বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Friday, January 10, 2025
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » জাতীয় » প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হল ৫ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা

প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে শেষ হল ৫ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা 

225140_bangladesh_pratidin_203257_bangladesh_pratidin_kirtonkhola

বিজয়া দশমীতে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে আজ শেষ হয়েছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পাঁচ দিনব্যাপী দুর্গাপূজা। আজ রবিবার দুপুর থেকে প্রতিমা বিসর্জন শুরু হয়। বেলা দেড়টার দিকে বুড়িগঙ্গার ওয়াইজঘাটের বীণাস্মৃতি স্নানঘাটে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে রাজধানীতে দেবীকে বিদায় জানানোর আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। এরপর একের পর এক বিভিন্ন মন্ডপ থেকে ঘাটে প্রতিমা আসতে থাকে বিসর্জনের জন্য।

এর আগে আজ সকাল নটা সাতান্ন মিনিটের মধ্যে দশমী পূজার মূল আনুষ্ঠানিকতা বা দর্পণ বিসর্জন হয়। অন্যদিকে সকাল ৬টা ৪৫ মিনিট পর শ্রী শ্রী দেবীর দশমীবিহিত পূজারম্ভ প্রতিমা-নিরঞ্জন ও শান্তির জল প্রদান করা হয়। দর্পণ বিসর্জনের পর দেবী দুর্গা ও অন্যান্য দেবদেবীর বিসর্জন দেয়া হয়। এর মধ্য দিয়ে দেবী মর্ত্য ছেড়ে স্বর্গে ফিরেন।

দুপুর বারোটা থেকে ঢাকায় প্রস্তুত থাকে বিসর্জনের ঘাটগুলো। রাজধানীর বেশিরভাগ বিসর্জন হয় বুড়িগঙ্গার সোয়ারীঘাটে। টঙ্গীর তুরাগ নদীতেও বিসর্জন হয়। সন্ধ্যা ছটার মধ্যে সবাই কে বিসর্জন শেষ করার নির্দেশনা দেয় মহানগর পূজা উদযাপন কমিটি।

বিসর্জনের সময় যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় পুলিশের পাশাপাশি বিসর্জন ঘাটে কোস্টগার্ড, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রস্তুত ছিল। এবছর পূজায় কোন ধরনের শোভাযাত্রা হয়নি। একটি মন্ডপের প্রতিমা বিসর্জনে যে কজন প্রয়োজন (১০ জন) শুধু তাদেরই প্রতিমার সঙ্গে ঘাটে আসতে বলা হয়। প্রতিমা ঘাটে নেয়ার পর ভক্তরা শেষবারের মতো ধূপধুনো নিয়ে আরতি করেন। শেষে পুরোহিতের মন্ত্রপাঠের মধ্য দিয়ে দেবীকে নৌকায় তুলে বিসর্জন দেয়া হয়।

শ্রী সমীরেশ্বর ব্রহ্মচারীর কথায়, বিজয়া দশমীর দিন সংক্ষিপ্ত পূজার পর দর্পণ বিসর্জন হয়। কোন কোন জায়গায় দেবীর অপরাজিতা পূজাও হয়। এই দিনেই রাবণ বধের জন্য দশেরা উৎসবও পালিত হয়। এই দিনটিতে অসুর নিধনের পর অসুরের রক্ত দিয়ে দেবতারা বিজয় উৎসব পালন করে ছিলেন।

পুরাণ মতে, মহিষাসুরের সঙ্গে ৯ দিন ৯ রাত যুদ্ধের পর দশম দিনে জয়ী হন দেবী দুর্গা। এজন্যই বিজয়া। সেই লোকাচার বাংলার ঘরে ঘরে সিঁদুর খেলা হিসেবে পরিণত হয়েছে। সিঁদুর খেলার পাশাপাশি চলে কোলাকুলিও। তবে করোনা মহামারির কারণে এবার কোলাকুলি হয়নি।

চন্ডীপাঠ, বোধন এবং দেবীর অধিবাসের মধ্য দিয়ে ২২অক্টোবর বৃহস্পতিবার থেকে স্বাস্থ্য বিধি মেনে শুরু হয় বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এবার দেবী এসেছেন দোলায়, যাচ্ছন হাতিতে চড়ে। যদিও করোনা মহামারীর কারণে সংক্রমণ এড়াতে এবছর বিভিন্ন ধর্মীয় অনুষ্ঠান সংক্ষিপ্ত করা হয়। উৎসব সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো পরিহার করে সাত্ত্বিক পূজায় সীমাবদ্ধ রাখতে হবে বিধায় এবারের দুর্গোৎসবকে শুধু ‘দুর্গাপূজা’ হিসেবে অভিহিত করে বাংলাদেশ পূজা উদযাপন পরিষদ।

এর আগে বেশ কিছু বিধি নিষেধও প্রদান করা হয়। মণ্ডপে দশৃনার্থীদের উপস্থিতি সীমিত করা ও সন্ধ্যায় আরতির পরই বন্ধ করে দেওয়া হয় পূজামণ্ডপ। ছিল না সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও ধুনুচি নাচের প্রতিযোগিতা। জনসমাগমের কারনে সাস্থ্যবিধি যাতে ভঙ্গ না হয় সেদিকে খেয়াল রেখেই প্রসাদ বিতরণ ও বিজয়া দশমীর শোভাযাত্রা নিষিদ্ধ করা হয়। পূজার সময় বেশির ভাগ ভক্তরা এবার অঞ্জলি নিয়েছেন ভার্চুয়াল পদ্ধতিতে।

এছাড়াও মহাঅষ্টমীর মূল আকর্ষণ হচ্ছে কুমারী পূজা। সকল নারীর মধ্যে মাতৃরূপ এই উপলব্ধি সবার মধ্যে জাগ্রত করার লক্ষ্যে ঢাকার রামকৃষ্ণ মিশনে প্রতিবছর এই কুমারী পূজা অনুষ্ঠিত হলেও এবার নির্দেশনার কারণে এ পূজা অনষ্ঠিত হয়নি।

বিজয়া দশমী উপলক্ষে আজ ছিল সরকারি ছুটির দিন। পূজা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আব্দুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী প্রদান করেন। বাংলাদেশ বেতার, বাংলাদেশ টেলিভিশনসহ অন্যান্য বেসরকারি টিভি চ্যানেল ও রেডিও এ উপলক্ষে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা সম্প্রচার করে। এছাড়া জাতীয় দৈনিকগুলো এ উপলক্ষে বিশেষ নিবন্ধ প্রকাশ করে।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone