নতুন চ্যালেঞ্জে মাশরাফি
স্পোর্টস ডেস্ক : ১২ই ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হবে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচ। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজের দুটি ম্যাচই এই মাঠে অনুষ্ঠিত হবে। তবে শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে খেলতে পারছেন না বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহীম। আঙুলের ব্যথার কারণে তাকে বিশ্রাম দেয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে দুই ম্যাচের এই সিরিজে বাংলাদেশ দলকে নেতৃত্ব দেবেন সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। সিঙ্গাপুরে থেকেই বোর্ডের পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনা করে মাশরাফিকে অধিনায়ক করার সিদ্ধান্ত দেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট নাজমুল হাসান। মাশরাফি ২০০৯ সালে একটি টেস্টে নেতৃত্ব দেন। ২০১০ সালে ৭টি ওয়ানডেতেও দলকে নেতৃত্ব দেন। এরপর ইনজুরিতে পড়লে ২০১১-তে অধিনায়ক করা হয় সাকিব আল হাসানকে। চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ স্টেডিয়ামে ১২ ও ১৪ই ফেব্রুয়ারি ওই ম্যাচ দু’টি অনুষ্ঠিত হবে। তবে ১৭ই ফেব্রুয়ারি থেকে ঢাকায় অনুষ্ঠেয় তিন ম্যাচের ওডিআই সিরিজে মুশফিক খেলবেন বলে আশা করা যাচ্ছে। তবে এবারই প্রথম তিনি জাতীয় দলের হয়ে টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্ব করবেন। বাংলাদেশ দল এই পর্যন্ত ৩১টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেছে। এর মধ্যে দেশের মাটিতে মাত্র ৫টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলেও ১টি খুলনায় ও বাকি ৪টি মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত হয়। মাশরাফির প্রথমের সঙ্গে চট্টগ্রামেরও প্রথম টি-টোয়েন্টি লড়াই তাই চট্টগ্রামের ক্রিকেটপ্রেমীদের জন্য সিরিজটি অন্যরকম আবেদন বহন করবে। বলা চলে মার্চে অনুষ্ঠেয় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ক্রিকেটের এই ক্ষুদ্র সংস্করণের মারমার কাটকাট স্বাদ নেবেন চট্টলাবাসী। তবে তামিম ইকবাল সহ-অধিনায়ক পদ থেকে সরে দাঁড়াতে এরই মধ্যে বিসিবি’র কাছে চিঠি দেয়ায় টি-টোয়েন্টি সিরিজের আগে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রাও।
শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ দুটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। আর দু’টিতেই হেরেছে। একটি দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৭ সালে টি-২০ বিশ্বকাপে ৬৪ রানে, আরেকটি শ্রীলঙ্কার মাটিতে গত বছর ১৭ রানে হেরেছে বাংলাদেশ। এবার ম্যাচটি হবে ‘পয়মন্ত ভেন্যু’ চট্টগ্রামে। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে বিকাল পাঁচটায় ম্যাচটি শুরু হতেই চট্টগ্রামে প্রথম টি-২০ ম্যাচের বলও মাঠে গড়াবে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তৃতীয় টি- টোয়েন্টি ম্যাচে ১৫ সদস্যের জাতীয় দলে ডাক পেয়েছেন নতুন দুই মুখ স্পিনার আরাফাত সানি, অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান রুম্মান ও উইকেট কিপার ব্যাটসম্যান মিথুন আলী। তবে বাংলাদেশ জাতীয় দলে ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খুলনায় টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অভিষেক হওয়া ফরহাদ রেজা প্রায় ৪ বছর পর ফিরেছেন টি-টোয়েন্টি দলে। অভিষেকের পর তিনি জাতীয় দলের হয়ে ৮টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচে অংশ নিয়েছিলেন ২০১১ পর্যন্ত। তার শেষ ম্যাচ ঢাকায় পাকিস্তানের বিপক্ষে। তবে এই ৮টি ম্যাচে ব্যাট হাতে তার সংগ্রহ ৫৬ রান ও ৪টি উইকেট। তবে গত কয়েক বছর ধরে ঘরোয়া আসরগুলোতে নজরকাড়া পারফরমেন্সের কারণে তার দলে জায়গা হয়। এখন দেখার বিষয় মূল একাদশে জায়গা করে নিচ্ছেন কে কে?
বাংলাদেশ অবশ্য দেশের বাইরে ৩১টি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছে। এরমধ্যে ২২ ম্যাচ হেরেছে। ৯টি ম্যাচ জিতেছে বাংলাদেশ। সেই নয়টির মধ্যে দুটিতে দেশের মাটিতে জয় পেয়েছে। খুলনায় ২০০৬ সালে নিজেদের প্রথম টি-২০ ম্যাচেই বাজিমাত করেছে বাংলাদেশ। জিম্বাবুয়েকে ৪৩ রানে হারিয়েছে। খুলনাতে এই একটি টি-২০ ম্যাচই হয় বাংলাদেশের। এছাড়া, সব ম্যাচ হয় ঢাকায়, মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে। দেশের মাটিতে পরের ম্যাচেও জয় তুলে নিয়েছিল বাংলাদেশ। এবার ধরাশায়ী প্রতিপক্ষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২০১১ সালে ৩ উইকেটে বাংলাদেশ জয় তুলে নেয়। এরপর দেশের মাটিতে আর কোন জয় নেই। বাকি তিনটি ম্যাচেই পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হারে দল। সর্বশেষ ২০১১ সালের অক্টোবরের পর আর দেশের মাটিতে টি-২০তে জয় পায়নি বাংলাদেশ। দেশের বাইরে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিনটি, কেনিয়া, হল্যান্ড ও জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে একটি করে ম্যাচ জিতেছে।
অন্যদিকে ওয়ানডে সিরিজের আগে মুশফিককে সুস্থ করে তোলার চেষ্টা করা হচ্ছে। শনিবার চট্টগ্রাম টেস্ট শেষ হওয়ার পর রাতেই চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় ফিরে গেছেন মুশফিক। টেস্ট দলে থাকলেও টি-২০ দলে সুযোগ না পাওয়া ইমরুল কায়েস, মার্শাল আইয়ুব, আব্দুর রাজ্জাক ও রবিউল ইসলাম শিপলুও মুশফিকের সঙ্গে ঢাকা গেছেন।
টি-২০’র বাংলাদেশ দল
মাশরাফি বিন মর্তুজা, তামিম ইকবাল, এনামুল হক বিজয়, শামসুর রহমান, মো. মিথুন আলী, মুমিনুল হক, সাকিব আল হাসান, নাসির হোসেন, সাব্বির রহমান, মাহমুদ উল্লাহ, সোহাগ গাজী, আরাফাত সানি, ফরহাদ রেজা, রুবেল হোসেন ও আল আমিন হোসেন।