নিউজিল্যান্ডে মসজিদে হামলার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত প্রতিবেদন প্রকাশ
নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চ হামলা নিয়ে দীর্ঘ রিপোর্ট পেশ করল দেশটির রয়্যাল কমিশন। এই প্রতিবেদনে রয়্যাল কমিশন জানিয়েছে, সন্ত্রাসবাদ বন্ধের জন্য আরও বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ আইনগত পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
২০১৯ সালে ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে ব্রেন্টন ট্যারেন্ট নামে এক ব্যক্তির সন্ত্রাসী হামলায় ৫১ জন মুসলিম নিহত হন। এর দায়ে ব্রেন্টন ট্যারেন্টকে নামের ওই সন্ত্রাসীকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছে দেশটির আদালত।
২০২০ সালের শুরুর দিকে রয়্যাল কমিশনের রিপোর্ট প্রকাশিত হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু তা প্রকাশ পেতে বেশ কিছুদিন সময় লেগে গিয়েছে। ৮০০ পাতার রিপোর্টে একাধিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এতে বলা হয়েছে, চাইলে এই হামলা বন্ধ করা যেত, এমন কথা বলা যায় না। কারণ আক্রমণকারী ব্যক্তি কোনো জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত নয়। জঙ্গি মতবাদ নিয়ে সে অনেকের সঙ্গে কথা বলেছে এমনও নয়। এক সময় সে অস্ট্রেলিয়ায় থাকতো তার বাবার সঙ্গে। সেখান থেকে বিশ্ব ভ্রমণে গিয়েছিল সে।
শেষ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে থাকতে শুরু করে। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মাঝেমধ্যে উগ্র কথা বললেও সন্দেহ করার মতো কোনো ঘটনা সে ঘটায়নি। ফলে গোয়েন্দারা এই হামলার জন্য দোষী করা যায় না। তাদের পক্ষে আগাম খবর জোগাড় করে এই হামলা বন্ধ করা সম্ভব ছিল না।
৪৪টি আইন এবং প্রশাসনিক সংশোধনের কথা বলা হয়েছে রিপোর্টে। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জেসিন্ডা আর্ডার্ন বলেছেন, প্রতিটি বিষয় নিয়েই তিনি মন্ত্রীসভায় আলোচনা করবেন। কমিশনের রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেভাবে অস্ত্র কিনেছিল ওই ব্যক্তি, তা রোধ করা সম্ভব।
রিপোর্ট বলা হয়েছে, অস্ত্র কেনার এই প্রক্রিয়া আরও কঠোর করা উচিত। সোশ্যাল নেটওয়ার্ক এবং ইউটিউবে নজরদারি বাড়ানোর কথাও বলা হয়েছে রিপোর্টে। উগ্র মতামত যারা প্রকাশ করছে, তাদের নজরে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ক্রাইস্টচার্চ হামলার ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের পরিবারও রিপোর্টকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাদের বক্তব্য, আর যাতে এমন ঘটনা না ঘটে, সেদিকে নজর রাখুক প্রশাসন।