বাংলাদেশে প্রথম ট্যুরিজম ভিত্তিক নিউজ পোর্টাল|Saturday, September 21, 2024
সাইটে আপনার অবস্থানঃ Home » আর্ন্তজাতিক » চলে গেলেন খ্যাতনামা ব্রিটিশ সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক

চলে গেলেন খ্যাতনামা ব্রিটিশ সাংবাদিক রবার্ট ফিস্ক 

115426_bangladesh_pratidin_sfe

খ্যাতনামা ব্রিটিশ সাংবাদিক ও লেখক রবার্ট ফিস্ক আর নেই। শুক্রবার ডাবলিনের বাসায় স্ট্রোক করার পর হাসপাতালে ভর্তি করার পর সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর।

আইরিশ টাইমস জানিয়েছে, আয়ারল্যান্ডের রাজধানী ডাবলিনের সেইন্ট ভিনসেন্ট হাসপাতালে রবার্টকে ভর্তি করানো হয়েছিল। রবার্ট ফিস্ক মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সাংবাদিকতার জন্য বেশি পরিচিত। ১৯৭০ এর দশক থেকে তিনি মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ে সাংবাদিকতা শুরু করেন।

পাঁচ দশকের বেশি সময় ধরে তিনি বিভিন্ন ব্রিটিশ সংবাদপত্রের বৈদেশিক প্রতিবেদক হিসেবে কাজ করেছেন, সাংবাদিকতা করেছেন বলকান, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকার বিভিন্ন যুদ্ধ নিয়ে।

মাত্র ১২ বছর বয়সেই তিনি রিপোর্টার হওয়ার ব্যাপারে মনস্থির করে ফেলেন। ছাত্রজীবন থেকেই সাংবাদিকতা শুরু করেন ফিস্ক। প্রথমে ‘সানডে এঙ্প্রেস’র ডায়েরি কলামে লেখালেখি করতেন। পরবর্তীতে তিনি যোগ দেন ‘দ্য টাইমসে’। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত টাইমসের বেলফাস্ট প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করেন তিনি। এরপর পর্তুগালের কারনেশন (সাদা বা গোলাপি) বিপ্লব কভার করতে চলে যান। তারপর তাকে মধ্যপ্রাচ্য সংবাদদাতা নিয়োগ করা হয়। ১৯৭৬ থেকে ১৯৮৮ সাল পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন ফিস্ক। এরপর তার ঠিকানা হয় দ্য ইন্ডিপেনডেন্ট পত্রিকায়। ১৯৮৯ সালের ২৮ এপ্রিল ইন্ডিপেনডেন্টে তার প্রথম রিপোর্ট প্রকাশ পায়। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন ঘটনা ও বিষয় নিয়ে সংবাদ সরবরাহ করে খ্যাতি লাভ করেন। যেসব যুদ্ধের খবর সংগ্রহ করে তিনি বিশ্ববাসীর কাছে সম্মানের পাত্র হন তার মধ্যে রয়েছে লেবাননে ইসরায়েলি আগ্রাসন (১৯৭৮-৮২), ইরানের বিপ্লব (১৯৭৯), ইরাক-ইরান যুদ্ধ (১৯৮০-৮৮), আফগানিস্তানে সোভিয়েত আগ্রাসন (১৯৮০), উপসাগরীয় যুদ্ধ (১৯৯১)। ২০০৮ খ্রিস্টাব্দ অবধি তিনি ৩২ বছরে কমপক্ষে ১১ যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সংবাদ সংগ্রহ করেছেন। একুশ শতাব্দীর প্রথম দশকে তিনি সাংবাদিক নিরপেক্ষতার প্রতীকে পরিণত হন। নিরপেক্ষ বিশ্লেষণ ও সাহসিকতার জন্যই তিনি সমধিক খ্যাত। তিনি বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন একাধিকবার। তিনিই একমাত্র বিদেশি সাংবাদিক যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে তিনবার ওসামা বিন লাদেনের সাক্ষাৎকার নিতে সক্ষম হন। তিনি যুদ্ধ সাংবাদিকতায় অসামান্য অবদান রাখায় পেয়েছেন অসংখ্য পুরস্কার। তিনি পুলিৎজার পুরস্কার পেয়েছেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল ১৯৯৮ সালে দিয়েছে ওভার অল মিডিয়া অ্যাওয়ার্ড। সাতবার তাকে দেওয়া হয়েছে ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল জার্নালিস্ট অব দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ড। ১৯৮৬ খ্রিস্টাব্দে তিনি জাতিসংঘ প্রেস অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাংবাদিকতার জন্য ১৯৯৬ সালে তাকে জন্স হপকিনস সিআইএএস-সিআই পুরস্কার দেওয়া হয়। যুদ্ধের নিউজ কভার করতে গিয়ে বহুবার হুমকির মুখে পড়েছেন ফিস্ক। আহতও হয়েছেন প্রথিতযশা এই সাংবাদিক। ইরাক-ইরান যুদ্ধের সময় আর্টিলারির আঘাতে আহত হলে তার শ্রবণশক্তি অনেকাংশে নষ্ট হয়ে যায়। এ ছাড়া বিদেশি গুপ্তচর সন্দেহে দুবার অপহরণ চেষ্টার হাত থেকে বেঁচে যান তিনি।

শেয়ার করুন !!Share on FacebookTweet about this on TwitterShare on Google+Share on LinkedInShare on RedditBuffer this pageDigg thisShare on TumblrPin on PinterestShare on StumbleUponFlattr the authorEmail this to someone