানো হয় সৌরজগতের নানা অজানা চিত্র। আর অন্য আরেকটি শো’তে দেখানো হয় বাংলাদেশের প্রকৃতি, কৃষ্টি ও কালচার। শোগুলো শুরু হয় বেলা ১১টায়। চলে দুপুর ১টা, বিকেল ৩টা ও বিকেল ৫টা পর্যন্ত। তবে শুক্রবার সকাল ১০টা, বিকেল ৩টা ও ৫টা, সন্ধ্যা ৭টায় চলে শোগুলো। টিকিট বিক্রি হয় শো শুরুর এক ঘণ্টা আগে।

আলী ইমামের নকশায় তৈরি করা নভোথিয়েটারের ভেতরে ঢুকতেই দেখা যায় অন্যরকম এক পরিবেশ। চারদিকে বিজ্ঞান গবেষণার নানা সামগ্রী। যা দেখতে প্রতিনিয়তই নানা পেশার মানুষ ভিড় করেন এখানে। ৫০ টাকার টিকিট কেটে যে কেউ দেখতে পারেন সৌরজগতের নানা অজানা তথ্য। সেই সঙ্গে রয়েছে একটি রাইড, যার টিকিট মূল্য ২০ টাকা।

ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে পরমাণু শক্তি তথ্যকেন্দ্র। সেখানে যে কেউ গিয়ে উপভোগ করতে পারবেন পরমাণুর ওপর নির্মিত বিভিন্ন ভিডিও চিত্র। এর জন্য আলাদা করে কোনো টিকিটের প্রয়োজন নেই।

পরমানু শক্তি তথ্যকেন্দ্রের কর্মকর্তা আব্দুল মমিন জানান, বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এখানে এসেছেন ৫৮ জন দর্শনার্থী। এর মধ্যে ১৫ জন ছাত্র। এর আগে মঙ্গলবার সারাদিনে দর্শনার্থী এসেছিলেন ১২৩ জন, যার মধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ছিলো ৯১ জন। তবে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা করা হলে অনেক বেশি দর্শনার্থী আসবে বলে জানান উপস্থিত দর্শনার্থীরা।

নাইম ফেরদৌস নামে এক দর্শনার্থী অভিযোগ করে বলেন, ‘ অবৈধভাবে বসা দোকানিদের কারণেই শতকোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত নভোথিয়েটারের প্রবেশ পথে সৃষ্টি হয়েছে আবর্জনার স্তুপ। এর ভেতরের দিকটা যতটা পরিষ্কার ও পরিপাটি বাইরের দিকটা পুরোপুরিই তার উল্টো। চিপ্সের ও সিগারেটের প্যাকেট, বাদামের খোসা আর পানির বোতলে ময়লার স্তুপ সৃষ্টি হয়েছে টিকিট কাউন্টারের সামনে।’

মিরপুর থেকে ৮ম শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলে ফারুককে বিজ্ঞান সম্পর্কে সঠিক ধারণা দিতে নিয়ে এসেছেন মা রাবেয়া। তিনি বলেন, ‘এখানকার পরিবেশটা যদি আরেকটু ভালো করা যেত তাহলে আর কেউ বিনোদনের জন্য শিশুপার্ক বা অন্যা কোথাও যেতে চাইতো না।’

তাই তিনি নভোথিয়েটারের পরিবেশ রক্ষায় সরকারের উদ্যোগ কামনা করেন।

নভোথিয়েটারের সামনে বসা দোকানিদের কাছে সাংবাদিক পরিচয় গোপন করে কথা বললে এক দোকানি জানান, নভোথিয়েটারে কর্মরত কয়েকজন ব্যক্তি গড়ে তুলেছেন বিশেষ সিন্ডিকেট। তাদের নির্দেশেই বসানো হয় ভ্রাম্যমাণ ওইসব দোকান। আর প্রধানমন্ত্রীর চোখ ফাঁকি দিতে বিশেষভাবে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় ওই দোকানিদের। তবে দীর্ঘক্ষণ কথা হলেও জানা যায়নি সিন্ডিকেট সদস্যদের নাম বা পরিচয়।

এব্যাপারে কথা হলে নভোথিয়েটারের কাউন্টার মাস্টার বলেন, ‘এই যন্ত্রণায় আমরাও দীর্ঘদিন ভুগছি। সব দেখেও সিটি কর্পোরেশন কোনো ব্যবস্থা নেয় না।’

পরে নভোথিয়েটারের ভেতরে গিয়ে দেখা যায় মাছের অ্যাকুরিয়ামটিতে আর নেই কোনো মাছ। রয়েছে কিছু ময়লা আবর্জনা। কারণ জানতে চাইলে কর্তব্যরত আনসার সদস্য জানান, এটি পরিষ্কার করার জন্যই নাকি এ ব্যবস্থা

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone