বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Thursday, January 9, 2025
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » নেটো মিত্রদের সঙ্গে এরদোয়ানের দ্বন্দ্বে হুমকিতে তুরস্কের অর্থনীতি

নেটো মিত্রদের সঙ্গে এরদোয়ানের দ্বন্দ্বে হুমকিতে তুরস্কের অর্থনীতি 

132009_bangladesh_pratidin_ardowan-news-pic

করোনাভাইরাস মহামারির পর নেটো জোটের মিত্রদের সঙ্গে তুরস্কের বিরোধের জের ধরে ডলারের অনুপাতে তুরস্কের মুদ্রার রেকর্ড পরিমাণ দরপতন হয়েছে।

তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রেসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সাম্প্রতিক বক্তব্যে ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রসহ আরও কয়েকটি দেশের সঙ্গে তিক্ত সম্পর্ক তৈরি করেছেন।

বিশ্লেষকরা তুরস্কের মুদ্রাস্ফীতি বৃদ্ধি – গত মাসে ১১.৭% – এবং সুদের হার বাড়ানোর বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অসম্মতির বিষয়টিকে কারণ মনে করছেন।

সুদের হার বাড়ানো মুদ্রাস্ফীতি কমিয়ে আনতে পারে এবং তুরস্কের মুদ্রা লিরা কিনতে বিনিয়োগকারীদের উৎসাহিত করতে পারে।

বাজার বিশ্লেষকরা মনে করেন লিবিয়া, সিরিয়া, সাইপ্রাসের আশেপাশে এবং ককেশাস অঞ্চলে তুর্কী প্রেসিডেন্ট এরদোয়ানের শক্তি প্রদর্শনের কারণে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীরা ক্ষুণ্ণ হয়েছে।

সংবাদ সংস্থা রয়টার্সকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে আন্তর্জাতিক ব্যবসা করা একজন তুর্কী নাগরিক বলেন, “তুরস্কের মুদ্রা লিরা দুর্বল হয়ে যাওয়ার পেছনে নতুন কারণ সংযুক্ত আরব আমিরাত ও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তৈরি হওয়া ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা।”

তুরস্কের রাবো ব্যাংকের একজন বিশ্লেষক পিওতর ম্যাটিস বলেছেন, তুরস্কের ব্যবসায়ীদের মধ্যে উদ্বেগ রয়েছে যে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন বিজয়ী হলে ‘রাশিয়া থেকে এস-৪০০ (অ্যান্টি এয়ারক্রাফট) মিসাইল সিস্টেম কেনার কারণে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা আসতে পারে।’ পাশাপাশি ‘তুরস্কের সঙ্গে ফ্রান্সের দ্রুত অবনতি হওয়া পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয়টিও বাজারে উদ্বেগের কারণ’ বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

এই বছরে তুরস্কের মুদ্রা লিরা ২৬% মান হারিয়েছে এবং তুরস্কের কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, মুদ্রার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে গত ১৮ মাসে তারা ১০ হাজার কোটি ইউরোর বেশি অর্থ ব্যয় করেছে।

মিসাইল বিতর্ক

২৩ অক্টোবর প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান নিশ্চিত করেছেন যে তুরস্ক বিতর্কিত এস-৪০০ মিসাইল সিস্টেমের পরীক্ষা চালিয়েছে।

রাশিয়ার সঙ্গে অস্ত্র চুক্তি করার কারণে যুক্তরাষ্ট্র তুরস্কের যে সমালোচনা করেছিল, সেটির জবাবে রবিবার প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেছেন, “আপনি জানেন না আপনি কার সঙ্গে খেলছেন। আপনার যত নিষেধাজ্ঞা দেয়ার দিতে পারেন।”

যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ‘তুরস্ক মিসাইল সিস্টেমটি চালু করলে নিরাপত্তার স্বার্থে গুরুতর পদক্ষেপ নেয়া হতে পারে’ বলে সতর্ক করা হয়েছে।

তুরস্কের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্কের দিক দিয়ে সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু সাইপ্রাসে গ্যাস অনুসন্ধানের উদ্যোগ নেয়ায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের নেতারা এরদোয়ানকে কড়া সতর্কবার্তা দিয়েছেন।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের একটি সম্মেলনের এক বিবৃতিতে বল হয়েছে যে সংস্থাটি ‘পূর্ব ভূমধ্যসাগরে তুরস্কের সাম্প্রতিক অনুসন্ধানমূলক কার্যক্রম উস্কানিমূলক এবং একতরফা।’

এই ঘটনায় ফরাসী প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বিশেষভাবে সমালোচনা করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্টের।

রবিবার এরদোয়ান ফরাসী মুসলিমদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করার অভিযোগ তোলেন ফরাসী প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। এরপর ফরাসী পণ্য বর্জন করার জন্য আরব বিশ্বের সঙ্গে সুর মেলান।

করোনাভাইরাসও তুরস্কের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। একদফা খারাপ পরিস্থিতি পার করে আসার পর তুরস্কের করোনাভাইরাস সংক্রমণের মাত্রা কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসলেও গত কিছুদিন ধরে ইউরোপের অন্যান্য জায়গার মত আবারও সেখানে সংক্রমণের হার বাড়তে শুরু করেছে।

পাশাপাশি লিরার দরপতন ঠেকাতে শত শত কোটি ডলার বিক্রি করে দেয়ায় তুরস্কের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই বছরেই তুরস্কের অর্থনীতির বড় ধরণের সংকোচন হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

তুরস্কের ব্যবসায়িক মিত্র রাশিয়ার সাথে এরদোয়ানের সম্পর্কের উষ্ণতাও ভূ-রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে অনেকটাই শীতল হয়েছে।

লিবিয়া ও সিরিয়ায় চলমান দ্বন্দ্বে তুরস্ক ও রাশিয়া বিরোধী পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে। আবার আর্মেনিয়ার নিয়ন্ত্রণে থাকা নাগোর্নো-কারাবাখকে কেন্দ্র করা যুদ্ধে তুরস্ক সরাসরি আজারবাইজানকে সমর্থন দিচ্ছে। সূত্র: বিবিসি বাংলা

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone